ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংসদ অধিবেশন শুরু, চলবে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সংসদ অধিবেশন শুরু, চলবে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত

সংসদ রিপোর্টার ॥ শুরু হলো জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশন। যা আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। অধিবেশন শুরুর আগে অনুষ্ঠিত সংসদের কার্যোপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। রবিবার বিকেলে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরুর দিনেই দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিল উত্থাপন করা হয়েছে। অধিবেশনের প্রথম দিনের শুরুতে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ উপস্থিত ছিলেন। তবে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থাকায় তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। অধিবেশনের শুরুতেই সভাপতিম-লীর সদস্য মনোনয়ন দেয়া হয়। এসব ব্যক্তি স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকারের অনুপস্থিতিতে সংসদের বৈঠক পরিচালনা করবেন। সভাপতিম-লীর সদস্যরা হলেন- আবদুল মতিন খসরু, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, এনামুল হক, ফখরুল ইমাম ও আয়েশা ফেরদৌস। এরপর বিগত দিনের অধিবেশন শেষ হওয়ার পর এ পর্যন্ত বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তির মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব আনার পর মরহুমদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে মোনাজাত করা হয়। অধিবেশন শুরুর আগে সংসদ ভবনে সংসদের কার্যোপদেষ্টা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সভাপতি স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চলতি অধিবেশন আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। প্রতিদিন বিকেল ৫টায় অধিবেশন শুরু হবে। তবে প্রয়োজনে এ সময়সীমা স্পীকার বাড়াতে বা কমাতে পারবেন। কমিটির সদস্য বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মোঃ ফজলে রাব্বি মিয়া, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, আ স ম ফিরোজ এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হক অংশ নেন। শোক প্রস্তাব গ্রহণ ॥ সভাপতিম-লীর সদস্য নির্বাচনের পর স্পীকার অধিবেশনে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। সাবেক সংসদ সদস্য ও সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য এম আবদুর রহীম, ডাঃ এম এ মান্নান, আলী রেজা রাজু, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কোরবান আলী, সাবেক এমপি ফজলুর রহমান পটল, আবদুর রাজ্জাক খান, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা, সংসদ সচিবালয়ের গাড়ি চালক বিপ্লব হোসেনের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়। এছাড়া কবি শহীদ কাদরী, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী আ ফ ম মুহিতুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেত্রী নাজমা রহমান, মুক্তিযোদ্ধা শিরিন বানু মিতিল, কিংবদন্তী বক্সার মোহাম্মদ আলী, মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু সিডনি শনবার্গ, শাবিপ্রবি সাবেক উপাচার্য ছদরুদ্দিন আহমেদ এবং কৌতুক অভিনেতা ফরিদ আলীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়। টঙ্গীর ট্যাম্পাকো ফয়েলস কারখানার বয়লার বিস্ফোরণে, বরিশালের বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীতে লঞ্চডুবিতে এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে সংসদে শোক প্রকাশ করা হয়। জানা গেছে, এই অধিবেশনের জন্য পুরনো ১১টিসহ মোট ১৫টি বিল সংসদে জমা পড়েছে। নতুন চারটি বিল হচ্ছে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) বিল- ২০১৬, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বিল- ২০১৬, বাংলাদেশ নার্সিং এ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিল বিল- ২০১৬ এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর বিল- ২০১৬। এছাড়াও অধিবেশন চলাকালে আরও নতুন কয়েকটি খসড়া আইন জমা হতে পারে বলে সংসদ সচিবালয় আইন শাখা থেকে জানানো হয়। ৩৩ বছর পর লারমার প্রতি শোক ॥ প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য এম এন লারমা নামে খ্যাত মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার মৃত্যুর প্রায় ৩৩ বছর পর দশম সংসদে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম সংসদে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আগে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি গণপরিষদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৩ সালের ১০ নবেম্বর তিনি প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন। তাঁর মৃত্যুর পর সাতটি সংসদ অধিবেশন বসলেও শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়নি। গত বাজেট অধিবেশনের আগে এর আগে রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা এম এন লারমার জন্য শোক প্রস্তাব গ্রহণে সংসদ সচিবালয়কে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। যার প্রেক্ষিতে রবিবার জাতীয় সংসদে উত্থাপিত শোক প্রস্তাবে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
×