ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রামপাল নিয়ে উদ্বেগের জবাব দেয়া হবে আগামী সপ্তাহে ॥ নসরুল হামিদ

আমাদের বক্তব্যের পর ইউনেস্কো হয়ত বুঝবে তারা সঠিক নয়

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আমাদের বক্তব্যের পর ইউনেস্কো হয়ত বুঝবে তারা সঠিক নয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী সপ্তাহে সরকারের পক্ষ থেকে রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র বিষয়ে ইউনেস্কোর উদ্বেগের জবাব দেয়া হবে। রবিবার রাজধানীতে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে গবেষণা বিষয়ক এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ কথা জানান। সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র নিয়ে সম্প্রতি ইউনেস্কো উদ্বেগ জানিয়ে বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ বন্ধ করতে অনুরোধ জানায়। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে হয় আগামী সপ্তাহের মধ্যে ইউনেস্কোর জবাবটা দিয়ে দেব। ইউনেস্কো শুধু রামপাল নিয়ে নয়, অন্য বিষয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। আমাদের নদীর ব্যাপারগুলো এসেছে, এই উদ্বেগগুলো গুরুত্ব সহকারে দেখছি এবং সেভাবে জবাব তৈরি করছি। এখানে কিছু টেকনিক্যাল বিষয় আছে, যেগুলো আমাদের জানাতে হবে। এই টেকনিক্যাল বিষয়গুলো ইউনেস্কোকে এর আগেও জানিয়েছি, এখন আমরা বিস্তারিত জানাচ্ছি। তাদের যে আশঙ্কা আছে, তা যেন না থাকে, আমরা কীভাবে টেকিনিক্যাল ব্যাপারগুলো মোকাবেলা করছি, সেগুলো তাদের জানানো প্রয়োজন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইউনেস্কোর আশঙ্কা থাকতে পারে, অনেকেরই আছে, ইউনেস্কোকে আমাদের বক্তব্যটা দিতে পারলে হয়ত তারা বুঝবে যে তারা সঠিক নয়। তিনি বলেন, সরকার পর্যালোচনা করেই দুই বিলিয়ন ডলারের রিস্ক নিতে যাচ্ছে। কেন সরকার এমন কাজ করবে যাতে দুই বিলিয়ন ডলারের রিস্ক নিয়ে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে? এই বিদ্যুত কেন্দ্র নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করে নসরুল হামিদ বলেন, উন্নত প্রযুক্তি তো আমার কেউ দেখিনি। যতক্ষণ পর্যন্ত না দেখা হবে সচক্ষে, ততোক্ষণ পর্যন্ত আমরা ভাবব- ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। যারা এর বিরোধিতা করছেন, তাদের আবেগ দিয়ে কথা না বলে যুক্তি উপস্থাপন করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। দেশের উন্নয়ন পিছিয়ে দেয়ার জন্যও রামপাল নিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। যে ডেভেলপমেন্টের দিকে দেশ এগোচ্ছে, যেভাবে আমরা বিদ্যুত সমস্যার সমাধান করতে পারছি, হতে পারে অনেকে হয়ত এই ডেভেলপমেন্ট পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেকে নিজেরাও বুঝতে পারছেন না, তারা সেই রাজনীতিতে ঢুকে যাচ্ছেন। আমরা তো ঢাকা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে গজারিয়াতে কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র করছি, ওটা নিয়ে তো কেউ উদ্বিগ্ন হচ্ছে না। সরকার সব ধরনের সতর্কতার কথা মাথায় রেখেই এগোচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, যে পথে আমরা যাচ্ছি, সেটা বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল, সেটাও আমরা নিতে চাই, এখনও নিতে চাই। প্রতিবছর নতুন করে এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের সক্ষমতা তৈরি করতে সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আর লোডশেডিংয়ে যেতে চাই না। ২০১৮ সালের মধ্যে সব জায়গায় বিদ্যুত দিতে চাইছি। মিশ্র জ্বালানিতে যেতে হবে, আমাদের কয়লা আনতেই হবে। জ্বালানি খাতকে ‘স্বাবলম্বী করতে’ সরকার শেয়ার মার্কেটে যাবে, বন্ড চালু করবে এবং ভবিষ্যতে বাজেটগুলোতে এ বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ থাকবে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান। বাংলাদেশে কয়েকটি নাগরিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন এই বিদ্যুত কেন্দ্রের বিরোধিতার মধ্যেই উনেস্কোর এই উদ্বেগ জানালো। সরকার বলছে ইউনেস্কোও দেশের পরিবেশবাদীদের ভাষায় কথা বলছে।
×