ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সমুখে শান্তি পারাবার

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সমুখে শান্তি পারাবার

শান্তি, স্বস্তি আর প্রগতির বিশ্ব গড়ে তোলার আহ্বান ধ্বনিত হলো রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রদত্ত ভাষণে। বিশ্ববাসীর চাওয়া-পাওয়াকে তুলে ধরা হলো বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে। সন্ত্রাস ও সহিংস জঙ্গীবাদ নির্মূলের পথ ও পন্থার দিকনির্দেশনাও উঠে এসেছে নানা কণ্ঠে। সাহসী মানুষের মতো বজ্রনির্ঘোষ স্বরেই নতুন সাহসী বিশ্ব গড়ে তোলার প্রত্যয় ঘোষিত হলো। একটি কণ্ঠস্বর যেন সারাবিশ্ব মানবের চিন্তা-চেতনা, মেধা মনন আর অগ্রগতির ধারক হয়ে পথ দেখিয়ে দিলেন। বিশ্ব মানব আজ পেয়ে গেছে বুঝি তার সমস্যাসঙ্কুল জীবনধারা থেকে বেরিয়ে আসার সুবর্ণ দিক আর জঞ্জালমুক্ত এক বিশ্ব। এমন নেতৃত্বের প্রতীক্ষায় ছিলেন বুঝি বিশ্ববাসী। যিনি তাদের শান্তির পথ দেখাবেন। উন্নত বিশ্ব গড়ার স্বপ্ন পূরণে দিগন্ত তুলে ধরবেন। সেই নেতৃত্বের গড়িমায় আসীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার দিকে ঝুঁকেছেন। শান্তির পক্ষেই সবসময় বাংলাদেশের অবস্থান। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ হানাহানি, যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধ করে শান্তি চুক্তির মাধ্যমে সেখানে স্বাভাবিক ও স্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা কেন্দ্রও স্থাপন করছেন। যাতে সহিংসতার কবল থেকে বেরিয়ে আসা দেশগুলোর সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ হবে। মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া পুনরায় চালু এবং ভ্রাতৃপ্রতিম ফিলিস্তিনীদের প্রতি বৈরিতা নিরসনে সাম্প্রতিক প্রচেষ্টাগুলোকে সঠিক পথে পরিচালিত করার ওপর জোর দিয়েছেন শেখ হাসিনা। কিন্তু বিশ্বজুড়ে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা এবং যুদ্ধ শান্তির অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জঙ্গীবাদ বৈশ্বিক সমস্যা আজ। বিশ্বের কোন অঞ্চলই জঙ্গী হামলার আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলো ছাপিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। জঙ্গী হামলার ফলে বাংলাদেশ আক্রান্ত হলেও তা ভেদ করে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। জঙ্গীদমনে বাংলাদেশ যে সাফল্য প্রদর্শন করছে, বিশেষত গুলশানের ঘটনার পর তা বিশ্ববাসীকে আলোড়িত করেছে। বিশ্বের অনেক দেশের জন্যই তা অনুকরণীয় বৈকি। তাই শেখ হাসিনা বিশ্ব মানবের চাওয়া-পাওয়াকে নিজ কণ্ঠে ধারণ করে সন্ত্রাসবাদের সমূলে উৎখাতের সংকল্পে বিশ্ববাসীর ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান যেমন জানিয়েছেন তেমনি কোন রাষ্ট্র বা শক্তি যেন জঙ্গীবাদের পরামর্শদাতা, মূল পরিকল্পনাকারী, মদদদাতা, পৃষ্ঠপোষক, অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহকারী এবং প্রশিক্ষকদের খুঁজে বের করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন। নিজ দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের মূল কারণগুলো শুধু চিহ্নিত নয়, তাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছেন। দেশে যেসব সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছে তাদের নিষ্ক্রিয় করা, অর্থ সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা ও বাংলাদেশের ভূখ- থেকে আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম বন্ধ করার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরকারের যে সাফল্য, তা বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে প্রাণিত করেছে। শেখ হাসিনা অতীতে বহুবার বহু ফোরামে এ ধরনের উদ্যোগ ও সহায়তা বাড়ানোর কথা বলেছেন। সংঘাত বন্ধ করে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার সব দেশকে উদ্যোগী হওয়ার সুপরামর্শ প্রদান করে আশাবাদ জাগান যে, বিশ্ব বর্তমানে এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে, যখন এসব অভিযোগ থেকে মুক্তি খুব একটা দূরে নয়। অনেক সৃজনশীল এবং প্রায়োগিক সমাধান এখন আমাদের নাগালের মধ্যে। প্রযুক্তি, নব্য চিন্তাধারা ও বৈশ্বিক নাগরিকদের বিস্ময়কর ক্ষমতা একটি নতুন সাহসী বিশ্ব গড়তে পারে। বিশ্ব থেকে নিষ্ঠুরতা, সহিংস সংঘাতের উন্মত্ততা, উত্তেজনা ও ভীতিকর পরিস্থিতি মুছে ফেলতে শেখ হাসিনার যে দিকনির্দেশনা, তা তাকে বিশ্ব নেতার মতো বিশ্ববাসীর কণ্ঠস্বরে পরিণত করেছে। বিশ্ব শান্তি ও অগ্রগতির দিগন্ত তার নেতৃত্বে বেড়ে উঠুক সে প্রত্যাশা সকল বাঙালীর।
×