ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির খোঁজ-খবর

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির খোঁজ-খবর

উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর ভর্তিচ্ছুদের চোখে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ অতটা সহজ নয়। রীতিমতো যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার সমান। সে যুদ্ধের নাম ভর্তিযুদ্ধ। এ যুদ্ধে জয়ী হলেই মিলবে স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ। যা গড়ে দেবে পরবর্তী জীবনের ভিত। আসুন জেনে নিই, কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিস্তারিত তথ্য। লিখেছেন- শোয়েব ও রাসেদুল ইসলাম রাসেল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। সর্ববৃহৎ এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। ১৭৫৩ একরের বেশি জায়গাজুড়ে গড়ে ওঠা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ৮টি অনুষদ, ৪৩টি বিভাগ ও ৭টি ইনস্টিটিউট। বর্তমান অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২২ হাজারের অধিক। চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি করা হবে ৪ হাজার ৭৯১ জন শিক্ষার্থী। আর এ ৪ হাজার ৭৯১ জনের মধ্যে একজন হতে চাইলে আপনাকে আগামী ২৩ অক্টোবর থেকে অনুষ্ঠিতব্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে মোট ১২টি আবাসিক হল। এর মধ্যে ছাত্রদের ৮টি এবং ছাত্রীদের ৪টি। আগামী ২৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে দশটায় বিজ্ঞান অনুষদ (এ ইউনিট) ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হবে চবির ভর্তি কার্যক্রম। ওইদিন বেলা আড়াইটায় অনুষ্ঠিত হবে ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস (জে ইউনিট) এর ভর্তি পরীক্ষা। ২৪ তারিখ ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ (জি ইউনিট) ও ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স এ্যান্ড ফিশারিজ (আই ইউনিট), ২৫ তারিখ জীব বিজ্ঞান অনুষদ (এফ ইউনিট), ২৬ তারিখ কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের বি১ ইউনিট এবং ২৭ তারিখ বি২-বি৭ ইউনিট ও শিক্ষা অনুষদ (এইচ ইউনিট) এর ভর্তি পরীক্ষা। ২৯ তারিখ অনুষ্ঠিত হবে আইন অনুষদ (ই ইউনিট), ৩০ তারিখ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ (ডি ইউনিট)। ৩১ সেপ্টেম্বর ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ (সি ইউনিট) এর ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শেষ হবে ভর্তি পরীক্ষা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। রাজশাহী শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে পদ্মার পাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। ৭৫৩ একর সমতল ভূমির ওপর গড়ে উঠেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। যেখানে রয়েছে ৫টি উচ্চতর গবেষণা ইনস্টিটিউট। আরও রয়েছে ৯টি অনুষদ। এই ৯টি অনুষদের অধীন ৫৬টি বিভাগে পরিচালিত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের আবাসিক সুবিধা প্রদানে রয়েছে ১১টি ছাত্র হল এবং ৬টি ছাত্রী হল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনের শেষ সময় আগামী ২ অক্টোবর। এ সময়ের মধ্যে ভর্তিচ্ছুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মাবলী অনুসরণ করে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করতে পারবে। ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদনের ক্ষেত্রে মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান উভয় পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম জিপিএ-৩ সহ মোট জিপিএ-৭ থাকতে হবে। ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের আবেদনের জন্য এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান উভয় পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম জিপিএ-৩.৫০ সহ মোট জিপিএ-৭.৫০ থাকতে হবে। বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান উভয় পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম জিপিএ-৩.৫০ সহ মোট জিপিএ-৮ থাকলে আবেদন করতে পারবে। আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের আরেকটি অন্যতম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯১ যাত্রা শুরু করে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আগামী ৩ নবেম্বর থেকে শুরু হবে ভর্তি পরীক্ষা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি স্কুল এবং চারুকলা ইনস্টিটিউটের অন্তর্ভুক্ত ২৮টি ডিসিপ্লিনে স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলে ভর্তির আবেদনের জন্য এসএসসি, এইচএসসি বা সমমান উভয় পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম জিপিএ-৪.৫ করে থাকতে হবে। এছাড়া এইচএসসি-তে গণিতে জিপিএ-৪, পদার্থ-৪, রসায়ন-৪ ও ইংরেজীতে ৩ থাকতে হবে। জীববিজ্ঞান স্কুলে ভর্তির আবেদনের জন্য এসএসসি, এইচএসসি বা সমমান উভয় পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম জিপিএ-৪.৫ করে থাকতে হবে। এছাড়া এইচএসসিতে গণিতে জিপিএ-৪, জীববিজ্ঞানে ৪, রসায়নে ৪, পদার্থতে ৪ ও ইংরেজীতে ৩ থাকতে হবে। ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলে আবেদনের জন্য এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান উভয় পরীক্ষায় ৪.৫ করে থাকতে হবে। কলা ও মানবিক স্কুলে ভর্তির আবেদনের জন্য এসএসসি, এইচএসসি বা সমমান উভয় পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম জিপিএ-৪ করে থাকতে হবে। তবে বাংলায় ভর্তিচ্ছুদের এইচএসসি পরীক্ষায় বাংলায় জিপিএ-৩.৫ এবং ইংরেজীতে ভর্তিচ্ছুদের এইচএসসিতে ইংরেজী বিষয়ে ৩.৫ থাকতে হবে। সমাজবিজ্ঞান স্কুলের আবেদনের জন্য এসএসসি, এইচএসসি বা সমমান উভয় পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম জিপিএ-৪.২৫ করে থাকতে হবে। এছাড়া আলাদাভাবে ইংরেজীতে ৩ থাকতে হবে। আইন স্কুলের জন্য এসএসসি, এইচএসসি বা সমমান উভয় পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম জিপিএ ৪.৫ করে থাকতে হবে। ইংরেজীতে আলাদা করে ৩.৫ থাকতে হবে। চারুকলা ইনস্টিটিউটের ক্ষেত্রে এসএসসি, এইচএসসি বা সমমান উভয় পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয়সহ ন্যূনতম জিপিএ-৩.৫ করে থাকতে হবে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ায় অবস্থিত ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৯ সালে। এখানে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। ২০ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আবেদন ফি ৪৫০ টাকা। ভর্তি পরীক্ষা চলবে ১৯-২৪ নবেম্বর পর্যন্ত। ভর্তিচ্ছুরা টেলিটক মোবাইল অপারেটরের সাহায্যে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আটটি ইউনিটের অধীন ২৫টি বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এ ইউনিটভুক্ত বিভাগসমূহে ভর্তির জন্য মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ-৩ সহ একত্রে কমপক্ষে ৬.৫০ থাকতে হবে। বাণিজ্য শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ-৩.২৫ সহ একত্রে কমপক্ষে ৬.৭৫ থাকতে হবে। বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ-৩.২৫ সহ একত্রে ৭ থাকতে হবে। বি ও সি ইউনিটের বিভাগসমূহে ভর্তির জন্যও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে একই ধরনের যোগ্যতার প্রয়োজন হবে। ডি, ই ও এফ ইউনিটে ভর্তির জন্য প্রার্থীদের অবশ্যই বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণ হতে হবে। এক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ-৩.২৫ সহ উভয় পরীক্ষায় একত্রে ৭.৫ পেতে হবে। জি ইউনিটে ভর্তির জন্য মানবিক ও বাণিজ্য শাখা থেকে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ন্যূনতম জিপিএ-৩.২৫ সহ উভয় পরীক্ষায় কমপক্ষে একত্রে ৬.৭৫ পেতে হবে। আর বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীদের ৩.৫ সহ একত্রে ৭.২৫ থাকতে হবে। এইচ ইউনিটে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা এ ইউনিটের মতোই প্রয়োজন হবে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুর বিভাগে অবস্থিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। ২০০৮ সালে প্রথমে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে এটি। পরের বছর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। রংপুর শহর থেকে প্রায় ৫ কি.মি. দূরে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের পাশে এর অবস্থান। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৬টি ইউনিটের অধীন ২১টি বিভাগে পাঠদান কার্যক্রম চলছে। ৬টি ইউনিটের মধ্যে এ ইউনিটে ভর্তির জন্য মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা তিন বিভাগ থেকেই উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ-৩ এবং একত্রে মোট জিপিএ-৬.৫ থাকতে হবে। বি ইউনিটে ভর্তির জন্য মাধ্যমিকে তিন বিভাগেই ন্যূনতম জিপিএ-৩.৫ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে মানবিকে ৩ ও অপর দুটিতে ৩.৫ সহ একত্রে মানবিকে ৭ এবং অপর দুটিতে ৭.৫ থাকতে হবে। সি ইউনিটে ভর্তির জন্য মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিকে ৩ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ৩.৫ সহ মোট জিপিএ-৭ থাকতে হবে। বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ৩.৫ সহ মোট ৭.৫ থাকতে হবে। ডি ও ই ইউনিটে ভর্তির জন্য মাধ্যমিকে যথাক্রমে ৪ ও ৩.৫ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ৩.৫ সহ মোট জিপিএ ৭.৫ থাকতে হবে। তবে এক্ষেত্রে শুধু বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীরাই আবেদন করতে পারবে। এফ ইউনিটে ভর্তির জন্য বিজ্ঞান ও মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিকে ৩.৫ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে যথাক্রমে ৩.৫ ও ৩ সহ মোট জিপিএ যথাক্রমে ৭.৫ ও ৭ থাকতে হবে।
×