ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অনুর্ধ-১৮ এশিয়া কাপ হকি ॥ আশরাফুলের হ্যাটট্রিকসহ চার গোল, বাংলাদেশ ৫-৪ ভারত

বাংলাদেশের শুভসূচনা ভারতকে হারিয়ে

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বাংলাদেশের শুভসূচনা ভারতকে হারিয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হকিতে ভারত বাংলাদেশের চেয়ে বরাবরই শক্তিশালী। সঙ্গত কারণেই তাদের হারানো চাট্টিখানি কথা নয়। আর সেই কঠিন কাজটা দারুণভাবে করে দেখাল বাংলাদেশ। অনুর্ধ-১৮ এশিয়া কাপ হকি প্রতিযোগিতার পর্দা উঠল শনিবার। মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের তৃতীয় ম্যাচে (পুল ‘এ’) শ^াসরুদ্ধকর খেলায় স্বাগতিক বাংলাদেশ ৫-৪ গোলে ভারতকে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে। বিজয়ী দলের আশরাফুল ইসলাম একাই করেন হ্যাটট্রিকসহ চার গোল! খেলার প্রথমার্ধে খেলার স্কোরলাইন ছিল ২-২। শনিবার পুল ‘বি’র প্রথম দুই ম্যাচে পাকিস্তান ৬-১ ব্যবধানে চাইনিজ তাইপেকে ও চীন ৬-০ গোলে হংকংকে হারায়। আন্তর্জাতিক হকি টুর্নামেন্টে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় জয়। ভারতীয় দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের খেলা ছিল ভয়ডরহীন। খেলে দাপটের সঙ্গে। ভারত খেলে কাউন্টার এ্যাটাক পদ্ধতিতে। ষোড়শ মিনিটে দ্বিতীয় পেনাল্টি কর্নার কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফজলে রাব্বীর পুশ নাইমউদ্দিন স্টপ করার পর আশরাফুল যে হিট করেন তা চলে যায় পোস্টে (১-০)। ২০ মিনিটে সমতায় ফেরে ভারত। ফরোয়ার্ড আরশাদ হোসেন ভারতীয় ফরোয়ার্ড ধারমিন্দার সিংকে ডি-বক্সের ভেতরে ফাউল করলে পেনাল্টি স্ট্রোক পায় ভারত। তা থেকে বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইয়াসিন আরাফাতকে পরাস্ত করে ভারতকে সমতায় ফেরান ধারমিন্দার (১-১)। ২৫ মিনিটে এগিয়ে যায় ভারত। আবারও ধারমিন্দার সিংয়ের আক্রমণের উৎস, এবার তার মাঝলাইনের ওপর থেকে করা পাওয়ার হিটে কব্জির মোচড়ে ফ্লিক করেন কনজেংবাম সিং। সেই বলে ইয়াসিন আরাফাতকে কোন সুযোগ না দিয়েই প্রবেশ করে গোলপোস্টে (২-১)। পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়েনি বাংলাদেশ। বারবার আক্রমণ শানায় প্রতিপক্ষ শিবিরে। ৩০ মিনিটে সফলকামও হয়। পেনাল্টি কর্নার (পিসি) পায় বাংলাদেশ। রাজু আহমেদের করা পুশে স্টপ করেন নাঈম। আশরাফুল টার্ফ কামড়ানো হিট করলে সেই বল আছড়ে পড়ে বোর্ডে (২-২)। সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। বিরতির পর আবারও এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৩৮ মিনিটে আবারও পিসি পায় স্বাগতিক দল। ফজলে হোসেন রাব্বির করা পুশটি আশরাফুল রিসিভ করেন। কোনাকুনি হিট করেন তিনি। পরাস্ত করেন ভারতীয় গোলরক্ষক পঙ্কজ রজককে (৩-২)। ৪৯ মিনিটে আবারও সমতা আনে ভারত। ডানপ্রান্ত দিয়ে দারুণ দক্ষতায় বাংলাদেশের বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়েন হারদিক সিং। শুয়ে পড়ে অসাধারণ রিভার্স হিটে গোল করেন (৩-৩)। ৫১ মিনিটে আবারও লিড নেয় বাংলাদেশ। আরশাদ হোসেনের স্কয়ার পাসে হিট করে বাংলদেশকে এগিয়ে দেন ফজলে হোসেন রাব্বি (৪-৩)। তবে এই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ৫৩ মিনিটে দিলপ্রিত সিং গোল করে সমতায় ফেরান ভারতকে। বক্সের ভেতরে অল্প জায়গার মধ্যেই পুরো শরীর ঘুরিয়ে রিভার্স হিট নেন এবং গোল করেন (৪-৪)। যখনই মনে হচ্ছিল ম্যাচটি ড্র হতে যাচ্ছে, তখনই আবারও আশরাফুল ম্যাজিক। ৬১ মিনিটে পিসি পায় বাংলাদেশ। ফজলে হোসেন রাব্বি ও নাইমের পুশ ও স্টপ। আশরাফুলের হিট এবং গোল (৫-৪)। বাকি সময়টায় ভারতের একাধিক আক্রমণ ঠেকিয়ে নিজেদের গোলপোস্ট অক্ষত রাখে বাংলাদেশ। খেলা শেষ হলে বিজয়ের উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ দল। পুল ‘এ’তে বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানের মুখোমুখি হবে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মাঠে গড়ানোর কথা বেলা তিনটায়। অগোছালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কারণে তা শুরু হয় ৪৫ মিনিট দেরিতে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাকি ছয় দলের পতাকা ঠিকঠাক উড়লেও বাংলাদেশের পতাকা কিছুক্ষণ ওড়ার পর তা টার্ফে পড়ে যায়। অনেকক্ষণ পর তা কুড়িয়ে এনে আবার ওড়ানো হয়। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচটা উপভোগ করতে গ্যালারিতে হাজির ছিলেন হাজার খানেক দর্শক।
×