ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রিজার্ভ চুরির ব্যাপারে সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

রিজার্ভ চুরির ব্যাপারে সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রিজার্ভের চুরি হওয়া অর্থ ফেরত পাওয়ার স্বার্থে এ সংক্রান্ত যে কোন পদক্ষেপ সরকার খুব সতর্কতার সঙ্গে নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। সচিবালয়ে শনিবার নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা জানান। আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এ সম্পদটা (রিজার্ভের অর্থ) ফিরিয়ে আনার পর কারা এ সম্পদ চুরি হওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করল বা কারা জড়িত এটা বের করাও প্রয়োজনীয় বলে আমি মনে করি। কিন্তু সম্পদটা ফিরিয়ে আনাটা অগ্রাধিকারের ব্যাপার। সেক্ষেত্রে আমি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছি, রিপোর্টটা দেখার প্রয়োজন আছে নিশ্চয়ই।’ ‘যেহেতু চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত পেতে একটা মামলা ফিলিপিন্সে চলছে, সে অর্থটা ফেরত পাওয়াতে ব্যাঘাত ঘটে এমন কিছু আমরা হতে দিতে চাই না। সেক্ষেত্রে ওই রিপোর্টের আগে ওই মামলাটা নিষ্পত্তি হলে আমাদের জন্য সুবিধা হবে। সেক্ষেত্রে আমরা মনে করেছি কয়েকটা দিন পর এ রিপোর্ট পাবলিস করলে বাংলাদেশের স্বার্থ অক্ষুণœ থাকবে’- বলেন আনিসুল হক। মামলা নিষ্পত্তিতে কতদিন সময় লাগতে পারে- একজন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘মামলা কিন্তু বাংলাদেশে নয়, ফিলিপিন্সে হয়েছে। আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। যেটা বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নরের কাছ থেকে জানতে পেরেছি সেটা হচ্ছে, ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। সেজন্য আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে সব বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছি।’ গত ১৮ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন। কিন্তু তিন দিন পরই তিনি জানান, টাকা ফেরত পাওয়ার স্বার্থে প্রতিবেদন প্রকাশে বেশ দেরি হবে। যদিও প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য এর আগেও কয়েক দফা সময় জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (নিউইয়র্ক ফেড) রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৮০০ কোটি টাকা) চুরির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে দুই কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলঙ্কায় আর বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপিন্সে। শ্রীলঙ্কা থেকে দুই কোটি ডলার ফেরত পাওয়া গেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এর পর গত ১৫ মার্চ সরকার এ ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। ২০ মার্চ অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর ২২ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে তদন্ত কমিটি। এর পর গত ৩০ মে ফরাসউদ্দিন আহমেদ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া রিজার্ভের উদ্ধার হওয়া ৪৬ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার এবং ৪৮ কোটি ৮২ লাখ ৮০ হাজার পেসো (মোট ১১৯ কোটি টাকা) বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিতে আদেশ জারি করেছে ফিলিপিন্সের রিজিওনাল ট্রায়াল কোর্ট।
×