ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দাফনের সময় কেঁদে ওঠা সেই নবজাতক চিকিৎসার জন্য ঢাকায়

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

 দাফনের সময় কেঁদে ওঠা সেই নবজাতক চিকিৎসার জন্য ঢাকায়

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর, ২৪ সেপ্টেম্বর ॥ চিকিৎসকের মৃত ঘোষণার ছয় ঘণ্টা পর দাফন করতে গিয়ে কেঁদে ওঠা ফরিদপুরের ওই নবজাতক গালিবা হায়াতকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকার বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের একটি এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জীবিত ঘোষণার পর থেকেই ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের ইনকিউবেটরে রেখে শিশুটিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। জনকণ্ঠসহ বিভিন্ন পত্রিকায় নবজাতকের এই শারীরিক অবস্থার খবর পেয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক ঢাকার এক ব্যবসায়ীর খরচে তাকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। শিশুটির সঙ্গে তার পিতা, দাদা ও একজন অভিজ্ঞ নার্স এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে সঙ্গে আছেন। নবজাতকের শারীরিক অবস্থা বর্তমানে অপরিবর্তিত। শনিবার বিকেলে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. খোন্দকার মোঃ আব্দুল্লাহ হিস সায়াদ এ কথা জানান। আব্দুল্লাহ হিস সায়াদ ওই নবজাতকের তদারকির জন্য সিভিল সার্জন কর্তৃক গঠিত তিন সদস্যের মেডিক্যাল দলের প্রধান। শনিবার সকাল থেকেই কাজ শুরু করেছে এই চিকিৎসক দল। আব্দুল্লাহ হিস সায়াদ জানান, ‘শিশুটির নাড়ির গতি, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং গায়ের রং ভাল আছে। যেহেতু দুদিন নবজাতক ভালভাবে আছে এখন তাকে ঢাকায় স্থনান্তর করা যেতে পারে।’ ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া শনিবার বেলা ১০টার দিকে ডা. জাহিদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে এসে শিশুটিকে দেখেন এবং শিশু হাসপাতালের কর্মকর্তা ও হাসপাতাল কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলেন। তিনি শিশু হাসপাতাল কর্তৃক গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যদের সংখ্যা বাড়িয়ে ছয় করা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কেএম কামরুজ্জামনকে ওই কমিটির প্রধান করে কমিটি পুনর্গঠনের নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের ইনকিউবেটরে রেখে শিশুটিকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। কিন্তু ওই নবজাতকের পরিবার শিশু হাসপাতালের চিকিৎসায় সন্তুষ্ট বিধায় শিশুটিকে ওই হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, তাছাড়া সিভিল সার্জন কর্তৃক তিন সদস্যের চিকিৎসক দল বর্তমানে শিশুর চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছেন। প্রশাসনও সর্বক্ষণিক তদারকি করছে। তিনি বলেন, গালিবার জন্য সবকিছু করবে জেলা প্রশাসন। শনিবার দুপুর ১২টায় গঠিত তদন্ত কমিটি হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে প্রথম সভায় মিলিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কেএম কামরুজ্জামন। এছাড়া সিভিল সার্জন জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম পর্যালোচনা করার জন্য জেনারেল হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ কনসালটেন্ট ঊষা রঞ্জন চক্রবর্ত্তীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সেটিও শনিবার থেকে কাজ শুরু করেছে। প্রসঙ্গত গত বুধবার রাত ১২টার দিকে ফরিদপুর জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে এই শিশুটির জন্ম হয়। শিশুটিকে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা দেন। ছয় ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে শহরের আলীপুর গোরস্তানে দাফন করার সময় কেঁদে ওঠে শিশুটি ।
×