ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার্থী অভিভাবক বিশেষজ্ঞ সবাই উদ্বিগ্ন ;###;গৃহশিক্ষক কোচিংয়ের ওপর নির্ভরতা বাড়বে- আশঙ্কা অভিভাবকদের

নতুন জটিলতা

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

নতুন জটিলতা

বিভাষ বাড়ৈ ॥ পাবলিক পরীক্ষায় সৃজনশীল প্রশ্নের ব্যবহার নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ অসন্তোষের মধ্যেই দেশজুড়ে স্কুল-কলেজে নতুন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। আগামী বছর থেকেই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় দুই ঘণ্টা ২০ মিনিটে সাতটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। এতদিন যেখানে দুই ঘণ্টা ১০ মিনিটে ছয়টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেয়া নিয়েই ছিল আপত্তি। এখন আবার প্রশ্নের সংখ্যা বৃদ্ধি হলেও সময় না বাড়ায় রাজধানীর নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সর্বত্রই স্কুল-কলেজে ছড়িয়ে পড়েছে অসন্তোষ। উদ্বিগ্ন অভিভাবকরাও। ‘সাতটি সৃজনশীল মানব না’, ‘ছয়টির বেশি লিখব না’, ‘আমরা মানুষ, রোবট নই’, ‘নিত্যনতুন পদ্ধতি করে আমাদের ক্ষতি করবেন না’- এমন সব সেøাগানে প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানাচ্ছে নানান কর্মসূচীতে। এদিকে সৃজনশীল নিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্বেগের কারণ ইতোমধ্যেই পরিষ্কার হয়ে উঠেছে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদনেও। গবেষণায় দেখা গেছে, রাজধানীসহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে এখনও অভ্যস্ত হতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। তাই অভিভাবকরা বাধ্য হচ্ছেন গৃহশিক্ষক ও কোচিং সেন্টারের ওপর নির্ভর করতে। এজন্য ক্লাসরুমে পর্যাপ্ত সময় না পাওয়া আর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের অভাবকে দায়ী করছেন শিক্ষাবিদরা। অবস্থা এমন যে, সৃজনশীল পদ্ধতি বুঝতে শিক্ষার্থীরা গাইড বইয়ের সাহায্য নেন ৯২ শতাংশ। গৃহশিক্ষকের সহায়তা নেন ৬৭ শতাংশ। আর খোদ শিক্ষকরাই গাইড বইয়ের সহায়তা নেন ৪৭ শতাংশ। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সাতটি সৃজনশীলের পরিবর্তে আগের মতো ছয়টি প্রশ্ন রাখার দাবিতে ইতোমধ্যেই আন্দোলন শুরু করেছে রাজধানীতে অবস্থিত দেশের নামী দামী স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে একবার এ বিষয়ে আপত্তি জানালেও শিক্ষার্থীদের আশা ছিল আগামী বছর থেকে সাতটি সৃজনশীল বিষয়ের পরীক্ষা পদ্ধতি কার্যকর হবে না। আশা ছিল শিক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে ২০১৮ থেকে কিংবা তারও পরে আলোচনা করে নতুন কোন সিদ্ধান্ত হবে। কিন্তু আগামী বছর থেকেই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় দুই ঘণ্টা ২০ মিনিটে সাতটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে- সরকারের এমন সিদ্ধান্ত জানতে পেরে আন্দোলন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাধারণ ছাত্রসমাজের ব্যানারে নামী স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে বলেছে, আগে দুই ঘণ্টা ৪০ মিনিটে ছয়টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো। এখন সাতটা প্রশ্ন মানি না, মানব না। শীঘ্রই বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। শিক্ষার্থীরা বলেছে, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- ২০১৭ সালের পরীক্ষায় একই সময়ে সাত বিষয়ে প্রতিটিতে সাতটি করে সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। এতে পরীক্ষায় তাদের নম্বর কমে যাবে। তাই আগের নিয়ম বহাল অথবা পরীক্ষার সময় বৃদ্ধির দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলছিল, আগে নৈর্ব্যক্তিক অংশে ৪০ প্রশ্ন থাকলেও এখন ৩০ করা হয়েছে। আমরা এখানে ৪০ প্রশ্ন বহাল চাই। মানববন্ধনে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক স্কুল, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, উদয়ন স্কুল এ্যান্ড কলেজ, ঢাকা কমার্স কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীরা শনিবার জানিয়েছে, সারাদেশে প্রচার অভিযান শুরু করেছে তারা। আগামী সপ্তাহেই বৃহত্তর কর্মসূচী দেয়া হবে। গত এক সপ্তাহে দেশের বেশ কয়েকটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়েছে নানান কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে। সৃজনশীল নিয়ে ‘রিসার্চ ফর এ্যাডভান্সমেন্ট অব কমপ্লিট এডুকেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে এখনও অভ্যস্ত হতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। তাই অভিভাবকরা বাধ্য হচ্ছেন গৃহশিক্ষক ও কোচিং সেন্টারের ওপর নির্ভর করতে। এজন্য ক্লাসরুমে পর্যাপ্ত সময় না পাওয়া আর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের অভাবকে দায়ী করছেন শিক্ষাবিদরা। শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ না থাকার কথা অবশ্য শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বীকার করছেন। তারা বলছেন, এ সঙ্কট উত্তরণের চেষ্টা করছে সরকার। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ হয়। পাশাপাশি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে ২০০৬ সালে মাধ্যমিকে সৃজনশীল পদ্ধতির প্রচলন করা হয়। কিন্তু ১০ বছর হয়ে গেলেও এ পদ্ধতির সঙ্গে অভ্যস্ত হতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। সরকারী ও নিবন্ধনকৃত স্কুলের শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ পেলেও নতুন জাতীয়করণ করা ২৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এখনও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ পাননি। তাই সঙ্কট দূর করা যাচ্ছে না। যেখানে ৬০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে গড়ে একজন করে শিক্ষক রয়েছেন, সেখানে আবার তাদের প্রশিক্ষণেরও ঘাটতি রয়েছে। যে শিক্ষকের প্রশিক্ষণের ঘাটতি রয়েছে, সেই শিক্ষকের কাছে আশা করা মুশকিল উল্লেখ করে অভিভাবকরা বলছেন, যার প্রশিক্ষণের ঘাটতি রয়েছে তিনি সৃজনশীল পদ্ধতি শ্রেণীকক্ষে পুরোটা চর্চা করতে পারবেন না এটাই স্বাভাবিক। শিক্ষকরাই যেখানে গাইড বইয়ের সাহায্য নিয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন বুঝে থাকেন, সেখানে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কী বোঝাবেন- এ প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সংগঠন অভিভাবক সমন্বয় পরিষদের নেতৃবৃন্দ বলছেন, যেখানে দুই ঘণ্টা ১০ মিনিটে ছয়টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেয়ার বিষয় নিয়েই ভীত শিক্ষার্থীরা, সেখানে আগামী বছর থেকে ১০ মিনিট সময় বাড়িয়ে আরও একটি প্রশ্ন জুড়ে দেয়ার কোন মানে হয় না। এতে আরও ভয় ছড়িয়ে পড়েছে। নিত্যনতুন পদ্ধতি পরিবর্তন করে আসলে আমাদের সন্তানদের নিয়ে ‘এক্সপেরিমেন্ট’ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ অভিভাবকদের। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নিপা সুলতানা বলছিলেন, দেখেন দশটা অবজেকটিভের উত্তর দিতে যে সময় লাগে, ১০ নম্বরের লিখিত প্রশ্নের উত্তর লিখতে তার অনেক বেশি সময় লাগে। এমনিতেই সময় অনুসারে ৬টার উত্তর লেখা নিয়ে বাচ্চাদের ওপর চাপ; সেখানে প্রশ্ন বাড়িয়ে সময় না বাড়ালে সমস্যা হবেই। আমি ভিকারুননিসার মতো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও দেখেছি তারা ভয়ে আছে। অভিভাবক ফোরাম নেত্রী প্রশ্ন বাড়ালেও তা আরও দুই-তিন বছর পর কার্যকর করার দাবি জানান। তবে তাও সময় বাড়িয়ে। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ সুফিয়া খাতুন বলছিলেন, এটা একটা সমস্যা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন হচ্ছে। আমি আমার প্রতিষ্ঠানের মেয়েদের সঙ্গে কথা বলব। তাদের সমস্যার বিষয়টি ভালভাবে দেখব। সৃজনশীল প্রশ্ন ঠিকভাবে করা হয় না বলেও আপত্তি উঠছে। প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। রাজধানীর বিয়াম স্কুল এ্যান্ড কলেজের অভিভাবক রোকসানা আক্তার তার সন্তানের উদ্বেগের কথা জানিয়ে বলছিলেন, একটি প্রশ্নে বলা হলো- ‘বুড়িগঙ্গার কাছাকাছি অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনার তিনটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।’ এ প্রশ্নের উত্তরে এক শিক্ষার্থী লালবাগ কেল্লার তিনটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছে। কিন্তু শিক্ষক এটি কেটে দিয়েছেন। শিক্ষক দাবি করছেন, এর সঠিক উত্তর হিসেবে আহসান মঞ্জিলের বিবরণ দিতে হবে। ক্ষুব্ধ অভিভাবকের অভিযোগ- এর উত্তর লালবাগ কেল্লা না হয়ে আহসান মঞ্জিল হবে তা বোঝার উপায় কী? কারণ বুড়িগঙ্গার তীরে এবং কাছাকাছি আরও অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অস্থিরতা, ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক অভিভাবক জানিয়েছেন, তারা প্রচ- মানসিক যন্ত্রণায় রয়েছেন সৃজনশীল পদ্ধতি নিয়ে। তার ওপর আগামী বছর থেকে আরও একটি প্রশ্ন বাড়িয়ে দেয়া হলো। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীর জন্য নতুন সিদ্ধান্ত আরও বড় সঙ্কট। নতুন নতুন পদ্ধতির সমালোচনা করে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজের আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী সোহেলের অভিভাবক আকবর হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছিলেন, কিসের সৃজনশীল? সারাদিন সন্তান নিয়ে টেনশন করতে হচ্ছে। পাগলের মতো ছুটতে হচ্ছে কোচিং-প্রাইভেটে। অনেক শিক্ষকও ঠিকমতো বোঝেন না। অভিভাবকও বোঝেন না। আবার বইতেও কোন কিছু নেই। তাহলে ছাত্রছাত্রীরা করবে কী? পুরো বই পড়েও শিশুরা পরীক্ষায় পাস করবে কি-না, তার কিছুই বুঝতে পারছি না। প্রয়োজনীয় বই ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ ছাড়া পঞ্চম শ্রেণীতে সৃজনশীল চালু করার সমালোচনা করে অভিভাবকরা বলেছেন, সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হলেও পঞ্চম শ্রেণীর কোন বই সৃজনশীল ধারায় লেখা হয়নি। আগের পরীক্ষা পদ্ধতি অনুযায়ী লিখিত বই-ই পড়ানো হচ্ছে কিন্তু পরীক্ষা দিতে হচ্ছে অন্য পদ্ধতিতে। অভিভাবক ও শিক্ষকরা জানান, বইয়ে যদি পর্যাপ্ত সংখ্যক নমুনা প্রশ্ন দেয়া থাকত, তাহলে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা বই পড়ে কিছুটা ধারণা পেতে পারতেন। কিন্তু সে সুযোগ নেই। আর শিক্ষকদেরও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি। ফলে শিক্ষক নিজের মতো করে ক্লাসে যতটুকু সম্ভব ধারণা দিচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে গণিত ও ইংরেজীতে। বিভিন্ন স্কুলের গণিতের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, গণিতে সৃজনশীলের ওপর তিনটি প্রশ্ন থাকছে পঞ্চম শ্রেণীতেই। কিন্তু বইয়ে সৃজনশীলের কোন নমুনা বা উদাহরণ নেই। বেশির ভাগ অভিভাবকই এটা বোঝেন না এবং শিক্ষার্থীরাও বোঝে না। গ্রামের অবস্থা আরও ভয়াবহ। শিক্ষকরা জানান, সৃজনশীলের জন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় আরও সময় দরকার। প্রতি বছর সৃজনশীল প্রশ্নের সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু পরীক্ষার সময় বাড়ানো হচ্ছে না। এটা করতে গিয়েই এখন অস্থিরতা ছাড়িয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। গত কয়েক দিন ধরে অব্যাহতভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছে আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামেও বড় ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করেছে নগরীর নামী দামী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। নগরীর ২০টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করে। নগরীর বাকলিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, ‘রিস্কি ক্লাস নাইন’ নামে ফেসবুকে আমাদের একটি গ্রুপ আছে। সেখানে আমরা আলোচনার পর মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছি। কর্মসূচীতে অংশ নেয় নাসিরাবাদ সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম সরকারী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়, ডাঃ খাগস্তীর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, সেন্ট স্কলাসটিকাস হাই স্কুল, সিলভার বেলস স্কুল এ্যান্ড কলেজসহ নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন করছে রাজশাহীতে অবস্থিত বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানায়, ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় প্রতি বিষয়ে সাতটি সৃজনশীল ও ৩০টি বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অথচ গত বছর ছিল ছয়টি সৃজনশীল ও ৪০টি বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র পদ্ধতিতে পরীক্ষা। ছয়টি সৃজনশীল প্রশ্ন লিখতে গিয়েই তাদের ওপর অতিরিক্ত মানসিক চাপ পড়ে। সময় পাওয়া যায় না। তার ওপর এখন আরও চাপ দেয়া হচ্ছে। কর্মসূচীতে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল, ল্যাবরেটরি স্কুল, রাজশাহী মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজ, সরকারী মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। ‘মানি না, মানব না, সাতটি সৃজনশীল লিখব না’- এই স্লোগানে দিনাজপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর পরীক্ষার মানবণ্টনে নতুন পদ্ধতি বাতিল ও সৃজনশীল প্রশ্নের সংখ্যা কমিয়ে আনার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। ঠাকুরগাঁও চৌরাস্তায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ঠাকুরগাঁও সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পুলিশ লাইন স্কুল এ্যান্ড কলেজ ও আমানতউল্লাহ ইসলামিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। শনিবার অতিরিক্ত প্রশ্নের উত্তর না লেখার দাবি জানিয়ে বগুড়ায় মানববন্ধন করেছে সরকারী আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থীরা। শহরের সাতমাথায় কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধর কর্মসূচী পালন করে। মানববন্ধনে কলেজ শিক্ষার্থী সিয়াম, কৌশিক, নাজিরুল, রায়হান, সাফিন, রাহুল, জিহাদ, মল্লিকা, রিয়া, আন্নি, ফাতেমা প্রিয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখে। শিক্ষার্থীরা জানায়, আগে পরীক্ষার খাতায় প্রত্যেক বিষয়ে ছয়টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখতে হতো। এখন সেখানে আরও একটি প্রশ্ন বাড়িয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু এক্ষেত্রে কোন সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়নি। এতে আগের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাতটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে, যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমরা রোবট নই বলেও হতাশা প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা।
×