ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সন্ধ্যা নদীতে লঞ্চ ডুবির ঘটনায় মেরিন আদালতে মামলা

প্রকাশিত: ০১:৫৮, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সন্ধ্যা নদীতে লঞ্চ ডুবির ঘটনায় মেরিন আদালতে মামলা

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীতে এমএল ঐশি-২ নামের যাত্রীবাহি একতলা লঞ্চডুবির ঘটনার তিনদিন পর শনিবার দুপুরে মেরিন আদালতে নৌ-যানটির মালিক ও চালক এবং তার সহকারির (হেলপার) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশালের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। লঞ্চ মালিক ও চালক বানারীপাড়া পৌর শহরের ১নম্বর ওয়ার্ডের ইউসুফ আলী হাওলাদার এবং তার সহকারি (হেলপার) মো. নয়নকে মামলায় আসামি করা হয়। মামলার বাদি মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সার্ভে সনদ, রেজিস্ট্রেশন, সময়সূচিবিহীন নৌযান চালানো ও সরকারের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে লঞ্চ যাত্রী পরিবহন করার ফলে দুর্ঘটনায় এতোগুলো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। মামলার আরজিতে উল্লেখিত সব অভিযোগ আনা হয়েছে। অপরদিকে একই ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করার পর এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেননি। এদিকে ঐশি ট্রাজেডির ঘটনায় শনিবার বেলা বারোটার দিকে আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এনিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ জনে। সূত্রমতে, শুক্রবার দুপুরে বানারীপাড়া থানার এসআই মো. জসিম উদ্দিন বাদি হয়ে এমএল ঐশি লঞ্চের মালিক ও চালক বানারীপাড়া পৌর শহরের ১নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত রব হাওলাদারের পুত্র ইউসুফ আলী এবং হেলপার নয়নকে আসামি করে অবহেলার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা অধিক লাভের আশায় রুট পারমিট ও সার্ভে সনদ না নিয়েই অবৈধভাবে যাত্রী বহন করেন। ফলে তাদের অবহেলার কারণেই লঞ্চ ডুবে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বানারীপাড়া থানার ওসি জিয়াউল আহসান জানান, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে। এদিকে, সন্ধ্যা নদীতে ঐশি-২ নামের লঞ্চ ডুবির ঘটনায় জাকির হাওলাদার (৪০) নামের আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার বেলা ১২টার দিকে সন্ধ্যা নদীর বাংলাবাজার নামক এলাকায় লাশটি ভেঁসে উঠলে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে। জাকির সৈয়দকাঠী ইউনিয়নের হামেদ হাওলাদারের পুত্র। লঞ্চ ডুবির ঘটনায় এনিয়ে সর্বশেষ লাশের সংখ্যা দাড়িয়েছে ২৬ জনে। বানারীপাড়া থানার ওসি জানান, সন্ধ্যা নদীর বাংলাবাজার এলাকায় একটি লাশ ভেঁসে উঠার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে। এ নিয়ে ১০জন নারী, ৭ জন শিশু ও ৯ জন পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, লঞ্চ ডুবির ঘটনায় উজিরপুর উপজেলার সৈয়দ আজিজুল হক ডিগ্রি কলেজ ছাত্র মাইনুল ইসলাম রাজু নামের একজন এখনও নিখোঁজ রয়েছে। উল্লেখ্য, গত বুধবার বেলা বারোটার দিকে ৫০/৬০ জন যাত্রী নিয়ে বানারীপাড়ার লঞ্চঘাট থেকে যাত্রীসহ উজিরপুরের হাবিবপুর যাচ্ছিল এমএল ঐশি-২ নামের একতলা লঞ্চ। পথিমধ্যে সৈয়দকাঠী ইউনিয়নের দাসেরহাট ঘাটে ভিড়তে গিয়ে নদী পাড়ের মাটির একটি বড় অংশ ভেঙে পড়লে সেখানে তীব্র ঘূর্নি স্রোতের সৃষ্টি হয়ে লঞ্চটি ডুবে যায়।
×