ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাস্তা কালভার্ট বিলীন

পদ্মার ভাঙ্গন বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

পদ্মার ভাঙ্গন বাড়ছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরীয়তপুর, ২৩ সেপ্টেম্বর ॥ আবারও জাজিরা উপজেলার কুন্ডেচর এলাকায় পদ্মার তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। শুক্রবার ভোরে পদ্মার তীব্র ভাঙ্গনে কুন্ডেরচর ইসমাইল মেমোরিয়াল হাইস্কুল, কুন্ডেরচর জামে মসজিদ, ৫টি বসতঘর, একটি কালভার্ট, ১টি মাদ্রাসা, কলমিরচর বাজার রাস্তাসহ অসংখ্য গাছপালা ও শত শত একর ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে কুন্ডেরচর হাসেম আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের বাড়ি ও মসজিদ-মাদ্রাসা। এদিকে এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা সামনে রেখে স্কুল ভবন নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় ইসমাইল মেমোরিয়াল হাইস্কুলের ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ইসমাইল মেমোরিয়াল হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শিউলি আক্তার, কাওসার মাহমুদ, জনি ও হৃদয় মাহমুদ জানায়, তারা এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী, তাদের বিদ্যালয়ের ভবন নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় শ্রেণীকক্ষে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। তাই এসএসসি পরীক্ষায় পাস করতে পারবে কিনা -এ নিয়ে চিন্তিত তারা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার দত্ত বলেন, বছরের শেষ দিকে যখন শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরু হয় সেই মুহূর্তে বিদ্যালয় ভবন নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় আমরা ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছি। এদিকে পদ্মাপাড়ে অবস্থিত জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর, বিলাশপুর ও নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর এলাকায় আবারও নতুন করে পদ্মার ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। পদ্মার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে এ ভাঙ্গন তীব্র হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। প্রতিদিনই পাকা ভবন, মসজিদ মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট, শত শত একর ফসলী জমি, গাছপালা নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন শত শত ঘরবাড়ি, মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল, রাস্তাঘাট, গাছপালাসহ বিশাল এলাকাজুড়ে ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙ্গনরোধে কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এসব এলাকায় গত ১ সপ্তাহে নদী ভাঙ্গনে পাকাঘরসহ সহায়-সম্বল হারিয়ে সহস্রাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী জানান, প্রশাসনের লোকজন আসে- আর দেখে যায় এবং সহমর্মিতা জানায় কিন্তু ভাঙ্গনরোধে কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। অথবা নদী ভাঙ্গনের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ অসহায় মানুষগুলো কিভাবে মোকাবেলা করবেÑ সে ধরনের কোন পরামর্শও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকেই তাদের ঘরদরজা ভেঙ্গে নিয়ে রাস্তায় অথবা অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছে। কেউবা খোলা আকাশের নিচে দিন রাত কাটাচ্ছে। সরকারের কাছে ভাঙ্গন রোধে বেরিবাঁধ দেয়াসহ স্থায়ীভাবে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছে ভুক্তভোগীরা। সেই সঙ্গে এসব অসহায় লোকজন যাতে সরকারী খাস জমিতে বসবাস করতে পারে- তার ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।
×