ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভাওয়াইয়া শিল্পী দুলাল চন্দ্র

প্রকাশিত: ০৬:২১, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ভাওয়াইয়া শিল্পী দুলাল চন্দ্র

প্রান্তিক সঙ্গীত শিল্পী দুলাল চন্দ্র রাজবংশী। নীলফামারী সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের কানিয়ালখাতা গ্রামের প্রয়াত দেবেন্দ্র নাথ রায়ের তিন ছেলের মধ্যে দুলাল চন্দ্র রাজবংশী দ্বিতীয়। দুলাল চন্দ্রের বড় ভাই দয়াল চন্দ্র রাজবংশীও ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী। তিনি পাঁচ বছর পূর্বে পরলোকগমন করেন। দুলাল চন্দ্র রাজবংশী এ অঞ্চলের ভাওয়াইয়া, মাটিয়া, বাউল ও পালাগান গেয়ে থাকেন ১২ সদস্যের রাজবংশী সাংস্কৃতিক দল নিয়ে। দুলাল চন্দ্র রাজবংশী বলছিলেন মানুষের ভালবাসার সম্মান নিয়ে বেঁচে আছি। মানুষ সঙ্গীত পছন্দ করে। গান শোনে। ভিড় হয় মানুষের। তালি দেয়। তাই গানই আমার জীবন, গানই আমার মরণ-তাইতো পথে পথেই ঘুরছি। জীবনের যন্ত্রণাগুলো গান গেয়ে ভুলে থাকার চেষ্টা করছি। কি পেলাম আর কি পেলাম না? তার হিসাব মেলানোর চেষ্টা করি না। ‘বন্দিনী’ ছায়াছবির রুনা লায়লার কণ্ঠের ‘গান নয় জীবন কাহিনী সুর নয় ব্যথার রাগিনী ॥ কি হবে শুনে কী পাইনি, কী পাইনি’ গানের প্রথম কয়েকটি লাইনের কথা উল্লেখ করে দুলাল চন্দ্র রাজবংশী বললেন এই গানের কথাগুলো যে কোন প্রান্তিক সঙ্গীত শিল্পীর জীবনের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। তিনি স্মরণ করেন ভাওয়াইয়া শিল্পী আব্বাসউদ্দীন, হরলাল রায়, মহেশচন্দ্র রায়কে। দুলাল চন্দ্র রাজবংশী গর্ববোধ করেন নীলফামারীর মানুষ হিসেবে। কারণ এ জেলারই সন্তান দেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী মুস্তফা জামান আব্বাসী, ফেরদৌসী রহমান, রথীন্দ্রনাথ রায়। এছাড়া দেশবরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বর্তমান সরকারের সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপিকে তিনি মনে প্রাণে ভালবাসেন। নূর দাদা তাঁকে দরিদ্র সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে অনুদানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। প্রতি বছর তিনি শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে দরিদ্র সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে অনুদান পান। ২০০৮ সাল হতে এই অনুদান ছিল সাত হাজার টাকা। এরপর বৃদ্ধি পায় ৯ হাজার। ১৪ সালে আবার বৃদ্ধি পায় ১২ হাজার। ১৫ সালে এসে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮ হাজার। এছাড়া দুলাল চন্দ্র রাজবংশী রংপুর বেতারের শিল্পী। প্রতি এক মাস অন্তর বাউল সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এতে সম্মানী পান মাত্র আটশ’ টাকা। দুলাল জানান, বাবার হাত ধরে সঙ্গীতে তাঁর প্রবেশ। যখন বয়স আট বছর তখন তিনি গানের ভুবনে পা রাখেন। সেই হতে চলছে তাঁর জীবন। পারিবারিক জীবনে স্ত্রী কাজলী রানী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মেয়ে কনিকা রানী রাজবংশী খুব ভাল ভাওয়াইয়া গাইতে পারে। -তাহমিন হক ববী নীলফামারী থেকে
×