ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নতুন চেহারা পাবে অবিভক্ত বাংলার প্রথম জেলা

যশোর পৌরসভায় শুরু হচ্ছে দেড় শ’ কোটি টাকার কাজ

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

যশোর পৌরসভায় শুরু হচ্ছে দেড় শ’  কোটি টাকার কাজ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ অবশেষে শীর্ষ দশ শর্তপূরণ করেই মৃতপ্রায় প্রকল্পকে জীবিত করে তুললেন যশোর পৌর কর্তৃপক্ষ। সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এডিবি, ওএফআইডি এবং বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের শর্তাবলী পূরণ হওয়ায় যশোর পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়নে অচিরেই দেড়শ’ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। এতে নতুন চেহারা পাবে অবিভক্ত বাংলার প্রথম জেলা যশোর শহর। ফলে পৌরসভার সকল ওয়ার্ডের ভাঙ্গাচোরা রাস্তা ফুটপাথসহ ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত হবে। এতে পৌরবাসীর নাগরিক সেবা প্রদানে আরও একধাপ এগিয়ে যাবেন বর্তমান পৌরকর্তৃপক্ষ। পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু জানান, তৃতীয় নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ প্রকল্পের আওতায় যশোর পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় বাতিল হওয়ার তালিকায় চলে যাওয়া দেড়শ’ কোটি টাকার কাজ শুরু হচ্ছে অচিরেই। কর্তৃপক্ষ জানান, অচিরেই প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া যাবে। বরাদ্দ এ টাকায় ১ নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দীপাড়া শাহা পাড়া রোডের নড়াইল রোড থেকে ফুলতলা মোড় ভায়া মোল্লাপাড়া আমতলা মোড় পর্যন্ত ১ হাজার ৩শ’ মিটার এবং লিংক রোড আমতলা মোড় থেকে যশোর ঢাকা হাইওয়ে রোড পর্যন্ত ৫শ’ মিটার মোট ১৮শ’ মিটার রাস্তা ও ড্রেন উন্নত করা হবে। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোপ- পিলু খান রোডের ৩শ’ ৪০ মিটার রাস্তা ও ড্রেন উন্নতকরণ, ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের ১১শ’ মিটার, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষপাড়ার যশোর-ঝিনাইদহ রোডের পালবাড়ি পর্যন্ত ৯শ’ ৭০ মিটার, লিঙ্ক-১-ঘোষপাড়া রোড থেকে যশোর ঝিনাইদহ রোডের ১শ’৩৫ মিটার এবং লিঙ্ক-২ কাদের মোড় থেকে কাঁঠালতলা পর্যন্ত ৪শ’২০ মিটার মোট ১ হাজার ৫শ’২০ মিটার রাস্তা ও ড্রেন উন্নতকরণ, মুক্তিযোদ্ধা অফিস মোড় থেকে আবু তালেব রোড ভায়া ডায়মন্ড প্রেস পর্যন্ত ৫শ’ ১০ মিটার এবং লিঙ্ক রোড তেল মিল রোডের ২শ’ ৬০ মিটার মোট ৭শ’ ৭০ মিটার রাস্তা ও ড্রেন উন্নতকরণ, গাজিরহাট রোডের ১ হাজার ৫০ মিটার ও লিঙ্ক রোড গাজিরহাট থেকে রওশন আলী রোড পর্যন্ত ৩শ’ ৫০ মিটার মোট ১ হাজার ৪ মিটার রাস্তা, বিবি রোডের বাইলেন (এ) শাহী মশিয়ূর রহমান রোড থেকে ঢাকা রোডের ৫শ’ ৫০ মিটার, (বি) জামাল হাউস থেকে রেজাউল হাউস পর্যন্ত ৯০ মিটার মোট ৬শ’ ৪০ মিটার রাস্তা উন্নত করা হবে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্মণ পাড়া রোডের (এ) কারবালা ওয়াপদা গ্যারেজ মোড় থেকে খড়কী কবরস্থান পর্যন্ত ৫শ’ ৮০ মিটার, (বি) স্টেডিয়াম রোড থেকে ব্যামাগার পর্যন্ত ১ হাজার মিটার, লিঙ্ক-১ এ খড়কি কবরস্থান থেকে মসজিদ পর্যন্ত ১শ’ ৭ মিটার, লিঙ্ক-২ এ স্টেডিয়াম রোডের ১শ’ ২৫ মিটার মোট ১হাজার ৮শ’ ১২ মিটার রাস্তা ও ড্রেন উন্নতকরণ, খ্রীস্টান চার্চ থেকে বর্মণ পাড়া পর্যন্ত ৫শ’ ৮০ মিটার, লিঙ্ক-১ এ নিশাত হাউস থেকে বাইপাস রোড পর্যন্ত ২শ’ মিটার, লিঙ্ক-২ এ নিশাত হাউস থেকে কারবালা বর্মণপাড়া রোড পর্যন্ত ২শ’ ৫০ মিটার মোট ১হাজার ৩০ মিটার রাস্তা ও ড্রেন উন্নতকরণ, পুলিশ লাইন স্কুল রোডের শহীদ মশিয়ূর রহমান রোড থেকে বিমান বন্দর রোড পর্যন্ত ৩শ’ ৮৫ মিটার রাস্তা ও ড্রেন, বিমানবন্দর রোড থেকে যশোর বেনাপোল রোড পর্যন্ত ৮শ’ ২৫ মিটার রক্ষণাবেক্ষণ, সিভিল কোর্ট মোড় থেকে মশিয়ূর রহমান রোড ভায়া জর্জ কোর্ট ও রেজিস্ট্রি অফিস পর্যন্ত ৬শ’ ৭৫ মিটার রাস্তা ও ড্রেন, মুজিব সড়ক থেকে বাইপাস রোড ভায়া এমএম কলেজ ভায়া ধোপাপাড়া রোড পর্যন্ত ১ হাজার ৩শ’ ৬০ মিটার রাস্তা ও ড্রেন, হযরত বোরহান শাহ সড়ক থেকে সিভিল কোর্ট মোড় পর্যন্ত ৩শ’২০ মিটার রাস্তা উন্নত করা হবে। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিভিল কোর্ট মোড় থেকে চিত্রা সিনেমা হল মোড় পর্যন্ত ৫শ’৩৫ মিটার রাস্তা ও ড্রেন উন্নতকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, কেশবলাল রোড থেকে রেলরোড ভায়া টিএন্ডটি অফিস পর্যন্ত ৩শ’ মিটার রাস্তা, হরিনাথ দত্ত লেনের ৩শ’৬০ মিটার রাস্তা ও ড্রেন, গুরুদাশ বাবু লেনের ৩শ’ ৫০ মিটার রাস্তা ও ড্রেন, মুজিব সড়ক থেকে নতুন রামকৃষ্ণ আশ্রম রোড ভায়া স্টেশন মাদ্রাসা পর্যন্ত ৫শ’ ৫০ মিটার রাস্তা ও ড্রেন, পিটিআই রোড থেকে রেলরোড স্টেশন মোড় পর্যন্ত ৬শ’ ১৫ মিটার, টিবি ক্লিনিক রোডে (রেলরোড থেকে পিয়ারি মোহন রোড পর্যন্ত) ৪শ’ ৪৫ মিটার রাস্তা উন্নতকরণ হবে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণ আশ্রম রোড থেকে যশোর বেনাপোল রোড পর্যন্ত ৮শ’ ১০ মিটার রাস্তা ও ড্রেন, আজিমাবাদ কলোনী রোডের পিয়ারীমোহন রোড থেকে বেজপাড়া মেইন রোড পর্যন্ত ৩শ’ ৪০ মিটার রাস্তা ও ড্রেন উন্নতকরণ হবে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বকচর হুশতলা রোডের (এ) যশোর খুলনা রোড থেকে মসজিদ পর্যন্ত ৮শ’ ৫০ মিটার এবং (বি) ব্যাংক পট্টি রোডের লিঙ্ক-১এ ১শ’ মিটার, লিংক ২ এ ১শ’ মিটার মোট ১ হাজার ৩শ’ ৫০ মিটার রাস্তা ও ড্রেন উন্নত করা হবে। পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু বললেন, চলতি বছরের ৬ মার্চ দায়িত্বভার গ্রহণের পর মাত্র ৬ মাসের মধ্যে প্রায় ১৭ কোটি টাকা বকেয়া বিদ্যুত বিল পরিশোধ করাসহ পাওনা ট্যাক্স আদায়, ঋণ পরিশোধসহ নানা শর্ত পূরণের পর যশোর পৌরসভার বর্তমান কার্যক্রম ‘পুরোপুরি সন্তোষজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। যার ফলে ওএফআইডি এবং বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের সহায়তাপুষ্ট এ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যশোরের সকল ওয়ার্ডের রাস্তা সংস্কার করা হবে। তিনি জানান, নাগরিক সেবা প্রদানে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে যথাসাধ্য কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান পৌরকর্তৃপক্ষ। এ লক্ষ্যে দায়িত্ব গ্রহণের পরই প্রথম উদ্দেশ্য ছিল এ প্রকল্প বাঁচানো। পৌরবাসীর সহায়তায় সেটা সফল হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যশোর পৌরসভা নতুন রূপ পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সততা ও দক্ষতার সাথে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
×