ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গীবাদ নির্মূলে-

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

জঙ্গীবাদ নির্মূলে-

সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ দমনের প্রশ্নে ভারত বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থন পাবে। কাশ্মীরের উড়িতে জঙ্গী হামলার পর বাংলাদেশ থেকে সেই বার্তাই দেয়া হয়েছে? ভারতের কাশ্মীরের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ওই জঙ্গী-সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসের প্রশ্নে বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থন পাবে ভারত। কাশ্মীরের উড়িতে সম্প্রতি সেনাঘাঁটিতে এই সন্ত্রাসী হামলায় ১৮ সেনা সদস্য নিহত হন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে পাঠানো এক বার্তায় শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে যে কোন সঙ্কটময় মুহূর্তে ভারতের পাশে থাকবে। বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশ যে কোন ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে। এই অঞ্চল থেকে সীমান্ত সন্ত্রাস নির্মূলে অভিন্ন প্রচেষ্টায় এক সঙ্গে কাজ করার কথাও বার্তায় উল্লেখ করা হয়। কাশ্মীর একটি দীর্ঘদিনের ইস্যু। এটা রাজনৈতিক সমস্যা। কিন্তু এবার কাশ্মীরের বিষয়টি সরাসরি জঙ্গী হামলা। আর বাংলাদেশ যে কোন ধরনের জঙ্গী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে। তাই যারা হামলার জন্য দায়ী, তাদের চিহ্নিত করা, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়া হোকÑ এটাই বাংলাদেশ চায়। শুধু এই সেনা হত্যার ঘটনাই নয়, উপমহাদেশে অনেকে সন্ত্রাসের ঘটনাতেই পাকিস্তান তার অবস্থান স্বচ্ছ রাখতে পারেনি। এমনকি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব জঙ্গী-সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে তার সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার ইন্ধনের কথাও শোনা গেছে। তাই সন্ত্রাসী ও জঙ্গী হামলার ঘটনা যেখানেই ঘটুক তা বাংলাদেশ সমর্থন করে না। বাংলাদেশের অবস্থান সব সময়ই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কে এখন স্বর্ণযুগ বিরাজ করছে। দুই দেশের বন্ধুত্ব, পারস্পরিক বিশ্বাস, আস্থা ও বোঝাপড়া এখন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মাধ্যমে এক নতুন দিগন্তে এসে দাঁড়িয়েছে। দেশ ও জনগণের নিরাপত্তায় জল-স্থল-নভ সব জায়গায় বাংলাদেশ-ভারত একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার নীতি গ্রহণ করেছে। এতে দুই দেশই উপকৃত হচ্ছে। এই সম্পর্ক দুই দেশের পক্ষেই কল্যাণকর। বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। সেই নীতি মেনেই বাংলাদেশের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশ কোন রকম জঙ্গী তৎপরতা ও সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেবে না। এর সুফল পাচ্ছে ভারতওÑ ফলে ভারতের সেভেন সিস্টারখ্যাত রাজ্যগুলোতে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। আগে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে বিভিন্ন নামে উগ্রপন্থীর দ্বারা অস্থিরতা বিরাজ করত। এখন সেই পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনেকটাই মুক্ত। এই ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্টতই দৃশ্যমান। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ, ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছে। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে ঐতিহাসিক সম্পর্ক। ভারত আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধে সবচেয়ে বড় সাহায্যকারী দেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের সঙ্গে পরম বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলার নীতি গ্রহণ করেছেন। ভারতও তার সহযোগিতার হাত গুটিয়ে রাখেনি। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা পেয়েছে। ক্রমাগত সম্পর্ক আরও দৃঢ় ও নিবিড় হচ্ছে। সে কারণেই ভারতের জঙ্গী তৎপরতার বিষয়ে বাংলাদেশ তার সমর্থন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বার্তায় সে বিষয়টিই উঠে এসেছে। প্রতিবেশী দেশকে জঙ্গী হামলার শঙ্কায় রেখে নিজ দেশকে জঙ্গীমুক্ত রাখা সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে জঙ্গীমুক্ত বিশ্ব শান্তিপ্রিয় সকল মানুষের প্রত্যাশা। বাংলাদেশ জঙ্গী-সন্ত্রাসবাদমুক্ত বিশ্ব গড়তে যে কোন শুভ পদক্ষেপের পক্ষেÑ এটা আজ প্রমাণিত সত্য?
×