ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতু নির্মাণযজ্ঞ

জাপানী টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ আসছে, বিশাল পাইল বসছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

জাপানী টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ আসছে, বিশাল পাইল  বসছে

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মাওয়া থেকে ফিরে ॥ পদ্মায় পাইল স্থাপনের সর্বশেষ অবস্থা পরিদর্শনে জাপান থেকে টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ দল আসছে। তিন সদস্যের দলটি পাইলের মাটির নিচের ভার্টিক্যাল অবস্থা যথাযথ হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে সেতুতে ব্যবহৃত জাপানী নানা যন্ত্রপাতির সঠিক ব্যবহারের অগ্রগতিতেও ভূমিকা রাখবে। দলটির প্রকল্প এলাকায় আসার বিশেষ প্রয়োজনীতা দেখা দেয়। তবে সাম্প্রতিক নানা চ্যালেঞ্জের কারণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছিল। সুখবর হচ্ছে অবশেষে তারা আসতে রাজি হয়েছে এবং এই মাসের শেষদিকেই বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টনীতে প্রকল্প এলাকায় পৌঁছবে। এদিকে পদ্মায় হরদম পাইল স্থাপন হচ্ছে। এরই মধ্যে ৩৮ নম্বর পিলারে আরও একটি পাইল স্থাপন হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত ৩৪টি পাইল স্থাপন হলো। এছাড়াও পাইল স্থাপনে হরদম কাজ চলছে। বিশেষ করে জাজিরা প্রান্তের ৩৪ থেকে ৪১ পর্যন্ত ৮টি পিলার জুড়ে পদ্মায় এখন বেশি কাজ হচ্ছে। এই ৮টি পিলারে প্রথম ৩টি করে বটম পাইল স্থাপন করা হয়েছিল। এখন এগুলোতে আরও ৩টি করে পাইল স্থাপন এবং টপ সেকশনের কাজ নিয়ে এই ব্যস্ততা। এই পাইলের উপরে সুপার স্ট্রাকচার স্থাপন হবে। আর এই সুপার স্টাকচার নিয়ে ব্যস্ততা চলছে মাওয়া প্রান্তের কুমরিভোগ কনস্ট্রাক্শন ইয়ার্ডে। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের শুক্রবার সন্ধ্যায় জানান, দুটি স্প্যানে সমপরিমাণ সুপার স্ট্রাকচার ফিটিংয়ের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত একটি স্প্যানের ২০ শতাংশ ফিটিং হয়েছে। ওয়ার্কশপটির ভেতরে আধুনিক ভারি যন্ত্রপাতি দিয়ে বিশাল এই কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হচ্ছে। বর্ষার পানি নেমে যাচ্ছে দ্রুত। তাই সেতুর কাজে বিশেষ গতি পেয়েছে। কাওড়াকান্দি অংশে নদী শাসনে ড্রেজিং চলছে। এই ড্রেজিংয়ের বালু ফেলা হচ্ছে ব্লক ১২ অর্থাৎ চরজানাজাত অংশে। এছাড়া নদী শাসনের কাজের সুবিধার্থে মাঝিকান্দি থেকে কাওড়াকান্দি পর্যন্ত নির্মাণ করা ৮ কিলোমিটার নদীতীরের রাস্তাটি এখন ব্যবহার করা হচ্ছে। চরজানাজাতের ড্রেজিংয়ের ফেলা মাটিতেই জীববৈচিত্র্য জাদুঘর করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এদিকে মাওয়া প্রান্তে তিন সাইজের তৈরি করে রাখা লাখ লাখ ব্লক এখন স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিকদার সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন। বর্ষার পানি হ্রাস পাওয়ায় আগামী অক্টোবরে মাওয়া প্রান্তে নদী শাসনের কাজ পুরোদমে চলবে। বর্ষায় মাওয়ায় তীব্র স্রোত থাকার কারণে নদী শাসনের কাজ এক রকম বন্ধ ছিল। এখন শুষ্ক মৌসুমকে পুরোপুরি কাজে লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নদী শাসনে মাওয়া অংশের কাজ এই মৌসুমে সম্পন্ন করার টার্গে রয়েছে। সদ্য বিদায়ী বর্ষা প্রকল্প এলাকায় নদী ভাঙ্গন হয়নি। তাই তারা স্বস্তিতে রয়েছে। এছাড়া ৬ ও ৭ নম্বর পিলারে ৩টি করে পাইল স্থাপন রয়েছে। সেখানে এবার নদীতীরে ঘূণিস্রোত তেমন সুবিধা করতে পারেনি। তাই তলদেশেও গর্ত হয়নি। আগের বছর এখানে ঘূর্ণিস্রোত দুটি বড় গর্তের সৃষ্টি করেছিল। এদিকে সংযোগ সেতুর (ভায়াডাক্ট) পাইল স্থাপনের কাজও পুরোদমে চলছে। এ পর্যন্ত ৪টি পাইল হয়েছে। ট্রানজিশন কেয়ারের কাজেও অগ্রগতি রয়েছে। জাজিরা প্রান্তে ট্রানজিশন কেয়ারের ১৬টি পাইল স্থাপন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে পদ্মা সেতুর কাজ চলছে নির্বিঘেœ।
×