ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে থাকবে দুই হাজার স্বেচ্ছাসেবক

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সম্মেলনের ভেন্যু ঐতিহাসিক সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশপথগুলো ও সম্মেলন স্থলকে আগামী ১ অক্টোবর থেকে সার্বক্ষণিক আইপি-সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে। ওইদিন থেকেই সেখানে স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা উপ-কমিটির ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি দুই সহস্রাধিক দলীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার কর্মকা- পরিচালিত হবে। এছাড়া সম্মেলন স্থলসহ সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানকে ওয়াইফাই জোন ও ব্রডব্যান্ডের আওতায় আনা হবে। শুক্রবার সকালে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির ২০তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা উপ-কমিটির সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর ২০তম জাতীয় সম্মেলনের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে কঠোর দৃষ্টি রাখা হবে। সব ধরনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে। আর সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন সফল হয়েছে। দেশের স্বাধীকার থেকে শুরু করে স্বাধীনতা এবং দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ অর্জন, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই অর্জিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য শৃঙ্খলা উপ-কমিটির দায়িত্ব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এ কমিটি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলেই দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্মেলন সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, এ সম্মেলনে শুধু দেশ নয়, বিদেশ থেকেও অনেক অতিথি আসবেন। আর সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে তাঁরাও জানতে পারবেন আওয়ামী লীগ একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন। আর সম্মেলনকে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক উপকমিটির নেতাকর্মীদের অতীতের মতো কাজ করতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সফল নেতৃত্বের জন্য সদ্যসমাপ্ত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানকালে দুটি পুরস্কারসহ মোট ২৯টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন। তিনি শুধু দেশের নন, সারা বিশ্বের নন্দিত নেত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সকল অর্জন শুধু দেশে নয়, বিদেশেও ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আন্তরিক চেষ্টায় বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সভাপতির বক্তব্যে স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা উপ-কমিটির সদস্য সচিব আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি বলেন, দেশ-বিদেশের আমন্ত্রিত অতিথি, সাংবাদিক, বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কাউন্সিলর ও ডেলিগেট হিসেবে যাঁরা আসবেন, তাঁদের ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশপথে স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা উপ-কমিটির সদস্যরা সম্মেলন স্থলে আসার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করবেন। তিনি সম্মেলনকে সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে সফল করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন এবং সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রতি সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি দৃঢ়তার সঙ্গে নাকচ করেছেন। আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সঙ্গে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনই সম্পর্ক নেই। নির্বাচন কমিশন গঠন রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। এটাকে নিয়ে বিতর্কের ঝড় তোলার কোন অবকাশ নেই। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিতর্কের উর্ধে রাখা উচিত। উপ-কমিটির সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আসলামুল হক আসলাম এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূরুল আমিন রুহুল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না, সাবেক সভাপতি বাহাদুর ব্যাপারী, ইকবাল হোসেন অপু প্রমুখ। নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার একমাত্র রাষ্ট্রপতির- ড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন তোলা কিংবা বিতর্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা বিএনপির তাদের পুরনো অভ্যাস। তারা উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলে, যুদ্ধাপরাধীদের রায় নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায়। এখন শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন নিয়ে। বিএনপির নেতৃবৃন্দকে বলব- দয়া করে এসব অভ্যাস পরিহার করে বাংলাদেশের সংবিধান পড়ুন। সংবিধানেই সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে, নির্বাচন কমিশন গঠন করার এখতিয়ার কেবল রাষ্ট্রপতির। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। পূর্বের ন্যায় এবারও আলাপ-আলোচনা করেই রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের সম্পূর্ণ এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। সংবিধান অনুযায়ী তিনিই প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ দেন। রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগের কেউ নন, এমনকি সরকারেরও কেউ নন। তাই বিএনপিকে বলব নির্বাচন কমিশন গঠন করা নিয়ে আপনারা সরকারের কাছে আলোচনার যে দাবি জানাচ্ছেন তা অমূলক। সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বিএনপি সংবাদ সম্মেলনে বলেছে তারা নাকি দেশের ভেতরে অস্থিরতা পছন্দ করে না, অস্থিরতায় বিশ্বাসী নয়। তাদের এ বক্তব্য ‘ভূতের মুখে রাম নামের’ মতো। রাজনীতির নামে বিএনপি পেট্রোলবোমার যে নৃশংস রাজনীতি এ দেশে করেছে তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। তাদের নৃশংসতা থেকে নিরীহ পশুপাখি এমনকি গাছপালাও রেহাই পায়নি। যারা (বিএনপি) সব সময়ই দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায় তাদের মুখে এমন বক্তব্য আসলে জাতির সঙ্গে মশকরা ছাড়া আর কিছুই নয়। বিএনপিকে বিষধর সাপের সঙ্গে তুলনা করে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, সাপ যেমন বিপদে পড়লে গর্তে লুকিয়ে থাকে তেমনি বিএনপিও এখন রাজনীতির নামে নানা অপকর্ম করে চাপের মুখে পড়ে গর্তে মুখ লুকিয়ে রেখেছে। সুযোগ পেলেই সাপ যেমন ফণা তোলে। বিএনপিও তেমন সুযোগের অপেক্ষায় আছে। তাই এ বিষধর সাপ সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মীর মোঃ আবু হানিফের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জিন্নাত আলী খান জিন্নাহ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ।
×