ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

লেনদেন করেন শিক্ষক নজরুল

পাকিস্তান থেকে টাকা আসে কলাপাড়ার ব্যাংকে

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

পাকিস্তান থেকে টাকা আসে কলাপাড়ার ব্যাংকে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২২ সেপ্টেম্বর ॥ জঙ্গী তৎপরতার কাজে পাকিস্তান থেকে কলাপাড়ায় ব্যক্তি এ্যাকাউন্টে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা আসার খবর পত্রিকায় প্রকাশে সচেতন মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঢাকায় র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত জঙ্গীদের তৎপরতার খবরে তদন্তাধীন তালিকায় তিন শিক্ষকের নাম উঠে এসেছে। যার একজন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের। তার পাকিস্তানের ইসলামাবাদে হাবিব ব্যাংকে এ্যাকাউন্ট রয়েছে উল্লেখ করা হয়েছে এবং কলাপাড়ায় শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক শাখায়ও তার একটি এ্যাকাউন্ট রয়েছে। ওই এ্যাকাউন্টে পাকিস্তান থেকে টাকাও আসে। ওই শিক্ষক এই এ্যাকাউন্টে লেনদেন করেন। খবরের বিষয়টি নিয়ে কলাপাড়ায় সচেতন মহলে তোলপাড় চলছে। তবে স্থানীয় শাখা থেকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্টভাবে কোন তথ্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন। একাধিক সূূত্রে জানা গেছে, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নজরুল ইসলামের এ্যাকাউন্ট রয়েছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের কলাপাড়ার (খেপুপাড়া) শাখায়। তার বাড়ি কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী সংসদীয় আসনের মৌডুবিতে বলে জানা গেছে। এর বাইরে কোন তথ্য জানা যায়নি। উল্লেখ্য, কলাপাড়া এখন দেশের আলোচিত এবং সমৃদ্ধ উপজেলা। এখানে দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে, নৌঘাটি নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে, পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের দ্বিতীয় দফার কাজ শুরু হচ্ছে। দ্বিতীয় সাব মেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন চালু হচ্ছে। আধুনিক পর্যটনে রূপান্তরের মহাপরিকল্পনা রয়েছে। রয়েছে রাডার স্টেশন। নির্মিত হচ্ছে কয়লা টার্মিনাল ঘাট। পায়রা বন্দর পর্যন্ত ফোর লেন সড়ক রেললাইনসহ নির্মাণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কুয়াকাটা উন্নীত হচ্ছে আধুনিক পর্যটনকেন্দ্রে। যার কারণে কক্সবাজারের মতো এই এলাকা জঙ্গীদের তথা জামায়াতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সুদূূর পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে এখানে অবস্থান গেড়েছে ৭৬ রোহিঙ্গা পরিবার। সর্বশেষ গত ১৪ মে পুলিশ কুয়াকাটার আজিমপুরে এক বাড়িতে সভা চলাকালে জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার করে বিভিন্ন কর্মপন্থার একাধিক খাতাপত্র। চাঁদা আদায়ের রশিদ। চাঁদাদাতাদের নাম-ঠিকানা সংবলিত রশিদ। ল্যাপটপ। কুয়াকাটায় ২০১৬ সালের সাংগঠনিক কর্মপরিকল্পনার খাতাপত্র। নগদ টাকা। ল্যাপটপ এবং একাধিক মোবাইল সেট। এ ঘটনায় পাঁচ নারীকর্মীসহ ১২ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় জঙ্গী অর্থায়ন, রাষ্ট্রীয় সম্পতির ক্ষতিসাধনের প্রচেষ্টাসহ ওই কাজে অর্থায়ন এবং নিষিদ্ধ সংগঠন সমর্থন, নাশকতার ষড়যন্ত্রসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এনিয়ে কলাপাড়া উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় একাধিকবার প্রশ্নবিদ্ধ আলোচনা হয়েছে। এছাড়া ২০০৪ সাল থেকে কুয়াকাটা ও কলাপাড়ার রাজনৈতিক নেতাকর্মী, বিচারক, ব্যাংক কর্মকর্তাদের একাধিক হুমকি সংবলিত চিঠি দেয়া হয়েছে। কুয়াকাটা পৌর যুবলীগের সভাপতি কাউন্সিলর সাগর মোল্লা, তোফায়েল আহমেদ তপু কাউন্সিলর ও সাবেক কাউন্সিলর মনির শরীফকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। বাড়িতে পাঠানো হয় কাফনের কাপড়। এসব ঘটনায় একাধিক জিডি করা হয়েছে। সম্প্রতি কল্যাণপুরে পুলিশী অভিযানে নিহত জঙ্গী আবু হাকিম নাঈমের কুয়াকাটার ঠিকানায় এনআইডি করার ঘটনায় নিশ্চিত হওয়া গেছে নাঈমের এই এলাকায় বছরের পর বছর আনাগোনাসহ অবস্থান ছিল। এর সঙ্গে স্থানীয় জঙ্গীগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই উচ্চতর তদন্ত করে কারা এসব কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত। তাদের মিশন কী। এসব দ্রুত উদঘাটন করার দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদিউর রহমান বন্টিন। বিষয়টি এখন কলাপাড়ার সচেতন মহলে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। কলাপাড়া থানার ওসি জিএম শাহনেওয়াজ জানান, বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তদন্ত করা হচ্ছে।
×