ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মহিলা সমিতিতে কাল বটতলার ‘দ্য ট্রায়াল অব মাল্লাম ইলিয়া’

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মহিলা সমিতিতে কাল বটতলার ‘দ্য ট্রায়াল অব মাল্লাম ইলিয়া’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বেইলী রোডের নাটক সরণির মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে প্রথমবারের মতো মঞ্চায়ন হতে যাচ্ছে বটতলার পঞ্চম প্রযোজনা নাটক ‘দ্য ট্রায়াল অব মাল্লাম ইলিয়া’। দল সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে এ পর্যন্ত নাটকটির ১৮ প্রদর্শনী হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় নাটকের ১৯তম প্রদর্শনী হবে। ‘দ্য ট্রায়াল অব মাল্লাম ইলিয়া’ নাটকটি রচনায় মুহাম্মদ বেন আবদাল্লা, অনুবাদ করেছেন সৌম্য সরকার। নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ আলী হায়দার। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন পংকজ মজুমদার, তৌফিক হাসান ভূঁইয়া, কাজী রোকসানা রুমা, সামিনা লুৎফা নিত্রা, শেউতি শাহগুফতা, মিজানুর রহমান, আব্দুল কাদের, ইমরান খান মুন্না, হুমায়রা আক্তার, ইভান রিয়াজ, বাকিরুল ইসলাম, আব্দুর রহিম, নাফিজ বিন্দু। ‘দ্য ট্রায়াল অব মাল্লাম ইলিয়া’ নাটকের কাহিনী শুরু অন্ধকারে- একটি পরিকল্পিত বিপ্লবের মধ্য দিয়ে। নাটকের গল্পে দেখা যায় মালওয়াল নামক একজন যুবকের নেতৃত্বে ক্ষমতার অন্যতম গ্রহ মাল্লাম ইলিয়ার বাড়িতে হানা দেয় নববিপ্লবীরা। বিনা রক্তপাতে এ বিপ্লব ঘটানো হবে এমন স্পষ্ট নির্দেশ থাকলেও জানা যায় একজন নারী খুন হয়েছেন- হালিমা, ইলিয়ার স্ত্রী। বিপ্লবীরা মাল্লামকে নিয়ে একটি গোপন স্থানে চলে যায়। মাল্লামকে একটি ট্রায়ালে দঁঁাঁড় করায় মালওয়ালরা। মাল্লাম মুহম্মদ ইলিয়া শুরু করে তার বয়ান। শুরু হয় নাটকের মধ্যে নাটকÑ কয়েক স্তরের নাটক। দর্শক চলে যান প্রায় ত্রিশ বছর পেছনে যখন ইলিয়া ছিল যুবক। ইলিয়ার দীক্ষা ছিল প্রধানত ধর্মীয়। তবে ধর্মের ও সততার বোধ তাকে ন্যায়ের কথা বলতে শেখায়Ñ জনতাকে সে বলতে শুরু করে বর্তমান ‘দুঃশাসনের’ কথা। রাষ্ট্রনায়ক কামরানের শ্যেন দৃষ্টিতে পড়তে হয় তাকে। অন্যদিকে, গুরু আব্বাসের কন্যা রূপসী হালিমা জড়িয়ে পড়ে কামরানের সঙ্গে সম্পর্কে; ফল- হালিমা হয়ে পড়ে অন্তঃসত্ত্বা। কামরানকে হত্যার চক্রান্তে লিপ্ত থাকার অভিযোগে আরও নেতাদের সঙ্গে বন্দী হয় ইলিয়া। তার বিচার নিয়ে শুরু হয় প্রহসন। হত্যাচক্রান্তে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করিয়ে নেয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে নাটক সাজিয়ে হালিমার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার জন্য দায়ী করা হয় ইলিয়াকে। তাকে প্রদান করা হয় মৃত্যুদ-। এভাবেই মৃতদের সাক্ষ্য ও অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বা কখনো মালওয়ালের হস্তক্ষেপে বর্তমানে ফিরে এসে এগোয় নাটক। কামরানের সাময়িক অনুপস্থিতিতে উল্টে যায় ক্ষমতার কক্ষপথ। ইলিয়া এবং অন্যরা যারা বন্দী ছিল, হয়ে ওঠে রাষ্ট্রের কা-ারি আর কামরানের সমর্থকরা হয় বন্দী। রাজনীতির খেলা কিন্তু চলতে থাকেÑ ক্ষমতার গণেশ উল্টে আবার নতুন গণেশদের অভ্যুত্থান হতে থাকে। জনতার ভাগ্যের পরিবর্তন কখনই হয় না। তবে ইলিয়া ক্ষমতার কাছাকাছি থেকে যায় প্রত্যেকবার। এর মধ্যে জানা যায় শ্বশুরের রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে কামরানের। জনগণের আবেগের নতুন মাত্রা প্রকাশ পায় এবার; কামরানের মৃতদেহকে তারা নিজেদের বলে দাবি করে। জনতার এ দাবি জনরোষে রূপ নিতে পারে ভেবে ইলিয়া, সদলবলে সাক্ষাতপ্রার্থী কামরানের স্ত্রী সানিয়ার দরবারেÑ উদ্দেশ কামরানের মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা। উদ্ধত ও কুশলি সানিয়া রাজি হয় তবে শর্ত আবার সেই স্বীকারোক্তি! ইলিয়া এবং হালিমাকে আবার বলতে হবে, যে সন্তান হালিমার গর্ভে হয়েছিল, সে পুত্রসন্তান মাল্লাম ইলিয়ার ঔরসজাত! নাটক বর্ণনার এ পর্যায়ে ভয়ানক উত্তেজিত হয়ে ওঠে মালওয়াল। মালওয়ালকে দেখে মনে হয় সেই ‘স্বীকারোক্তি’ নাটকের সঙ্গেই যেন জড়িয়ে আছে তার সব। আজ একটি এসপার ওসপার করা চাইÑ দৃশ্যত মনে হয় রাজনৈতিক প্রয়োজনে। নাকি আত্মপরিচয়ের খোঁজে উন্মত্ত মালওয়াল আজ। কী উত্তর পায় সে?
×