ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

৫০ কোটি টাকা নিয়ে এনজিও মালিক উধাও

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

৫০ কোটি টাকা নিয়ে এনজিও মালিক উধাও

নিজস্ব সংবাদদাতা, সান্তাহার, ২১ সেপ্টেম্বর ॥ পাওনাদারদের হামলা, মারপিট, ভাংচুর ও তোপের মুখে সপরিবারে আত্মগোপন করেছেন বগুড়ার সান্তাহারের ‘আমরা প্রত্যেকে কাজ শিখি’(আপ্রকাশি) নামক ক্ষুদ্রঋণ প্রদান ও আমানত সংগ্রহকারী সংস্থার মালিক ও নির্বাহী পরিচালক এসএস জুয়েল। এ অবস্থায় রবিবার ওই সংস্থার সহযোগী প্রতিষ্ঠান স্টার হোটেলের তালা ভেঙ্গে দখলে নিয়েছে শতাধিক নারী পাওনাদার। তারা চার দিন ধরে খেয়ে না খেয়ে অবস্থান করছে ওই হোটেলের ভিতর। পাওনা টাকার জন্য ইতোমধ্যে এসএম জুয়েলের সান্তাহার ও পাশের নওগাঁ এলাকার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান ও জায়গা জমি দখল করে নিয়েছেন প্রভাবশালী পাওনাদার। অবশিষ্ট দেড় হাজার নারী-পুরুষ মুনাফা বা মূল টাকা না পাওয়ায় চরম হতাশায় দিনাতিপাত করছে। কারও কারও দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে। জানা গেছে, ২০০৩ সালে বগুড়ার সান্তাহার শহরের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটে এসএম জুয়েল আপ্রকাশি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটভ সোসাইটি নামের ঋণদান এবং আমানত গ্রহণ ও মুনাফা প্রদান কার্যালয় খোলে। প্রতি লাখ টাকা জমা রাখার বিনিময়ে মাসে গ্রাহকদের দুই হাজার টাকা করে মুনাফা প্রদান করে সংস্থাটি। এতে করে এলাকার মানুষ বেশি মুনাফার আশায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে। কয়েক বছরে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় দুই হাজারে। মোট টাকার পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা। এক পর্যায়ে জুলাই মাস থেকে গ্রাহকের টাকা ফেরৎ দেয়ার কথা বলে কার্যালয়ে নোটিস টাঙিয়ে দেন। কিন্তু জুলাই মাসেও টাকা ফেরৎ না দিলে কয়েকশ বিক্ষুব্ধ গ্রাহক সান্তাহার শহরের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটে অবস্থিত সংস্থার প্রধান কার্যালয় ও সংস্থার সহযোগী প্রতিষ্ঠান একই এলাকায় অবস্থিত হোটেল স্টারে কয়েক দফা হামলা, ভাংচুর ও তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করে। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। ঈদ-উল-আযহার এক সপ্তাহ আগে আড়াই শ’ ক্ষুদ্র পাওনাদারের প্রত্যেককে মাত্র এক হাজার টাকা করে দেয়া শুরু করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বড় পাওনাদারদের মধ্যে বেশ কিছু নারী-পুরুষ। তারা ফের আপ্রকাশি সংস্থার কার্যালয়, হোটেল স্টার ও জুয়েলের বাসায় হামলা ও ভাংচুর চালায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঈদের আগের দিন রাতে সপরিবারে আত্মগোপন করে জুয়েল। এ ব্যাপারে আপ্রকাশি সংস্থার মালিক ও নির্বাহী পরিচালক এসএস জুয়েলের বড় বোন রেবেকা সুলতানা বানু সাংবাদিকদের বলেন, আমার ভাই আমানতের টাকা আত্মসাত করেনি। আত্মসাতের ইচ্ছে থাকলে টাকা দেয়া শুরু করতেন না। কিন্তু যেভাবে হামলা, ভাংচুর, মারপিট করা হচ্ছে তাতে আমাদের কোন নিরাপত্তা নেই।
×