ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সঞ্জীব শীল

ভার্চুয়াল ঘটক

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ভার্চুয়াল ঘটক

বর্তমান যুগে ঘটক ছাড়াই হুটহাট বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। আগেরকার দিনে বিবাহযোগ্য ছেলে কিংবা মেয়ে যে বাড়িতে থাকত সে বাড়িতে একটা পরিচিত মুখ যাতায়াত করতে থাকত, যার পরনে থাকত ঢিলেঢালা পোশাক, হাতে লম্বা কালো ছাতা এবং পায়ে চপলাকৃতির জুতা। ছোট একটি ব্যাগে বিবাহযোগ্য অসংখ্য ছেলেমেয়ের ফটো থাকত। অভিভাবকরা তার সাহায্যে ছেলে কিংবা মেয়েকে বিয়ে দিত। তার মাধ্যমেই আগেরকার দিনের বিবাহযোগ্য ছেলেমেয়েদের মিলন ঘটত। সে আর কেউ নয়, সে-ই ঘটক। বর্তমানে ঘটক নামের সম্পর্ক তৈরিকারী ব্যক্তিরা ভার্চুয়াল ঘটকের ভিড়ে হারিয়ে গেছে। আজকাল হঠাৎ করেই শোনা যায়- অমুকের ছেলের সঙ্গে তমুকের মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু কারোর ঘটকালির প্রয়োজন পড়েনি। হ্যাঁ, বর্তমানে মোবাইল, ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন একটি ছেলে কিংবা মেয়ে তার পছন্দের মানুষটিকে কোন ঘটক ছাড়া নিজেরাই সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারে। এছাড়াও ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট আছে, যেগুলোর মাধ্যমে সহজেই পাত্র-পাত্রীর সন্ধান পাওয়া যায়। বিবাহবন্ধনে সংবাদপত্রও অনুঘটক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। প্রতি সপ্তাহেই শত শত পাত্র-পাত্রীর খোঁজখবর পাওয়া যায় পত্রিকায়। ইন্টারনেট, ফেসবুক, কিংবা মোবাইল- এ ভার্চুয়াল পদ্ধতিগুলো আগেরকার যুগের ঘটকের তুলনায় সহজেই বন্ধন তৈরি করে দেয়। ফলে ভার্চুয়াল জগতের স্মার্টদের কাছে ভার্চুয়াল ঘটকই প্রাধান্য পায়। প্রায় প্রতিনিয়তই শোনা যায় ‘ফেসবুকে পরিচয় অতঃপর বিয়ে’ কিংবা লোকমুখে শোনা যায়- ‘অমুক ছেলেটি ইন্টারনেটে পাত্রীর খোঁজ পেয়ে দেখেশুনে বিয়ে করে নিয়েছে’। এছাড়াও বর্তমানে ঘটক কিংবা ভার্চুয়াল ঘটক ছাড়াও বিবাহবন্ধন হয়ে থাকে। যেমন ধরুন, কোন একটি ছেলে ও একটি মেয়ে দু’জন একসঙ্গে পড়াশোনা করে কিংবা চাকরি করে। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ভালবাসার সৃষ্টি হয়। ওই ভালবাসার পথ ধরেই তারা বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। এক্ষেত্রে নিজেরাই নিজেদের ঘটক হিসেবে প্রমাণ করে। সত্য বলতে, আজকাল ঘটকের দিন বোধ হয় শেষ হয়ে গেছে। ভার্চুয়ালিটির কাছে ঢিলেঢালা জামা পরে ছাতা হাতে হাঁটা সে ঘটকরা পরাজিত। গৌরনদী, বরিশাল থেকে
×