স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রকাশিত হলো নারী গার্মেন্টসকর্মীদের জীবনের ঝুঁকিসংক্রান্ত গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ‘ভালনারেবল এমপাওয়ারমেন্ট : ক্যাপাবিলিটিস এ্যান্ড ভালনারেবিলিটিস অব ফিমেল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ইন বাংলাদেশ’। মঙ্গলবার বিকেলে সুফিয়া কামাল ভবনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আয়োজনে মুনিরা বেগম মিলনায়তনে বইটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানমের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশিষ্ট গবেষক ড. মোস্তফা কামাল মুজেরী, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ। গবেষক হিসেবে বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. জাহিদ উল আরেফীন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. অতনু রব্বানী এবং একই বিশ^বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা। বইটি মূলত একটি গবেষণা প্রকাশনা। এখানে নারী গার্মেন্টস শ্রমিকদের জীবনের নাজুক ক্ষমতায়ন ও ঝুঁকির বিষয়গুলো উঠে এসেছে। বক্তারা বলেন, নারী গার্মেন্টস শ্রমিকদের নাজুক ক্ষমতায়নের মূলত তিনটি দিক এ গবেষণায় উঠে এসেছে। যে ঝুঁকিগুলোর কথা বলা হচ্ছে তার মধ্যে ব্যক্তিগত, কর্মগত এবং কাঠামোগত বিভাজন রয়েছে। গবেষণায় দেখনো হয়েছে, ৪১ শতাংশ নারী গার্মেন্টস শ্রমিক এখনও ৫ হাজার ৩০০ টাকার নিচে পারিশ্রমিক পায়, ৯১ শতাংশ নারী তার ঘর শেয়ার করে। অনেক নারী শ্রমিক সুষম খাবার গ্রহণ করার সুযোগ পায় না।
অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, নারী গার্মেন্টস শ্রমিকদের ব্যতিক্রমধর্মী ক্ষমতায়ন হলেও তাদের আমার বেশ প্রগতিশীল মনে হয়। বিশ্বের কোথাও সকাল হলে এভাবে হাজারো নারী শ্রমিককে কাজ করতে ঘরের বাইরে যেতে দেখা যায় না। এ গবেষণাতেই উঠে এসছে, অনেক ঝুঁকি থাকলেও তাদের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে ঝুঁকির কারণে বড় মাপের উন্নতি হয়ত হয়নি।
শিল্পকলার নাট্যশালায় তিন নাটকের মঞ্চায়ন ॥ ঈদের ছুটি শেষে আবার প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে শিল্পকলা একাডেমি। জাতীয় নাট্যশালার তিন হলে প্রতিদিনই থাকছে নাটকের প্রদর্শনী। সেই স্রোতধারায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও মঞ্চস্থ হয় তিন নাটক। নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় নান্দনিক নাট্য সম্প্রদায়ের নাটক ‘নৃপতি’। এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় ধ্রুপদী এ্যাক্টিং স্পেসের প্রযোজনা ‘নভেরা’। স্টুডিও থিয়েটার হলে প্রদর্শিত হয় পদাতিক নাট্য সংসদের নাটক ‘গহনযাত্রা’।
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুুমায়ূন আহমেদ রচিত প্রথম মঞ্চনাটক নৃপতি। নান্দনিক নাট্য সম্প্রদায়ের এ অষ্টম প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন বদরুদ্দোজ্জা।
হুমায়ূন আহমেদ নাটকটিতে স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, শাসকদের একনায়কতন্ত্র ও খেয়ালিপনার বিরুদ্ধে সাহিত্যরসের আশ্রয়ে ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করেছেন। নাটকটি নব্বইয়ের দশকে নান্দনিক নাট্য সম্প্রদায় প্রথম মঞ্চে আনে। মাঝে বেশ কয়েক বছর নাটকটি মঞ্চে দেখা যায়নি। দীর্ঘ বিরতির পর সম্প্রতি আবার নতুন করে মঞ্চস্থ হচ্ছে নাটকটি।
প্রযোজনাটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন হাসানুজ্জামান। এছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেনÑ নিলুফার ওয়াহিদ, সোহেল রানা, শাহ আলম, অভীক মজুমদার, রনি, মারুফ, মাহিন, শোভা, রাসেল, হাবিবুল্লাহ, মেরী প্রমুখ।
প্রায় ৪২ বছর লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা প্যারিসে বসবাসকারী বাংলাদেশের প্রথম নারী ভাস্কর প্রয়াত নভেরা আহমেদের জীবনী নিয়ে নির্মিত নাটক নভেরা। হাসনাত আবদুল হাইয়ের লেখা ‘নভেরা’ ও বেঙ্গল প্রকাশনীর ‘নভেরা আহমেদ’ বইটিসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রতিবেদন, নিবন্ধ, পরিচিতজনদের সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে ‘নভেরা’ নাটকটি রচনা করেছেন সামিউন জাহান দোলা। একই সঙ্গে নাটকে নভেরার ভূমিকায় তিনি একক অভিনয় করেছেন। নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন সাজ্জাদ রাজীব।
নাটকের পটভূমি ১৯৪৫ সাল থেকে শুরু করে নভেরা আহমেদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সব ঘটনা। ভাস্কর্যকে ভালবেসে বিদেশে পড়তে যাওয়া, পড়া শেষে দেশে আসা, প্রদর্শনী, কাজের প্রতি ভাল লাগা, আগ্রহ, জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত, ইচ্ছা, স্বপ্ন, ভালবাসাÑ সবকিছু উঠে এসেছে এ নাটকে।
প্যাপিরাস শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনীর সময় বৃদ্ধি ॥ ধানম-ির গ্যালারি টোয়েন্টিওয়ানে চলছে প্যাপিরাস শীর্ষক যৌথ চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। দেশের ১১ শিল্পীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এ প্রদর্শনীর যৌথ আয়োজক গ্যালারি টোয়েন্টিওয়ান ও বিভাব। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রদর্শনীর সময় বাড়ানো হয়েছে।
২০১৫ সালে এ শিল্পীরা মিসর সফর করেন। নীল নদের দেশটির বিভিন্ন স্থানে শিল্পীরা ঘুরেছেন এবং সে দেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন ও সমসাময়িক শিল্পকলা দেখার সুযোগ পেয়েছেন। সে উপলব্ধিকে রূপ দিয়েছেন ক্যানভাসে। পরবর্তীতে সেসব ছবি নিয়ে মিসরের আহমেদ শওকি জাদুঘরে একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। ওই প্রদর্শনীটিই এখন চলছে গ্যালারি টোয়েন্টিওয়ানে। এ প্রদর্শনীর ব্যতিক্রম হচ্ছে প্যাপিরাস কাগজের ওপর আঁকা হয়েছে চিত্রকর্মগুলো। চিত্রে মিসর দেখার অনুভূতি নিয়েও কাজ থাকছে।
প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।