ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের কঠিন সময়ে পাশেই থাকবে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ভারতের কঠিন সময়ে পাশেই থাকবে বাংলাদেশ

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভারত শাসিত কাশ্মীরের সেনাঘাঁটিতে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে কঠিন এই সময়ে দেশটির পাশেই রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে পাঠানো এক বার্তায় এই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এদিকে আগামী নবেম্বরে ঢাকায় আয়োজিত জলবায়ু বিষয়ে দক্ষিণ এশীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য ভারতের প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুরকে বাংলাদেশে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। রবিবার চার অস্ত্র ও গ্রেনেডধারী কাশ্মীরের উরির সামরিক ঘাঁটিতে ঢুকে হামলা চালিয়ে ১৭ ভারতীয় সেনাকে হত্যা করে। ওই হামলায় আহত হন আরও ৩৫ জন। পরে হামলাকারীরাও পাল্টা গুলিতে মারা যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসী এই হামলায় নিহত ও আহত সৈনিকদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান। নরেন্দ্র মোদিকে বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও উগ্রবাদী সহিংসতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির অংশ হিসেবেই বাংলাদেশ এই কঠিন সময়ে ভারতের পাশে থাকবে। ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী হিসেবে এই অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ও সীমানাজুড়ে চলমান সব হুমকি নির্মূলে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। সব ধরনের সন্ত্রাস ও উগ্রবাদী ধ্যান-ধারণা এবং এর সহিংস প্রকাশের নিন্দা জানিয়ে এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে দিল্লীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী সিএনএন-নিউজ ১৮ কে দেয়া সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার্তার উল্লেখ করে ভারতের পাশে থাকার কথা জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ঘটনায় বাংলাদেশের শক্ত অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স রয়েছে। ভারতের জন্য কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশ তাদের পাশে থাকবে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করবে বলেও জানান হাইকমিশনার। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্ব মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে উৎসারিত মন্তব্য করে সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারতীয় সৈনিকের রক্ত যে বন্ধুত্বের ভিত্তি রচনা করেছিল, তা এখনও চলমান। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে একাত্তরের চেতনাই যেন আমাদের ভিত্তি হিসেবে অমলিন থাকে তা আমি চাইব। ওই সময় আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বাধীনতার জন্য লড়েছিলাম। ২০১৪ সালের পর কাশ্মীরের উত্তরাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী হামলাগুলোর মধ্যে রবিবারের হামলাকে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বলা হচ্ছে। ভারতের প্রধান বিচারপতিকে আমন্ত্রণ ॥ আগামী ২৫-২৬ নবেম্বর ঢাকায় আয়োজিত জলবায়ু বিষয়ে দক্ষিণ এশীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য ভারতের প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুরকে বাংলাদেশে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার দিল্লীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী ভারতের প্রধান বিচারপতিকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ঢাকায় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে দক্ষিণ এশীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার পক্ষ থেকে এই সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য ভারতের প্রধান বিচারপতিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী দিল্লীতে ভারতের প্রধান বিচারপতির দফতরে গিয়ে এই আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন।
×