ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জয়কেও পরে সংবর্ধনা দেয়া হবে

২৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে গণসংবর্ধনা দেবে আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

২৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে গণসংবর্ধনা দেবে আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফেরার দিন আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘গণসংবর্ধনা’ দেবে আওয়ামী লীগ। ওইদিন বিকেল চারটায় বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত দীর্ঘ ৮ কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে নেতাকর্মীরা করতালি, সেøাগান আর পুষ্পবৃষ্টিতে প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানাবেন। মঙ্গলবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকম-লীর সভা শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল এ কর্মসূচী ঘোষণা করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া যে রাজনৈতিক কৌশল নিয়েছেন তা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার অংশ নয়। ষড়যন্ত্র করা, কূটচাল করা, জঙ্গীদের লেলিয়ে দেয়া এটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার অংশ নয়। গণঅভ্যর্থনা প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফ বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ ও বঙ্গবন্ধুর খুনীকে ফিরিয়ে আনতে কানাডা সরকারপ্রধানের সঙ্গে সফল আলোচনাসহ এই সফরে অনেক সাফল্যের কারণে প্রধানমন্ত্রীকে গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। এ সংবর্ধনা সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। বিশাল শোভাযাত্রা হবে। এছাড়াও আইসিটি খাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের পুরস্কারপ্রাপ্তি নিয়েও পরবর্তী সময়ে সংবর্ধনার আয়োজন করা হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক। বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, খালেদা জিয়া যে রাজনৈতিক কৌশল নিয়েছেন তা অগণতান্ত্রিক, জনগণের জন্য কল্যাণকর নয়। ‘জঙ্গী নির্মূলের নামে সরকারবিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে’- বিএনপির এমন অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, যাদের হয়রানি করা হচ্ছে, তারা জঙ্গী। দু-চারজন জঙ্গী বিএনপিতে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতেই পারে। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হয়ে গেলে আওয়ামী লীগ, বিএনপি কেউই রেহাই পাবে না। তাই সবাইকে জঙ্গী দমনে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আশা করছি, উনি (খালেদা জিয়া) রাজনৈতিকভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে আসবেন। তিনি বলেন, জঙ্গী যেই হোক, যে দলেই থাকুক আর যেখানেই থাকুক না কেন, বর্তমান সরকার তাদের রেহাই দেবে না। জঙ্গীদের বিষয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না। এ কথা প্রধানমন্ত্রী বার বার বলেছেন। রাজনৈতিক দলের ভিতরেই থাকুক আর বাইরেই থাকুক, জঙ্গীদের কোন রেহাই দেয়া হবে না। বিএনপির মধ্যবর্তী নির্বাচন দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এগুলো সংবিধানের অংশ। পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসিতে (সংসদীয় গণতন্ত্র) প্রাইম মিনিস্টার (প্রধানমন্ত্রী) যে কোন সময় পার্লামেন্ট ডিসলভড (স্থগিত) করার অধিকার রাখেন। এতে রাষ্ট্রপতিরও অনুমতি নেয়ার দরকার নেই। আদালতেরও সমস্যা নেই। প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করে কবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে এবং তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ করবেন পার্লামেন্ট ডিসলভড করার জন্য। এরপর সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ ব্যাপারে আমাদের সংবিধানেই সুস্পষ্ট লেখা আছে। শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকায় আওয়ামী লীগ শূন্যতা অনুভব করছে কিনা একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) বলুন নির্বাচনে অংশ নিতে। তারা নির্বাচনে অংশ নিক। সেখানেই প্রমাণ হবে কার জনপ্রিয়তা আছে কি নেই। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। কানাডায় থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনী নূর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, নূর চৌধুরীকে কীভাবে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা যায় এবং তার রায় কীভাবে কার্যকর করা যায়, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে কানাডার একটি সমস্যা হচ্ছে, যে দেশে মৃত্যুদ- কার্যকর আছে, সেখানে কানাডা আসামিকে ফেরত পাঠায় না। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বাংলাদেশে ওই খুনীকে ফেরত পাঠানোর উপায় বের করার জন্য দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী একসঙ্গে কাজ করবেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফরে আছেন। তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের অর্জনগুলো তিনি তুলে ধরবেন সমগ্র বিশ্ববাসীর সামনে। আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে পাকিস্তানের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আশরাফ বলেন, সমগ্র পাকিস্তানের লোক বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধী ছিল না। তাই কিছু কিছু গণতান্ত্রিক দলকেও আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। এ ব্যাপারে আমরা এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। সম্পাদকম-লীর সভায় অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এ বি তাজুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-বিষয়ক সম্পাদক স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, দফতর সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সুজিত রায় নন্দী, একেএম এনামুল হক শামীম, আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×