ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রোনাল্ডো ছাড়াই রেকর্ড জয় রিয়ালের

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

রোনাল্ডো ছাড়াই রেকর্ড জয় রিয়ালের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সময়ের সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে ছাড়াই স্প্যানিশ লা লিগায় সহজ জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। রবিবার রাতে এ্যাওয়ে ম্যাচে গ্যালাক্টিকোরা ২-০ গোলে পরাজিত করে স্বাগতিক এস্পানিওলকে। রিয়ালের হয়ে গোল করেন কলম্বিয়ান তারকা জেমস রড্রিগুয়েজ ও ফরাসী ফরোয়ার্ড করিম বেনজেমা। শুধু রোনাল্ডোই নন, ম্যাচটি খেলেননি আরেক তারকা গ্যারেথ বেল। কিন্তু তাতে রিয়ালের জয়রথ থামেনি। এটি শুরু হওয়া লীগে রিয়ালের টানা চতুর্থ জয়। সবমিলিয়ে লা লিগায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনার টানা ১৬ ম্যাচ জয়ের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন জিনেদিন জিদানের দল। পরশুর অন্য মাচে রিয়াল সোসিয়েদাদকে ২-১ গোলে হারায় ভিয়ারিয়াল, ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে একই ব্যবধানে জয় পায় এ্যাথলেটিক বিলবাও। ওসাসুনা ও সেল্টা ভিগোর মধ্যকার ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। বর্তমানে চার ম্যাচে পূর্ণ ১২ পয়েন্ট পেয়েছে একমাত্র রিয়ালই। ৯ পয়েন্ট করে নিয়ে গোল গড়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে যথাক্রমে বার্সিলোনা ও লাস পালমাস। অসুস্থ রোনাল্ডো ও ইনজুরি আক্রান্ত বেলকে ছাড়া রিয়ালের শুরুটা হয় কিছুটা ধীর গতির। অধিনায়ক সার্জিও রামোস ম্যাচের শুরুর দিকে ভাগ্যক্রমে লালকার্ড পাওয়া থেকে বেঁচে যান। হার্নান পেরেজের শট রামোসের হাতে লাগলে রেফারি আলেজান্দ্রো হার্নান্দেজ শুধু হলুদ কার্ড দিয়ে সতর্ক করেন। এই নিয়ে রিয়ালের সঙ্গে শেষ নয়বারের সাক্ষাতে সবকটিতেই হারের তিক্ত স্বাদ পেল এস্পানিওল। অথচ প্রথমার্ধে দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার লিও ব্যাপটিস্টা। পেপের বাজে ডিফেন্সের সুযোগে বিপদ সীমানার মধ্যে বল পেয়েও গোলরক্ষক কিকো ক্যাসিয়াকে পরাস্ত করতে পারেননি লিও। ম্যাচে ১৩৩ দিন পর প্রথমবার মূল একাদশে সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমাণ করেন রড্রিগুয়েজ। গত সপ্তাহে স্পোর্টিং লিসবনের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে কলম্বিয়ান তারকার শেষ মুহূর্তের গোলে মাদ্রিদের জয় নিশ্চিত হয়েছিল। সেটাই হয়ত কোচ জিনেদিন জিদানের মনে ধরে। রোনাল্ডো ও বেলের অনুপস্থিতিতে দলের আক্রমণের মূল কা-ারি হিসেবে ছিলেন রড্রিগুয়েজ। এই সিদ্ধান্তে কোচকে মোটেই হতাশ হতে হয়নি। দুর্দান্ত খেলা কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড একটি গোলও করেন। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে (৪৭ মিনিট) রিয়ালকে এগিয়ে নেন রড্রিগুয়েজ। টনি ক্রুসের পাস থেকে বল পেয়ে ২৫ গজ দূর থেকে জোরালো শটে বল জালে জড়ান কলম্বিয়ান তারকা। ৭১ মিনিটে আরেকটি গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন বেনজেমা। এই জয় দিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনার একটি রেকর্ডেও ভাগ বসিয়েছে রিয়াল। লা লিগায় একটানা ১৬ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড আগে এককভাবেই ছিল বার্সিলোনার দখলে। ২০১০-১১ মৌসুমে পেপ গার্ডিওলার বার্সিলোনা একটানা জিতেছিল ১৬ ম্যাচ। এস্পানিওলের বিপক্ষে রিয়ালের জয়টাও ১৬তম। এ বছরের মার্চের শুরু থেকে লা লিগায় সব ম্যাচেই জয় পেয়েছে রিয়াল। গত মৌসুমে নিজেদের শেষ ১২ ম্যাচে জয়ের পর এবারের মৌসুমেও প্রথম চার ম্যাচে জয় পেয়েছে জিদানের শিষ্যরা। ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বসিত রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, রড্রিগুয়েজ ও বেনজেমার গোলে জয় নিশ্চিত হওয়ায় আমি খুব খুশি। কিন্তু পুরো দলের পারফর্মেন্সে চোখে পড়ার মতো কিছু ছিল না। দলে প্রতিভা আছে, এটাই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তাদের আরও পরিশ্রম করতে হবে যা তারা আগে করে দেখিয়েছে। জিদান কোচ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পর থেকেই রড্রিগুয়েজের অবস্থান ছিল রিয়ালের রিজার্ভ বেঞ্চে। এ কারণে ২০১৪ বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট জয়ী তারকা কোচের আস্থা অর্জনে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সবশেষ কয়েক ম্যাচে সে স্বাক্ষরই রেখেছেন রড্রিগুয়েজ। এ কারণেই জিদানের প্রশংসা কুড়িয়ে নিয়েছেন। আর ফরাসী কিংবদন্তিকে নিজের আদর্শও মানেন বলে জানিয়েছেন। রড্রিগুয়েজ সাংবাদিকদের বলেন, জিদান আমার আদর্শ। রিয়াল মাদ্রিদ আমার স্বপ্ন। আমি আশা করি, এটা আরও অনেক দিন থাকবে। আমার পরিবার আর আমি মাদ্রিদে খুব সুখে আছি। আমি দলে খুব সুখে আছি। সারা জীবন এখানে থেকে যাওয়ার জন্য লড়াই করব আমি। তিনি আরও বলেন, এটা সত্যি নয় যে আমার বাজে সময় গেছে। আমি কথা বলছি না বলে এর মানে এই নয় কারও সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ। আমরা দল হিসেবে ঐক্যবদ্ধ। এখানে শুরুর দিন থেকেই আমাকে সবাই সাহায্য করছে। আমরা আরও জয় আর রেকর্ড গড়তে চাই।
×