ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্যাটসম্যানদের নিয়ে সামারাবীরার চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ব্যাটসম্যানদের নিয়ে সামারাবীরার চ্যালেঞ্জ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঘরোয়া ক্রিকেট আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মধ্যে বিস্তর ফারাক। সাফল্যের জন্য এবং ছন্দপতন থেকে রক্ষার জন্য ধারাবাহিকভাবে খেলা অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু সর্বশেষ মার্চে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে। টি২০ বিশ্বকাপের পর শুধুমাত্র ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে (ডিপিএল) ক্রিকেটাররা প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। সেটি ঘরোয়া আসর। ৬ মাস পেরিয়ে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। প্রতিপক্ষ সহযোগী সদস্য দেশ আফগানিস্তান। কিন্তু দীর্ঘদিন খেলার মধ্যে না থাকায় যেকোন দলের বিরুদ্ধেই এখন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হবে। এমনটাই মনে করেন ব্যাটিং কোচ থিলন সামারাবীরা। শ্রীলঙ্কার সাবেক এ ক্রিকেটার নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হিসেবেই বিষয়টা উপলব্ধি করছেন। দীর্ঘ বিরতির কারণে ব্যাটসম্যানরা যে জড়তার মধ্যে পড়েছেন সেটা কাটিয়ে উঠতে কৌশলগত উন্নতি জরুরী বলে মনে করেন সাবেক এ লঙ্কান তারকা। মাত্র তিন বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়েছেন সামারাবীরা। কিন্তু এর মধ্যেই তিনি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন। এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) তাকে আসন্ন আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের জন্য নিয়োগ দিয়েছে দলের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে কাজ করতে। মাত্র ৪৫ দিনের চাকরি। কিন্তু সেসব নিয়ে না ভেবে আন্তর্জাতিক কোন দলের হয়ে কাজ করতে পারছেন সেটাই বেশি রোমাঞ্চিত করছে তাকে। প্রথমদিন তিনি দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে পরিচিতি পর্বটা সেরেছেন। আর পেয়ে গেছেন পুরনো বন্ধু চান্দ্রিকা হাতুরাসিংহেকে। প্রধান কোচ হিসেবে গত দেড় বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে দুর্দান্ত কিছু সাফল্য পাইয়ে দিয়েছেন এ লঙ্কান। শ্রীলঙ্কার হয়েও কাজ করেছিলেন কোচিং ক্যারিয়ারের শুরুতে। তখনই তার সঙ্গে ভাল একটি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে সামারাবীরার। হাতুরাসিংহের সঙ্গে কাজ করতে পারার বিষয়টিও দারুণ আনন্দময় হিসেবেই দেখছেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ সময় বাংলাদেশ দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে এ বিষয়টি চ্যালেঞ্জের মনে করছেন ব্যাটসম্যানদের জন্য। সামারাবীরা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমার প্রথম নজরদারি হবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে। কারণ আমি জানি চার কিংবা পাঁচ মাস ক্রিকেট না খেললে কি সমস্যা হতে পারে। অনুশীলন কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেটের চেয়ে সবসময়ই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভিন্নতর। আমি মনে করি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভ্যস্ত থাকাটা অতীব জরুরী বিষয়। আমি মেধা নিয়ে কোন দুশ্চিন্তা করছি না, এখানে অনেক মেধা আছে।’ বর্তমানে যারা খেলছেন তাদের অনেককেই ভালভাবে চেনেন সামারাবীরা। অনেক ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে মাঠেও মোকাবেলা করেছেন। তবে পুরো দলটার সঙ্গে প্রথম দিন পরিচিত হওয়ার মধ্যে দিয়েই পাড়ি দিয়েছেন। সামারাবীরা গত ১৮ মাসে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অভূতপূর্ব উন্নতির গ্রাফটা দেখে দারুণ সন্তুষ্ট। তিনি মনে করেন হাতুরাসিংহের অধীনে কোচিং স্টাফরা ক্রিকেটারদের যে স্বাধীনতা দিয়েছেন সেটাই এর মূল কারণ। নিজেদের মতো করে খেলতে পারার সুযোগ পেয়েই পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিধর দলগুলোকে গত বছর ঘরোয়া সিরিজে হারিয়ে দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। আবার অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ক্রিকেট বিশ্বকাপেও দুর্দান্ত সাফল্য দেখিয়েছে। এখন ভাল করার জন্য কৌশলগত উন্নতির বিকল্প নেই বলেই মনে করেন সামারাবীরা। কারণ সেই একটাই- দীর্ঘ বিরতি। এ বিষয়ে সামারবীরা বলেন, ‘আমি বেশি ভাবছি মানসিক দৃঢ়তা নিয়ে। কৌশলগত দিক থেকে গত ১৮ মাসে তারা কতটা পরিবর্তন হয়েছে সেটা আমি দেখব। মনোযোগ এবং কৌশল এ দুটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অন্যতম চাবিকাঠি। এ দুটি বিষয়ের দিকে সবসময়ই চান্দ্রিকা (হাতুরাসিংহে) দারুণ গুরুত্ব দেন। আর এটার কারণেই আমি পরবর্তীতে ভিন্ন মাপের এক ক্রিকেটারে পরিণত হয়েছিলাম। এখানে ৪/৫ ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে আগে খেলেছি এবং আশা করছি কাজ করাটা খুবই আনন্দের হবে।’
×