ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বৈরাগী ছিলেন প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলের বাসায়

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বৈরাগী ছিলেন প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলের বাসায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিখোঁজ নন। স্বজ্ঞানে প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলের বাসায় ছিলেন। গত দেড় মাস ধরে সেখানে তিনি ভালই ছিলেন বলে জানিয়েছেন অভিনেতা, নির্মাতা ও নাট্যকার ফখরুল হাসান বৈরাগী। সম্প্রতি গুঞ্জন উঠেছিল তিনি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ। তার কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তার খোঁজ জানতেন না আত্মীয়স্বজন। এই নিয়ে গণমাধ্যমেও অনেক খবর প্রকাশ হয়েছে। সব গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে সোমবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসির কার্যালয়ে এসে সাক্ষাতের পর তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, তিনি স্বজ্ঞানে ছেলের বাসায় অবস্থান নিয়েছিলেন। গণমাধ্যমে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদকে ‘উদ্দেশ্যমূলক’। এমনকি রাজিয়া হাসানকে কথিত স্ত্রী হিসেবে দাবি করে তিনি বলেছেন, রাজিয়া আমার স্ত্রী নয়। তার সঙ্গে লিভ টুগেদারের সম্পর্ক। তার সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় আমি ৭ আগস্ট প্রথম স্ত্রীর ছেলের বাসায় গিয়ে উঠি। সে সবাইকে বিভ্রান্ত করতে আমার নিখোঁজের গুজব ছড়িয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আমি নিজে গিয়ে কলাবাগান থানায় হাজির হয়েছি। অভিনেতা ফখরুল হাসান বৈরাগী বলেন, গত ৭ আগস্ট মোহাম্মদপুরে রাজিয়ার বাসার দারোয়ানকে চাবি দিয়ে এক কাপড়ে বেরিয়ে যাই। উঠি কেরানীগঞ্জের আঁটি বাজারে প্রথম স্ত্রীর ছেলের বাসায়। তিনি বলেন, আমার প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর রাজিয়া হাসানের সাথে থাকতাম। তবে ওই নারীর (রাজিয়া হাসান) সঙ্গে দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকার কথা স্বীকার করে অভিনেতা ফখরুল হাসান বৈরাগী বলেন, আমি নিজের ইচ্ছায়, স্বজ্ঞানে আমার আগের সংসারে চলে এসেছি। রাজিয়া হাসান নামে যে নারী আমার স্ত্রী পরিচয় দিয়ে এই খবর প্রকাশ করেছে সে আমার স্ত্রী নয়। বর্তমানে তার সঙ্গে আমার বনিবনা হচ্ছিল না। আমি ধারণা করছি সে আমার ক্ষতি করতে পারে। এ অভিনেতা বলেন, গত পরশু আমি শুনি অনলাইনে আমার নিখোঁজের খবর দেয়া হয়েছে। তাই মনে করছি এটার প্রতিবাদ জানানো দরকার। যেহেতু এটি পারিবারিক ব্যাপার তাই আমি কাউকে জানানো দরকার মনে করিনি। আত্মীয়-স্বজনকেও সেভাবে জানাইনি। কাল পত্রিকায়ও দেখলাম আমি নিখোঁজ রয়েছি বলে খবর প্রকাশ হচ্ছে। তাই আমি মনে করলাম এটার শেষ হওয়া দরকার। আমি নিখোঁজ নই, পরিবারের সঙ্গে আছি। রাজিয়া হাসান নামে ওই নারীর বিষয়ে ফখরুল ইসলাম বলেন, সে দাবি করেছে সে আমার স্ত্রী। তবে সেরকম কোন রেকর্ড নেই। আমি তার সঙ্গে মোহাম্মদপুরে ছিলাম। আমার সেখানে একটি ছেলেও আছে। আর একটি পালক মেয়ে আছে। কিন্তু মান-অপমান সহ্য করে আমি আর থাকতে পারিনি। এরপর আমি আমার আগের সংসারের ছোট ছেলেকে ফোন দিই। আমি জানাই তাদের সঙ্গে থাকতে চাই। এরপর ছোট ছেলে আমাকে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে নিয়ে যায়। আমার দুই ছেলে কেরানীগঞ্জের আঁটিবাজারে থাকে। তিনি বলেন, বিষয়টি একান্তই ব্যক্তিগত। সম্মানহানি হতে পারে ভেবেই আমি বিয়ষটি কাউকে জানাইনি। কারও সাথে যোগাযোগও করিনি। কেরানীগঞ্জে দুই ছেলে রাশেদুল হাসান ও রকিবুল হাসান এক সাথে থাকে। ওদের বাসায় গিয়ে উঠি। তিনি বলেন, সম্প্রতি গণমাধ্যমে সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছিল আমি নাকি নিখোঁজ। আসলে আমি নিখোঁজ না। কেউ আমাকে অপহরণ করেননি। কিংবা আমি পালিয়ে থাকিনি। স্বজ্ঞানে ছেলের বাসায় গিয়ে উঠেছি। রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন মোহাম্মদীয়া হাউজিং এলাকায় গিয়ে ছেলের মাধ্যমে কেরানীগঞ্জে যান তিনি। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মাসুদুর রহমান জানান, ফখরুল হাসান বৈরাগী আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন, তিনি নিখোঁজ ছিলেন না। স্বজ্ঞানে ছেলের বাসায় অবস্থান নিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি সাহায্য চাইলে আইনগত সহায়তা করা হবে। উল্লেখ্য যে, এর আগে থেকে বাবা নিখোঁজ উল্লেখ করে সন্ধান চেয়ে ফেসবুকে ফখরুল ইসলাম বৈরাগীর কথিত স্ত্রী রাজিয়ার ছেলে সামন্ত হাসান একটি পোস্ট ফেসবুকে শেয়ার করেন। সেখান থেকেই গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এই প্রবীণ অভিনেতার নিখোঁজ সংবাদ। এমনকি বৈরাগী গত দেড়মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানান তার স্ত্রী হিসাবে পরিচয় দানকারী রাজিয়া হাসান নামে এক নারী। বোনদের সঙ্গে সম্পত্তির দ্বন্দ্বের কারণে বৈরাগী নিখোঁজ হতে পারেন বলে তখন তিনি আশঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন। নিখোঁজের বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) কথা বললেও তিনি কোন থানায় জিডি করেছেন তা সাংবাদিকদের জানাননি। এ ব্যাপারে কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসির আরাফাত জানান, অভিনেতা ফখরুল হাসান বৈরাগীর স্ত্রী রাজিয়া হাসান গত দেড়মাস ধরে তার নিখোঁজ থাকার যে বিষয়টি জানিয়েছেন তা সঠিক নয়। ফখরুল হাসান নিজেই আমাদের জানিয়েছেন তিনি নিজের ছেলের বাসায় ছিলেন। রাজিয়া হাসানও তার স্ত্রী নন।
×