ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চলাচলে অযোগ্য ডিমলার ৪০ কিমি সড়ক

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

চলাচলে অযোগ্য ডিমলার ৪০ কিমি সড়ক

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ ‘খালি ছবি তুলি কী করিবেন বাহে। হামার এই ঠেকার পাকা রাস্তাগুলা ভালা নাই। ভাঙ্গিচুরি শেষ হয়া যায়ছে। হামরাতো রাস্তা মেরামত সংস্কার করিবার দাবি করি, আন্দোলন করিবার পারি না। হামাকতো ধমক দিয়া লাইফসাপোর্টে রাখি দিছে। কিছু কইবার গেইলে মরণ হইব। গত তিন বছর ধরি হামার এইঠে কোন পাকা রাস্তা সংস্কার কাহো করে না। আপনেরা সাংবাদিক। বেশি করি না লেকতে পাইলে রাস্তা ঠিক অইবে না।’ স্থানীয় ভাষায় আক্ষেপ করে সাংবাদিকদের কাছে কথাগুলো বলেন ডিমলা উপজেলার সাধারণ মানুষ। জানা গেল, ডিমলা উপজেলার বিভিন্ন সড়কের মধ্যে ৪০ কিলোমিটার রাস্তা চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ তিন বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করছে। অল্প বৃষ্টিতে রাস্তায় জমছে পানি, খানাখন্দে ভরা চলাচলের অনুপযোগী রাস্তা নিয়ে বিপাকে পড়েছে এলাকাবাসী। তিন বছর আগে সড়কগুলো সংস্কার করা হয়েছিল। ভালই ছিল সব। কিন্তু পাথরের ভারি ভারি ট্রাক আর ট্রলি চলাচলে ভেঙ্গে খানাখন্দকে পরিণত হয়েছে। ডিমলা-সুটিবাড়ী ডালিয়া সড়কের ১৫ কিলোমিটার, ডিমলা থেকে কলোনি বাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার, ডিমলা সদরের শহীদ মিনার থেকে ডোমার সড়কের ৫ কিলোমিটার, খালিশাচাপানি পাউবোর ক্যানেল হয়ে তালতলা মোড় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার, ঝুনাগাছ চাপানির পূর্বদিকে গুচ্ছগ্রাম পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রাস্তা চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ডিমলা থেকে টুনিরহাট হয়ে কলোনির দূরত্ব ১২ কিলোমিটার হলেও মোটরসাইকেলে যেতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগে মর্মে মোতালেব হোসেন নামের এক ব্যক্তি জানালেন। গোটা রাস্তায় বড় বড় গর্তের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ডিমলা উপজেলা শহর থেকে সুটিবাড়ি-ছোটখাতা হয়ে ডালিয়া পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার অতিক্রম করে ওই পথে রংপুর, লালমনিরহাট, হাতিবান্ধা, পাটগ্রাম ও বুড়িমারি যাতায়াত করতে হয় ওই এলাকার মানুষজনকে। এসব সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে ৬টি ঢাকাগামী কোচ, অসংখ্য যাত্রীবাহী বাস, বিআরটিসি কোচ ও শতাধিক মালবাহী ট্রাক, মিনি ট্রাক, মাইক্রোবাস, অটোরিক্সাসহ অসংখ্য যানবাহন। ডালিয়া বাজারের ট্রাক বন্দোবস্তকারী আবুল কাশেম (৩৫) সাংবাদিকদের বলেন, ভাঙ্গা রাস্তার কারণে প্রায়ই ট্রাকের যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে, চাকা ফেঁসে যাচ্ছে, আবার কখনও মালামালসহ ট্রাক উল্টে যাচ্ছে। এ কারণে ওই পথে ট্রাক এখন ভাড়া দিতে চায় না। ট্রাকচালক মিলন ইসলাম (৪০) বলেন, রাস্তার যে অবস্থা তাতে বেশি ভাড়ায়ও পোশায় না। একবার রাস্তায় ট্রাক ফেঁসে গেলে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ধরা খেতে হয়। এছাড়া জরুরী প্রয়োজনে কোন রোগীকে স্থানীয় হাসপাতালে বা রংপুরে নিয়ে যেতে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয় রোগীর পরিবারকে। ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ বলেন, ডিমলা সুটিবাড়ি ১২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য চারটি গ্রুপে টেন্ডার হয়েছে। আর বাকি সড়কগুলোর সংস্কারে টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
×