ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শ্যামলীতে হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান ॥ ১১ জনকে জেল-জরিমানা

প্রকাশিত: ০৯:০১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শ্যামলীতে হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান ॥ ১১ জনকে জেল-জরিমানা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় ঢাকা ট্রমা সেন্টার, কেয়ার হাসপাতাল, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ইসলাম ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে র‌্যাব পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ১১ জনকে আটক করে কারাদ- প্রদান ও জরিমানা করা হয়েছে। এরা হচ্ছে ঢাকা ট্রমা সেন্টারের চিকিৎসক ডাঃ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৪৫), মোঃ আলী জিন্নাহ (৪০), আফরোজা (২৩), মোঃ মশিউল আলম (৪১), মোঃ শাহজাহান (৫৫), মোঃ খন্দকার নুরুল ইসলাম (৬০), মোছাঃ সামসুন্নাহার (৪৮), মোঃ শওকত হোসেন (২৪), মোঃ মোশারফ হোসেন (৫২), বাবুল শাহা (৩১) ও মোঃ গোলাম মোস্তফা (৩২)। রবিবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র‌্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মেজর হোসাইন রইসুল আজম মনি। র‌্যাব জানায়, রবিবার দুপুর ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত র‌্যাব-২ এর ভ্রাম্যমাণ আদালত শ্যামলীর ঢাকা ট্রমা সেন্টার এ্যান্ড স্পেশালাইজড অর্থোপেডিক হসপিটালে অভিযান চালায়। অভিযান পরিচালনাকালে দেখা যায় ওই হাসপাতালে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক টেস্টের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট। এছাড়া অপরিষ্কার মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব, ওটি রুমের অভ্যন্তরে অত্যন্ত নোংরা, রি-এজেন্ট রাখা ফ্রিজের ট্রের মধ্যে তেলাপোকাসহ মৃত পোকামাকড় থাকা, ফ্রিজের টেম্পারেচার সঠিক না থাকা এবং ল্যাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান ছিল না। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালতে র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সরওয়ার আলম প্রতিষ্ঠানটির এমডি ডাঃ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, ম্যানেজার মোঃ আলী জিন্নাহ, ফার্মাসিস্ট মোঃ পাপ্পু ইসলাম ও রিসিপসনিস্ট আফরোজা আক্তারকে আটক করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সরওয়ার আলম জানান, আটক চারজনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ৮ লাখ টাকা অর্থদ- অনাদায়ে প্রত্যেককে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এরপর ইসলাম ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরিতে অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট ব্যবহার, ল্যাব ফ্রিজের তাপমাত্রা রিডিং সঠিক না থাকা, ল্যাব ফ্রিজের মধ্যে ব্লাড, টিস্যু, মিডিয়া কালচার সামগ্রী রাখা, ডাক্তার ব্যতীত রিপোর্টে ব্ল্যাংক স্বাক্ষর পাওয়া যায়। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোঃ শাহজাহান, খন্দকার নুরুল ইসলাম ও ল্যাব ইনচার্জ সামসুন্নাহারকে আটক করা হয়। পরে দোষ স্বীকার করলে তাদের ৬ লাখ টাকা অর্থদ- অনাদায়ে প্রত্যেককে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়। তিনি জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে আদালতের কার্যক্রমে বিঘœ সৃষ্টি করায় মোঃ নাজিমুদ্দিন ভুইয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার আলম জানান, একই সময় পপুলার মেডিসিন কর্ণারে অভিযান চালানো হয়। ওই ফার্মেসিতে অবৈধভাবে আমদানিকৃত বিপুল পরিমাণ উচ্চমূল্যের রেজিস্ট্রেশনবিহীন বিদেশী ওষুধ ব্যবহার ও বিক্রয়ের জন্য মজুদ অবস্থায় পাওয়ায় ফার্মেসি ইনচার্জ মোঃ শওকত তালুকদারকে আটক করা হয়। পরে স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ৫ লাখ টাকা অর্থদ- অনাদায়ে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে কলেজ গেট এলাকায় কেয়ার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল অভিযান চালানো হয়। সেখানে দেখা যায় ল্যাবে মেয়াদোত্তীর্র্ণ রি-এজেন্ট দ্বারা বিভিন্ন ধরনের রোগ নির্ণয় করা, অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে ল্যাব পরিচালনা করা হচ্ছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেয়ার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ম্যানেজার মোঃ মোশাররফ হোসেন, ল্যাব ইনচার্জ বাবুল সাহা ও মোঃ গোলাম মোস্তফাকে আটক করা হয়। পরে আটককৃত তিনজন অপরাধ স্বীকার করলে ৫ লাখ টাকা অর্থদ- অনাদায়ে প্রত্যেককে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়। এই অভিযান পরিচালনা করেন র‌্যাব-২ এর উপ-পরিচালক মোঃ মাহবুব আলম ও এএসপি মোঃ শাহিদার রহমান। এ সময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডাঃ মোঃ শাহজাহান ও ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ড্রাগ সুপার মোঃ রাজিবুল হাবিব উপস্থিত ছিলেন।
×