ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গুণে ভরা থানকুনি পাতা

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

গুণে ভরা থানকুনি পাতা

জ্বর থানকুনি পাতার রস ১ চামচ ও শিউলি পাতার রস ১ চামচ মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে জ্বর সারে। পেটের পীড়া অল্প পরিমাণ আমগাছের ছাল, আনারসের কঁচিপাতা ১টি, কাঁচা হলুদের রস, ৪-৫টি থানকুনি গাছ শিকড়সহ ভাল করে ধুয়ে একত্রে বেটে রস করে খালি পেটে খেলে পেটের পীড়া ভাল হয়। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটা আরও বেশি কার্যকর। গ্যাস্ট্রিক আধা কেজি দুধে ১ পোয়া মিশ্রি ও আধা পোয়া থানকুনি পাতার রস একত্রে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ১ সপ্তাহ খেলে গ্যাস্ট্রিক ভাল হয়। হজম শক্তি বৃদ্ধি বেগুন/পেঁপের সঙ্গে থানকুনি পাতা মিশিয়ে শুকতা রান্না করে প্রতিদিন খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। রক্ত দূষণ রোধে থানকুনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ৪ চা চামচ থানকুনি পাতার রস ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে ৭ দিন খেলে রক্ত দূষণ ভাল হয়। বাক স্ফুরণে যেসব বাচ্চা কথা বলতে দেরি করে অথবা অস্পষ্ট, সে ক্ষেত্রে ১ চামচ করে থানকুনি পাতার রস গরম করে ঠা-া হলে ২০-২৫ ফোঁটা মধু মিশিয়ে ঠা-া দুধের সঙ্গে কিছুদিন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে। খুসখুসে কাশিতে ২ চামচ থানকুনির রস সামান্য চিনিসহ খেলে সঙ্গে সঙ্গে খুসখুসে কাশিতে উপকার পাওয়া যায়। ১ সপ্তাহ খেলে পুরোপুরি ভাল হয়ে যাবে। আমাশয় প্রতিদিন সকালে ৫-৭টি থানকুনি পাতা চিবিয়ে ৭ দিন খেলে আমাশয় ভাল হয়। অথবা, থানকুনি পাতা বেটে পাতার রসের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে দুই চামচ দিনে দুবার খেলে আমাশয় ভাল হয়। পেট ব্যথা থানকুনি পাতা বেটে গরম ভাতের সঙ্গে খেলে পেট ব্যথা ভাল হয়। লিভারের সমস্যা প্রতিদিন সকালে থানকুনির রস ১ চামচ, ৫-৬ ফোঁটা হলুদের রস (বাচ্চাদের লিভারের দোষে) সামান্য চিনি ও মধুসহ ১ মাস খেলে লিভারের সমস্যা ভাল হয়। লাবণ্যতা যদি মুখ মলিন হয় অথবা লাবণ্যতা কমে যায় তবে ৫-৬ চা চামচ থানকুনি পাতার রস দুধ দিয়ে খেতে হবে। নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন। দূষিত ক্ষত মূলসহ সমগ্র গাছ নিয়ে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে দূষিত ক্ষত ধুতে হবে। এতে ক্ষতস্থানের উপকার হবে। মুখে ঘা থানকুনি পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে গারগিল করলে মুখের ঘা ভাল হয়। আঘাত কোথাও থেঁতলে গেলে থানকুনি গাছ বেটে অল্প গরম করে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে প্রলেপ দিলে উপকার পাবেন। সাধারণ ক্ষত থানকুনি পাতা বেটে ঘিয়ের সঙ্গে জ্বাল দিয়ে ঠাণ্ডা করে তা ক্ষতস্থানে লাগাতে হবে। চুল পড়া অপুষ্টির অভাবে, ভিটামিনের অভাবে চুল পড়লে পুষ্টিকর ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারের পাশাপাশি ৫-৬ চা চামচ থানকুনি পাতার রস দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। পেটের দোষ মলের সঙ্গে শ্লেষা গেলে, মলত্যাগ পরিষ্কারভাবে না হলে, পেটে গ্যাস হলে, কোন কোন সময় মাথা ধরা এসব ক্ষেত্রে ৩-৪ চা চামচ থানকুনি পাতার গরম রস ও সমপরিমাণ গরুর কাঁচা দুধ মিশিয়ে খেতে হবে। নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যাবে। স্মরণশক্তি মনে না থাকলে আধা কাপ দুধ, ২-৩ তোলা থানকুনি পাতার রস ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এতে উপকারিতা পাওয়া যাবে। নাক বন্ধ ঠাণ্ডায় নাক বন্ধ হলে, সর্দি হলে থানকুনির শিকড় ও ডাঁটার মিহি গুঁড়ার নস্যি নিলে উপকার পাওয়া যায়। এখন প্রশ্ন হলো- ব্যস্ত নগরজীবনে থানকুনি পাতা খোঁজ পাবেন কোথায়? গ্রামে অবশ্য থানকুনি গাছের অভাব নেই। সহজেই দেখা মেলে ঝোপে জঙ্গলে। শহরাঞ্চলে থানকুনির খোঁজ পাওয়া একটু কঠিনই বটে। তবে রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কাঁচা বাজারগুলোতে একটু খোঁজ করলেই মিলবে থানকুনি পাতা। ফ্রিজেও কয়েকদিন রাখতে পারবেন থানকুনি পাতা। আর যারা গ্রামে বাস করেন তারা বাড়ির আশপাশে খোঁজ করুন, সহজেই মিলে যাবে। অথবা যারা আরও একটু সচেতন তারা ইচ্ছে করলেই বাড়ির ছাদে অথবা বারান্দার এক কোণায় টবের ভেতরই লাগাতে পারেন থানকুনি গাছ। চারা পেতেও তেমন কোন সমস্যা হবে না। যে কোন নার্সারিতে একটু খুঁজলেই মিলবে থানকুনি গাছ। যাপিত ডেস্ক
×