ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর

ভাল ভূমিকা রাখতে চান মঈন আলি

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ভাল ভূমিকা রাখতে চান মঈন আলি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ উপমহাদেশের স্লো-কন্ডিশনের বিষয়টি মাথায় রেখে বাংলাদেশ সফরের দলে চার স্পিনার অন্তর্ভুক্ত করেছে ইংল্যান্ড। মঈন আলি ও আদিল রশিদের সঙ্গী হয়েছেন ১১ বছর পর ফেরা গ্যারেথ ব্যাটি প্রতিভাবান জাফর আনসারি। তবে অভিজ্ঞ ও শীর্ষ অলরাউন্ডার হিসেবে মঈনের দায়িত্বটা একটু বেশিই। আসন্ন সিরিজে ব্যাটিং-বোলিং দুই ভূমিকাতেই দল তার সেরা সার্ভিস চাইবে। মঈন নিজেও এই বাড়তি দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। ‘বাংলাদেশ ও ভারতের কন্ডিশন আমার খেলার ধরনের সঙ্গে বেশি মানানসই বলে আমিও মনে করি একটা পর্যায়ে আমাকে ভূমিকা নিতে হবে। আশা করছি, আমি সেই দায়িত্ব নিয়ে দলের সিরিজ জয়ে বড় ভূমিকাই রাখতে পারব।’ রবিবার ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম মেইল অনলাইনকে বলেন ২৯ বছর বয়সী পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত ইংলিশ তারকা। বাংলাদেশ সফরের ওয়ানডে-টেস্ট দুই দলেই আছেন মঈন। উপমহাদেশে এর আগে কখনও টেস্ট খেলা হয়নি, তবে সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলেছেন। ছিলেন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১৪ টি২০ বিশ্বকাপেও। সেই হিসেবে এখানকার কন্ডিশনটা তার ভালই চেনা। স্পিনিং উইকেটে তার ওপর যে বাড়তি দায়িত্ব থাকবে, মঈন সেটি বুঝতে পারছেন। তবে এই প্রত্যাশাকে চাপ হিসেবে নিতে চান না, ‘ঢাকা ও চট্টগ্রামের উইকেটে স্পিন বড় নিয়ামক হয়ে উঠবে। তবে আমি বাড়তি চাপ অনুভব করছি না। এসব সামলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এগিয়ে যেতে হয়।’ কেবল স্পিন বোলিং নয়, ইয়ন মরগান-এ্যালেক্স হেলসদের অনুপস্থিতিতে ব্যাট হাতেও তার দায়িত্বটা বেড়ে গেছে। দলের প্রয়োজনে ইতোমধ্যে টেস্টে ওপেনিং করেছেন, তবে সাধারণত ৭-৮ নম্বরেই তার জায়গা। এই পজিশনে নেমেই গত মে মাসে শ্রীলঙ্কা ও গত মাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। ঘরের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে ৬৩.২০ গড়ে করেন ৩১৬ রান। এই ফর্মটা কাজে লাগাতে এবার তাকে আরও ওপরে উঠিয়ে আনা হতে পারে। মঈন প্রস্তুত, ‘আমি নিজেকে একজন টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবেই ভাবি। সুতরাং, ওপরের দিকে ব্যাট করতে আমার ভালই লাগবে। তবে দল যেখানেই চায়, আমি সেখানে ব্যাট করতে পারলে খুশি। যদি সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হয়, সেটাই করব।’ বাংলাদেশ সফর নিয়ে ইংল্যান্ডে কম নাটক হয়নি। নিরাপত্তা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল, ওয়ানডে অধিনায়ক মরগান তো শেষ পর্যন্ত নিজেকে সরিয়েই নিয়েছেন। তখন সবার আগে এই মঈনই স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ সফরে আসতে শতভাগ প্রস্তুত তিনি, ‘প্রত্যেক ক্রিকেটারের ভিন্ন মত থাকতে পারে। তবে কারও ওপর চাপ নেই। বাস্তবতা হচ্ছে, পৃথিবীর কোন দেশই এখন পরিপূর্ণ নিরাপদ নয়। যদি বাংলাদেশ সফরের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আমি শতভাগ ইতিবাচক।’ বলেছিলেন তিনি। সাহসী মানুষটিই আবার মাঠের ক্রিকেট নিয়ে সতর্ক। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে এই বাংলাদেশের কাছে হেরে ইংল্যান্ড গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল। পরবর্তীতে অবশ্য রঙিন পোশাকে ইংলিশরা বেশ ভালভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মঈন বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতে আমাদের সিরিজ কঠিন হবে। আমরা এখন দল হিসেবে কোন অবস্থানে আছি তা বোঝা যাবে।’ এরপরই গত বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ টেনে তিনি যোগ করেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে খুব সতর্ক আমরা। অস্ট্রেলিয়াতে তারা আমাদের হারিয়েছিল। তারা কেমন খেলতে পারে তা আমাদের জানা। কিন্তু এখন আমরা একেবারে ভিন্ন এক দল।’ ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা মঈন ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ৩০ টেস্ট, ৪৩ ওয়ানডে ও ১৯ টি২০ ম্যাচ। ডান হাতি অফস্পিনে তিন ভার্সন মিলে ১৩০ উইকেটে নেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে টেস্ট ও ওয়ানডেতে রয়েছে ৫ সেঞ্চুরি। সুতরাং কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে বড় ভূমিকা রাখার আশা মঈন করতেই পারেন। বাংলাদেশ সফরে ইংলিশরা প্রথমে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও পরে দুই টেস্টের সিরিজে অংশ নেবে। মিরপুরে প্রথম ওয়ানডে ৭ অক্টোবর, ৯ ও ১২ অক্টোবর বাকি দুই ওয়ানডে যথাক্রমে মিরপুর ও চট্টগ্রামে। দুটি টেস্ট শুরু ২৪ ও ২৮ অক্টোবর। রয়েছে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ। এরপরই দীর্ঘ সিরিজ খেলতে ভারতে উড়ে যাবে ইংলিশরা।
×