ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার;###;১০ অক্টোবর আদেশ

মুক্তাগাছার রেজাউলসহ ৮ রাজাকারের আট ফরমাল চার্জ দাখিল

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মুক্তাগাছার রেজাউলসহ ৮ রাজাকারের আট ফরমাল চার্জ দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার রেজাউল করীমসহ ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন ও লুটপাটের মতো আটটি অভিযোগ এনে আনুষ্ঠানিকভাবে দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। আদেশের জন্য ১০ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কক্সবাজারের মহেশখালীর রাজাকার এস আই সামসুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল। ৩০ অক্টোবর গ্রেফতারি পরোয়ানার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -১ রবিবার এসব আদেশ প্রদান করেছে। মুক্তাগাছার রেজাউল করীমসহ ৮ রাজাকারের বিরুদ্ধে ৮ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। প্রসিকিউটর আবুল কালাম এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর আগে প্রসিকিউটর আলতাফ উদ্দিন আহমেদ ও প্রসিকিউটর আবুল কালাম ট্রাইব্যুনালে ফরমাল চার্জ দাখিল করেন। তদন্ত সংস্থার প্রাথমিক তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৪ মে তদন্ত সংস্থা এই মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মামলায় ময়মনসিংহ জামালপুরসহ মোট আসামি ৮। তারা হলো- রেজাউল করীম ওরফে আক্কাস মৌলভী (৬৫), এবিএম ইউনুস আলী (৬৫), তার ছোট ভাই মোঃ ইউসুফ আলী ওরফে এ কে এম ইউসুফ আলম (৬০), ওমর ফারুক (৭০), নাসির উদ্দিন (৬৪), ইসমাইল হোসেন (৬৫), একেএম বেলায়েত হোসেন (৬৪) ও কাজী বদরুজ্জামান (৬৫)। এর মধ্যে ৪ আসামি আটক রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো, রজাউল করীম ওরফে আক্কাস মৌলভী (৬৫), এবিএম ইউনুস আলী (৬৫) ও তার ছোট ভাই ইউসুফ আলী ওরফে এ কে এম ইউসুফ আলম (৬০), ওমর ফারুক (৭০)। ময়মনসিংহে এই ৮ জনের বিরুদ্ধে চার খ-ে ৪শ’ ২২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে আটটি অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় ২০১৫ সালের ১ মে থেকে তদন্ত শুরু করে ২০১৬ সালের ৪ মে পর্যন্ত তদন্ত শেষ করে প্রতিবদন চূড়ান্ত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মতিউর রহমান ও রুহুল আমিন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ৪৬ সাক্ষী রয়েছে। পরোয়ানা জারি ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মহেশখালীর রাজাকার এস আই সামসুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রবিবার এ আদেশ প্রদান করেছে। এর আগে গত ২২ মে মহেশখালী উপজেলার ১৬ রাজাকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। পরে এই মামলায় ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে কারাগারে থাকা অবস্থায় আসামিদের একজন মারা গেছে। বাকি ছয়জন কারাগারে রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো, কক্সবাজারের ছালামতউল্লাহ খান, রশিদ মিয়া, মহেশখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ নলবিলা গ্রামের বাসিন্দা মৌলভী নুরুল ইসলাম, মহেশখালী পৌরসভার পুটিবিলা মুহুরী ডেইলের বাসিন্দা জিন্নাত আলী এবং ঘরকঘাটা জামায়াতের মৌলভী ওসমান গনি। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মহেশখালী দ্বীপে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এসব আসামি একাত্তরে স্থানীয় শান্তি কমিটির সভাপতি মৌলভী জাকারিয়ার ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি রশিদ মিয়ার সহযোগী ছিল। তবে ওই এলাকায় এখনও ৭০ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ৩১ জন বিভিন্ন সময়ে মারা গেছে। বাকিদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে। আরও অভিযোগ রয়েছে, একাত্তরে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর একনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন মৌলভী নুরুল ইসলাম ও জিন্নাত আলী। এ মামলার অন্যান্য আসামিরা হলো, মৌলভী জকারিয়া শিকদার (৭৮), রশিদ মিয়া বিএ (৮৩), অলি আহমদ (৫৮), জালাল উদ্দিন (৬৩), মোলভী নুরুল ইসলাম (৬১), মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাবুল (৬৩), মমতাজ আহম্মদ (৬০), হাবিবুর রহমান (৭০), মোলভী আমজাদ আলী (৭০), মৌলভী আব্দুল মজিদ (৮৫), বাদশা মিয়া (৭৩), ওসমান গণি (৬১), আব্দুল শুক্কুর (৬৫), মৌলভী সামসুদ্দোহা (৮২), মোঃ জাকারিয়া (৫৮), জিন্নাহ ওরফে জিন্নাত আলী (৫৮) মোলভী জালাল (৭৫) ও আব্দুল আজিজ (৬৮)। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মধ্যে মোট ঘটনা ১৩। এর মধ্যে হত্যার ৯৪টি, নারী নির্যাতন অসংখ্য এবং লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ অনেক। মামলায় মোট ১২৬ সাক্ষী রয়েছে।
×