ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভূত চালান ও বাণ মেরে হত্যার অভিযোগে ৩ বাড়িতে হামলা

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ভূত চালান ও বাণ মেরে হত্যার অভিযোগে ৩ বাড়িতে হামলা

নিজস্ব সংবাদদাতা, সান্তাহার, ১৮ সেপ্টেম্বর ॥ শনিবার রাতে বগুড়ার সান্তাহার শহরের হরিজন পল্লীতে তিন বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। বাণ মেরে ও ভূত দিয়ে মানুষ মারার ভুয়া অভিযোগে হরিজন পল্লীর বর্তমান ম-ল (সভাপতি) বৈরাগী বাঁশফোর ও তার ভাই দুর্বার বাঁশফোরের নেতৃত্বে সাবেক ম-ল যমুনা বাঁশফোর, ইন্দ্রনাথ বাঁশফোর ও কৃষ্ণা বাঁশফোরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও মারপিটের ঘটনা ঘটিয়েছে। পরে পুলিশ ও সরকারী দলের নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। রবিবার সকাল থেকে হামলাকারীরা ওই তিন বাড়ির আশপাশে পাহারা বসিয়েছে। জানা গেছে, গোষ্ঠীগত বিরোধের জের ধরে মৃত হিরালাল বাঁশফোরের ছেলে বৈরাগী বাঁশফোর ও উত্তম বাঁশফোর এবং তাদের ভাইয়েরা পল্লীর অসচেতন হরিজনদের সংগঠিত করে যমুনা, ইন্দ্র ও কৃষ্ণা বাঁশফোরদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলে। দীর্ঘ রোগভোগ বা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পল্লীর কেউ মারা গেলেই ওই তিন ভাই ভূত ও বাণ মেরে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ তোলে। এ থেকে রেহাই পেতে ওই তিন ভাইয়ের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে আসছে বলে জানিয়েছেন যমুনা বাঁশফোর ও তার অপর তিন ভাই। তারা টাকা দিতে অস্বীকার করায় বৈরাগী গং ‘ভূতচালানী ও বাণমারা’ অভিযোগ নিয়ে কয়েক দফা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হরিজন সম্প্রদায়ের অভিঙ্গ মন্ডল নিয়ে এসে সালিশ করে। সবশেষ শুক্রবার ঢাকা, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়ার ম-লদের নিয়ে সালিশ বৈঠক হয়। বৈঠকে প্রতিবারের মতো এবারও আয়োজনকারী বৈরাগী বাঁশফোরদের করা ভূতচালানী ও বাণ চালান করার অভিযোগ নাকচ করে দেন ওইসব ম-লরা। কিন্তু বৈরাগী গ্রুপ ওই বিচার মানতে নারাজ হলে বৈঠক স্থগিত করা হয়। এদিকে এই হরিজন পল্লীর পাপ্পু বাঁশফোর নামের এক ব্যক্তি পাবনা মানসিক হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আত্মীয়বাড়িতে বেড়াতে যায়। বিভিন্ন মাদকে আসক্ত পাপ্পু শনিবার মৃত্যুবরণ করে। এদিন সন্ধ্যার পর এ খবর সান্তাহার হরিজন পল্লীতে পৌঁছালে ফের উত্তেজিত হয়ে ওঠে বৈরাগী বাঁশফোর গং। তারা ভূত পালনকারী ও বাণমারার অভিযোগ তুলে যমুনা বাঁশফোর ও তার ভাইদের বাড়িতে ওই হামলা, ভাংচুর ও মারপিটের ঘটনা ঘটায়।
×