ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়েতে গিয়ে নিখোঁজ রাজশাহীর যুবক, দিশেহারা পরিবার

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

কুয়েতে গিয়ে নিখোঁজ রাজশাহীর যুবক, দিশেহারা পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ ‘ভাগ্যের চাকা’ পরিবর্তন করতে ১০ বছর আগে ২০০৬ সালে কুয়েতে পাড়ি দিয়েছিলেন বাঘা উপজেলার মীরগঞ্জ বারশতদিয়াড় গ্রামের যুবক ফারুক হোসেন। এরপর গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল ফারুকের। তবে হঠাৎ করেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় তার সঙ্গে। গত ৯ মাসের বেশি সময় ধরে তার আর কোন খোঁজ পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা। ফলে ওই পরিবারে নেমে এসেছে অজানা এক অন্ধকার। বৃদ্ধ মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান হয়ে পড়েছেন দিশেহারা। ইতোমধ্যে ফারুকের সন্ধান চেয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেও কোন হদিস মেলেনি। অবশেষে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে ছেলে নিখোঁজের বিষয়টি প্রকাশ করেছেন ফারুকের পরিবার। মা জোসনা বেগম, স্ত্রী জেসমিন সুলতানা ও একমাত্র কন্যাসন্তান রিতু নিখোঁজ ফারুকের ছবি হাতে নিয়ে বসে আসেন তার আশায়। কখনও কখনও কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন তারা। ফারুকের পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা জানান, ৩ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে ফারুক পরিবারের বড় সন্তান। তার বাবা ফইমুদ্দিন পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সদস্য। ২০০৫ সালের জানুয়ারি মাসে উপজেলার গড়গড়িয়া ইউনিয়নের জেসমিন আক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয় ফারুকের। বিয়ের পর বেকার জীবন কাটছিল তার। তাই পরিবারের সিদ্ধান্তে জমি-জমা বন্ধক রেখে ২০০৬ সালে কুয়েতে পাড়ি জমান ফারুক। সেখানে আল আরাফাহ কোম্পানিতে পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। সেখানে কাজ শুরুর পর থেকে মাসে মাসে পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতেন। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও ছিল প্রতিদিন। ফোনে কথা বলতেন নিয়মিত। ফারুকের বাবা ফইমুদ্দিন জানান, ২০০৬ সালে বিদেশ যাওয়ার পর ফোনে কথা হতো নিয়মিত। কিন্তু গত ৯ মাস ধরে তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর রাত ১টার সময় কুয়েত থেকে ফারুক তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারের মোবাইল ফোনে কথা বলছিল। হঠাৎ করেই ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর একাধিকবার ফারুকের ফোনে ফোন করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও সন্ধান পাওয়া যায়নি। সন্তানের খোঁজ না পেয়ে পরিবারের সবাই এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাদের আশা ফারুক বেঁচে আছে।
×