ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ওয়াজেদ

মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তিবাদের হোক বিস্তার

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তিবাদের হোক বিস্তার

মুক্তবুদ্ধি আর যুক্তিতর্কের ভেতর থেকে মানব সমাজের অগ্রগতির যে সোপান তৈরি হয়, যুগে যুগে তার গলাটিপে ধরা হয়েছে। চিন্তা ও বুদ্ধিকে কূপম-ূকতা হতে মুক্ত করার প্রবল আন্দোলনও প্রতিহত হয়েছে। চিন্তা, ভাবনা, জীবনবোধ এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রমে বাস্তবতা ও অনুসন্ধিৎসার পরিচয় দেবার কাজটিও শ্লথ। বরং অনেকটাই বাস্তবতাবিবর্জিত, কখনও অলীক কল্পনাপ্রসূত। ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার সমাজজীবনকে এমনভাবে আষ্টেপিষ্টে বেঁধে রাখে যে, তা থেকে উত্তরণের পথ ও পন্থাগুলোকে কণ্টকাকীর্ণ করতে সচেষ্ট থাকে সেই শ্রেণীটি, যারা সমাজ প্রগতির অন্তরায় হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করায় নিমগ্ন থাকে। এরা নিজেদের অজ্ঞানতাকে অপরের মধ্যে চাপিয়ে দিতে চায়। মানুষের মনে যদি স্বাধীনতার পরিবেশ তৈরি হয়, ব্যবহারে যদি স্বাধীনতার প্রকাশ থাকে, তাহলে রাজনীতির জীবনকে অবজ্ঞা করেও সমাজে সভ্যতা বেঁচে থাকবে। তবে এই সভ্য সমাজ বেশিদিন এই রাজনীতিকে তার আদিমতা রাখতে দেবে না। অবস্থা যদি আরও খারাপ হয়, তাহলেও স্বাধীনতার ইচ্ছা ফিরে আসবেই। সমাজ ও রাজনীতিতে স্বাধীনতার অনুমতি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু স্বাধীনতার আচরণ সমান মূল্যবান। স্বাধীনতার আচরণবিধি যদি সমাজের অভিজ্ঞতায় তৈরি না হয় তাহলে স্বাধীনতার অনুমতি অনর্থ ঘটাতে পারে। মুক্তবুদ্ধি আর যুক্তি তখন স্বভাবিকভাবে টিকতে পারে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেসব বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হচ্ছে, তাতে মুক্তবুদ্ধির কোন দিকনির্দেশনা পাওয়া যায় না। যুক্তি তো ধুলায় ধূসরিত! ক্ষমতাবান ও শক্তিশালী দেশ যারা পরিচালনা করবেন, তাদের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় বিশ্ববাসী আশা করে। কিন্তু প্রচারণায় যেসব ভাষা ব্যবহৃত হচ্ছে, তা যুক্তিবাদী ও মুক্তবুদ্ধির পরিচায়ক নয়। স্বাধীনতা তাদের ক্রমশ নিচের দিকে ধাবিত করছে। যদিও স্বাধীনতা বুদ্ধির ব্যাপার নয়, মনের ও মেজাজের ব্যাপার। স্বাধীনতা মানুষের প্রগতির পথ কিনা তার প্রমাণ ইতিহাসে খুঁজতে গেলে ব্যর্থ হতেই হবে। অবশ্য ইতিহাসের নজির খুঁজে কিছুই প্রমাণ করা চলে না। যেমন কোন ঘটনা এক বা একাধিকবার ঘটেছে, অতএব আবার ঘটবে। এই বক্তব্য যুক্তিগ্রাহ্য নয়। আবার একই কারণ ইতিহাসে একই ফল না-ও আনতে পারে। প্রকৃতি এবং ইতিহাসের এখানেই পার্থক্য। তাছাড়া ইতিহাসের কোন যুক্তি বা ছক নেই। ইতিহাসবিদ গণক বা গনৎকারও নন। যারা ইতিহাসের আইনে বিশ্বাস করেন, তাদের এক কথায় স্বাধীনতার শত্রু বলা অত্যুক্তি হবে না। গভীরে গেলে স্পষ্ট হয়, স্বাধীনতার প্রত্যয় মানুষের আত্মসম্মানের অনুভূতি। আত্মসম্মানবোধ থেকে মানুষের মর্যাদা, ব্যক্তির অধিকার এবং সমাজে স্বাধীনতার প্রত্যয় জন্মায়। সমাজভেদে স্বাধীনতা এবং অধিকারের বোধ পাল্টায়। আধুনিক স্বাধীনতা বিশ্বজনীন হয়েছে বলে মনে করা হয়। কার্যকর হয়েছে কিনা সেটা অন্য প্রশ্ন। জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে এই স্বীকৃতি দৃঢ় হয়, এই চর্চার জন্য তাই প্রয়োজন স্বাধীনতা। কোন বিশেষ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হলে খোলামনে, সমস্ত যোগ্য লোকের সঙ্গে, সযতেœ সমস্যা নিয়ে আলোচনা কর্তব্য বলে মনে করা হয়। অন্যথায় ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে। মানুষের মর্যাদা এবং জ্ঞানচর্চার প্রয়োজন জরুরী তাই। এই স্বাধীনতাকে আধুনিক মানুষের মনে ধরে রেখেছে। সমাজ পাল্টাচ্ছে। কিন্তু স্বাধীনতার ইচ্ছা থাকছে। স্বাধীনতার আচরণবিধিতে সেজন্য এই দুটি জিনিস থাকা দরকার। অর্থাৎ মানুষকে মানুষ বলে স্বীকার করা ও মর্যাদা দেয়া এবং সযতœ সর্বজনীন আলোচনার সিদ্ধান্ত নেয়া। সমাজ জীবনের, দৈনন্দিন ব্যবহারে এই দুটি প্রত্যয় যদি ফুটে ওঠে তাহলে নির্বাচনী চাতুরী বা রাজনৈতিক পটুত্বে রাষ্ট্রচালনা সম্ভব হবে না। কিন্তু স্বাধীনতা যেহেতু মানুষের মেজাজে থাকে। সেজন্য আইন করে স্বাধীনতা সৃষ্টি করা চলে না। আইন অনুমতি দিতে পারে, নিষেধ করতে পারে কিন্তু আইনের জোরে মেরুদ-হীন মানুষ মেরুদ- লাভ করতে পারে না। আত্মসম্মান যদি না থাকে স্বাধীনতার বোধ আসতে পারে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণার ভাষ্যগুলো মূল্যায়ন করলে স্পষ্ট হবে, আত্মসম্মান বোধ লোপ পাচ্ছে যেমন, তেমনি মানুষের প্রতি অমর্যাদার মাত্রা ক্রমাধিক্য হচ্ছে। অভিবাসীদের প্রতি যেসব বক্তব্য উদ্গীরণ হচ্ছে তা মানুষের স্বাধীনতার প্রতি, অধিকারের প্রতি অবজ্ঞারই নামান্তর। দরিদ্র দেশগুলোতে মানুষের আত্মসম্মানবোধ ও মানুষ হিসেবে মর্যাদাপ্রাপ্তি অনেক ক্ষেত্রেই গৌণ। মনস্তাত্ত্বিকরা বলেছেন, মানুষের মনে বিশৃঙ্খলা গভীর অমঙ্গল ডেকে আনতে পারে। কোন মানুষের মন যদি বিপরীত চাপে বিশৃঙ্খল হয়, তাহলে সেই মানুষ হত্যাকারী হয়ে উঠতে পারে। সে হত্যার আপাতদৃষ্টিতে কোন কারণ নেই। কারণ রয়েছে হত্যাকারীর মনের ইতিহাসে। এই ব্যাখ্যার বাইরে গিয়েও ভাবা যায় যে, বিশেষ কোন মানুষ না হয়ে সমাজের সমস্ত তরুণ-পুরুষ যদি মনের বিশৃঙ্খলায় আক্রান্ত হয়, তখন সেই বিশৃঙ্খলা কোন ধ্বংসের পথে নেবে? বিশ্বজুড়ে আজ এই অবস্থা দেখা যাচ্ছে। জঙ্গীবাদীরা যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞে নেমেছে, তাতে তাদের মানসিক বৈকল্যকে প্রাথমিকভাবে নিরূপণ করা যায়। মার্কিন যুুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশে যেসব টার্গেট কিলিং বা গুপ্তহত্যা চালানো হয়েছে বা হচ্ছে, তাতে তরুণ-তরুণীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ কিংবা আত্মঘাতী হয়ে ওঠার পেছনে যুক্তি বা মুক্তবুদ্ধির কোন লক্ষণ নেই। আধুনিক জীবন ও সমাজের যুক্তি তাদের মধ্যে প্রবেশ করেনি। সাবেকী যুক্তি এমনিতে সর্বত্রই প্রবল। তরুণরা বিদ্রোহ করে ঘুণেধরা সমাজব্যবস্থা ভেঙে নতুন প্রগতিশীল সমাজ গঠনের লক্ষ্যে। কিন্তু জঙ্গীবাদীরা সমাজ মানসকে মধ্যযুগীয় ধ্যান ধারণায় নিয়ে যেতে পুরনোকালের অস্ত্র ব্যবহারও করছে। অথচ তাদের অনেকে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারেও পারদর্শী। তাদের মনে আধুনিক ও পুরাতনের টানাপোড়েন ঘটার কথা থাকলেও কোন ‘অলৌকিক’ কারণে তার বিকাশ ঘটছে না। তাদের অর্জিত জ্ঞান কোনভাবেই সমাজ বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সমাজ গড়ার কারিগর বলা হয় শিক্ষকদের। আজকাল স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষকের বিষয়েও কথা উঠছে। শিক্ষক যদি নিজেই কূপম-ূকতার বিস্তারে সক্রিয় হয়ে ওঠেন, তারা যদি ছাত্রদের মধ্যযুগীয় মানসিকতায় বেড়ে ওঠা এবং ধর্মান্ধতাকে পুঁজি বানিয়ে তাদের জঙ্গী হয়ে ওঠার পথকে বিস্তৃত করেন, তাহলে তো আধুনিক সমাজব্যবস্থা ব্যাহত হতে বাধ্য। মানুষ যুক্তিবাদী। কথাটা যেমন শ্রুতিমধুর, তেমনি বিশ্বাস করা গেলে আত্মপ্রসাদ লাভ সম্ভব। কিন্তু অর্থ অস্পষ্ট। সিদ্ধান্ত অনিশ্চিত। যুক্তি কি বস্তু, সমাজ কখন যুক্তিবাদী হয় ইত্যাদি বিষয়ে যদি মনস্থির করা যায়, তবে দেখা যায়, মানুষ বিশেষ অর্থে, বিশিষ্ট সময়ে যুক্তিবাদী। অন্যথা নয়। জীবন জটিল, সরল সিদ্ধান্ত সচরাচর অকেজো। যুক্তিবাদ বস্তুটা জীবনযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত। প্রতিকূল পরিবেশ এবং পরিবর্তনের সমস্যা এই দুইয়ের মোকাবেলা করার জন্য মানুষ যেভাবে বুদ্ধির প্রয়োগ করেছে, তাতেই যুক্তিবাদ তৈরি হয়েছে। প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ মানুষের একমাত্র সমস্যা নয়। মানুষ একত্র বাস করে, সেজন্য সমস্যা সৃষ্টি হয়। একলা মানুষেরও রয়েছে সমস্যা। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই মানুষ ক্রমশ পেছনে ফেলছে। সমাজ জীবনের সমস্যা, একলা মানুষের অন্তর সঙ্কট এগুলোই আধুনিককালে প্রকট হচ্ছে। বাস্তব অবস্থা যেসব সমস্যার সৃষ্টি করে, সেগুলো বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝতে হয়। নতুন যুগের সমস্যা নতুন করে সমাধান করতে হয়। বুদ্ধি আশ্রয়ী তথ্যনিষ্ঠ এই চেষ্টাটুকুই যুক্তিবাদ। আজকের যে তরুণ বিপথগামী, তাকে সে পথ হতে ফেরানোর জন্য বুদ্ধি ও যুক্তির ব্যবহার যে সফল হবে, তা নয়। কারণ জঙ্গীবাদী হয়ে ওঠার জন্য যে যুক্তি দাঁড় করায়, তার মধ্যে অলীক চেতনার বিস্তারের ভেতর এক ধরনের বুদ্ধি কাজ করে তা কুবুদ্ধির স্তরের। যুক্তিবাদ শব্দটার ব্যবহার সতের শতকে ইউরোপে ব্যাপক প্রচার পায়। ইউরোপের মধ্যযুগে ধর্মাশ্রয়ী চিন্তা এই অঞ্চলের মানুষ ত্যাগ করেছিল। বিজ্ঞানধর্মী বাস্তবাশ্রয়ী চিন্তা জোরালোভাবে শুরু হচ্ছিল, সেই সঙ্গে সপ্রমাণ চিন্তার রীতিনীতি সম্পর্কে কৌতূহল এবং শ্রদ্ধা বাড়ছিল। কোন কোন চিন্তানায়কের মনে হচ্ছিল যে, সামান্য কিছু স্বতঃসিদ্ধ থেকে শুরু করে সার্থকভাবে যুক্তি প্রয়োগ করতে পারলে পুরো দুনিয়া মোকাবেলা করা সম্ভব। নতুন এই মেজাজকে যুক্তিবাদ বলা হলো। ইউরোপের দর্শনচিন্তায় যুক্তিবাদ একটা বিশিষ্ট চেহারা নিয়েছিল। পরিবর্তনশীল সমাজের সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে মানিয়ে নেয়াটুকুই যুক্তিবাদ। বাস্তব অবস্থার সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে মানিয়ে নেয়াটুকু সমাজের যুক্তি। সুপ্রতিষ্ঠিত সমাজে মানুষ সাধারণ যুক্তিবাদী। তা এই অর্থে যে, সমাজের মননশক্তি যে বিশ্বব্যাখ্যা তৈরি করেছে, সমাজের সাধারণ স্বীকৃতি, যুক্তিরীতি, পরিচিতি তথ্য সব কিছুই তার মধ্যে আছে। তার সঙ্গে খাপ খায়। অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও মননের বিকাশে সমাজের যুক্তি নতুন রূপ নয়। দেখা গেছে বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলটি যুক্তিতর্ক গ্রাহ্য করে না। আর তাই সমাজ বাস্তবতাবিবর্জিত দাবি-দাওয়া সামনে এনে সমাজে অস্থিতিশীল ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টিতে তৎপর। এরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামক এক অনির্বাচিত সরকারের দাবি এখনও উত্থাপন করে। এই পদ্ধতি যে যুক্তিতে চালু হয়েছে, সেই যুক্তি পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে গুরুত্ব হারিয়েছে। খোদ যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের সরকার ব্যবস্থার কথা ভাবতে পারে না। তাই ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় নির্বাচন হচ্ছে পরবর্তী প্রেসিডেন্টের জন্য। কিন্তু এ নিয়ে কোন প্রশ্ন ওঠে না। বাংলাদেশকে নিয়ে যারা নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে তারা নির্বাচন বর্জন করে ‘ট্র্যাক’ থেকে ছিটকে পড়ে গিয়েও তত্ত্বাবধায়ক বলে গলা হাঁকাচ্ছে। অথচ জনগণের কাছে এই দাবির কোন গুরুত্ব নেই। তারা মুক্তবুদ্ধির ধারেকাছে যেমন যেতে চায় না, তেমনি কোন যুক্তিকেই গ্রহণযোগ্য বলে ভাবতে পারে না। এরা পুরনো ব্যবস্থাকে নিরাপদ মনে করার পাশাপাশি নিজেদের প্রত্যক্ষ স্বার্থে নতুন সমাজ স্বার্থকে অস্বীকার করে আসছে। এরা মূলত যুক্তি-ভীত রাজনৈতিক মানুষ। এরা সবসময় নিজের মেজাজ সম্পর্কে সচেতন নয় এবং নিজের অবস্থার জন্য দায়ী এমনও নয়। নিয়মনীতিও মানে না তারা। অথচ নিয়ম থাকলে মানুষ স্থির থাকে। যুক্তি ভীত বিএনপি-জামায়াতীরা পুরনো যুক্তিকে আঁকড়ে আছে। নতুন বাস্তবসম্পন্ন কোন যুক্তিকেই তারা মানে না। তাই নির্বাচনকে নিজেদের স্বার্থে ও অনুকূলে নেয়ার জন্য অনৈতিক পথ ও পন্থা খুঁজছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, এমনকি ভারতে ক্ষমতাসীন সরকার নির্বাচনের প্রাক্কালে অনির্বাচিতদের হাতে যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করে না, তখন সে পথ অবজ্ঞা করে অনির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন মানেই যুক্তিহীন ব্যবস্থা চালুও। যার কুফল দেশবাসী দেখেছে। বাংলাদেশে মুক্তবুদ্ধি এবং যুক্তিবাদী মানুষের সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। তাই কুবুদ্ধির বিস্তার এবং অযৌক্তিক কায়কারবার চালানোর কত শত প্রক্রিয়া চলে। তারা বোঝে না ধর্মান্ধতার বিষবৃক্ষ মাথা উঁচু করলে বিষাক্ত হয়ে পড়ে সবকিছু। কোন যুক্তিই তাদের এই অন্ধ আচ্ছন্নতা থেকে সরাতে পারেনি। রাজনৈতিক দলের নেতাদের মন মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন এবং যুক্তিবাদী হলে সমাজ প্রগতির সঙ্গে সঙ্গে দেশও অগ্রগতির শিখরে ধাবিত হতে পারে। আর আড়াই বছর পর দেশে সাধারণ নির্বাচন আসছে। মুক্তবুদ্ধি আর যুক্তিবাদীরা সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে সমাজ বিকাশে এখন থেকেই সচেষ্ট হতে পারেন। আর তাহলে দেশ ও সমাজ মুক্তবুদ্ধি, মুক্তচিন্তা ও যুক্তির বাধাগুলো ভেঙ্গে এগিয়ে যাবেই।
×