ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মাঠ পর্যায় থেকে পোস্তার আড়তে চামড়া আসা শুরু হয়নি

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মাঠ পর্যায় থেকে পোস্তার আড়তে চামড়া আসা শুরু হয়নি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দাম কম হওয়ায় মাঠ পর্যায় থেকে পোস্তার আড়তগুলোতে চামড়া আসা এখনও শুরু হয়নি। তবে রাজধানী ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর প্রায় শতভাগ চামড়া সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে আড়ত ও ট্যানারিগুলো। আপাতত এসব চামড়া ট্যানারিগুলোতে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন আড়তমালিকরা। চামড়া কিনতে গত বছরের তুলনায় ট্যানারি মালিকরা টাকা কম দেয়ায় অসন্তোষ রয়েছে আড়তমালিকদের। শুধু আড়তমালিক নয়, স্থানীয় পর্যায়ে যেসব বেপারি ও ফড়িয়া চামড়া কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত তারাও ট্যানারি মালিকদের প্রতি নাখোশ হয়েছেন। এ কারণে এবার জেলা পর্যায় থেকে ঢাকায় চামড়া আসা বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে, পোস্তার আড়তগুলোতে চামড়া সংগ্রহের জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখনও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছেন। ট্রাক বা ভ্যানভর্তি চামড়া এলে ছুটে যাচ্ছেন তারা। কিনে নিচ্ছেন সেই চামড়া। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আড়তগুলোতে আরও দু’মাস এ ধরনের কর্মব্যস্ততা থাকবে। কারণ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পুরোদমে চামড়া আসা শুরু হবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই। এখন চামড়া সংরক্ষণে লবণ মেশানোর কাজ চলছে স্থানীয় পর্যায়ের আড়তগুলোতে। চট্টগ্রাম, নাটোর, রাজশাহী, বরিশাল, যশোরসহ দেশের অন্যত্র এখন চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজ চলছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ হাইড এ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হাজী মোঃ টিপু সুলতান জনকণ্ঠকে বলেন, এ বছর ঢাকা ও পার্শ¦বর্তী জেলাগুলোর চামড়া সঠিক সময়েই সংগ্রহ করা গেছে। কিন্তু এখনও জেলা পর্যায়ের চামড়া আসা শুরু হয়নি। তিনি বলেন, আগামী দু’মাস আড়তগুলোতে কর্মব্যস্ততা থাকবে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে ঢাকায় চামড়া আসা শুরু হবে। তিনি বলেন, এই সময়টাতে ঢাকার বাইরে থেকে যাতে চামড়া পাচার না হয় সেজন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং পুলিশবাহিনীকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী চামড়া পাচার প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চামড়া ভর্তি ট্রাকগুলো শুধু ঢাকায় প্রবেশ করতে পারবে। ফলে চামড়া পাচারের কোন আশঙ্কা করা হচ্ছে না। জানা গেছে, আড়ত ও ট্যানারিমালিকদের কঠোর নির্দেশনায় এবার স্থানীয় পর্যায়ের বেপারি এবং ফড়িয়ারাও নির্ধারিত দামের বাইরে এবার কোন চামড়া কিনেননি। ফলে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বেশি দামে চামড়া কিনে ধরা খেলেও জেলা পর্যায়ের আড়তমালিকরা আছেন ফুড়ফুড়ে মেজাজে। তারা এখন ঢাকায় চামড়া পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সাভারে ১০টি কারখানা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ শুরু করেছে ॥ এবারের ঈদে সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্পনগরীতে ১০টি ট্যানারি প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করেছে। সাভারের আজমীর ট্যানারিতে ৭ থেকে ৮ হাজার পিচ কাঁচা চামড়া দিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া এ্যাপেক্স, নবারুণ, রিলায়েন্স, ভলুয়া ও রুমাসহ আর কয়েকটি ট্যানারিতেও চলছে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ। তবে এসব ট্যানারি থেকে যে হোয়াইট ব্লু-বর্জ্য পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যাট (সিইটিপি) সচল করা সম্ভব হচ্ছে না। সিইটিপি হচ্ছে একটি বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্ল্যাট। তাই যে দু’টি মডিউল চালু করা হয়েছে, তাতে সাড়ে ১২ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য দিতে না পারলে কাজই করবে না। আজমীর ট্যানারির শ্রমিকরা লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া বাছাই করছেন। আকার অনুযায়ী পৃথক ভাগে ভাগে ফেলছেন কাঁচা চামড়া। প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মচারী বলেন, ঈদের আগে থেকে এখানে কাজ শুরু করা হয়েছে। এখন চামড়া বাছাই করা হচ্ছে, এরপরই তা মেশিনে যাবে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক হাজী মোঃ শহীদ উল্লাহ বলেন, ‘আমরা হোয়াইট ব্লু’র কাজ এবার এখানেই করছি। তবে গ্যাস সংযোগ না পাওয়ায় ফিনিশিংয়ের কাজ করতে পারছি না। ফলে দুই জায়গাতেই দৌড়াতে হচ্ছে।
×