ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইমনের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে

এজিবি কলোনির বাবু প্রতিপক্ষের গুলি ও চাপাতির কোপে হত

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

এজিবি কলোনির বাবু প্রতিপক্ষের গুলি ও চাপাতির কোপে হত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে প্রতিপক্ষের গুলি ও চাপাতির কোপে যুবলীগ কর্মী রিজভী হাসান বাবু (৩৪) খুন হয়েছে। এ সময় আরেক যুবলীগ কর্মী আহসানুল হক ইমন (৩২) গুরুতর আহত হয়েছে। ঘটনার ২০ ঘণ্টায়ও থানায় মামলা হয়নি। পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। সূত্র জানায়, দলীয় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে একই কারণে খুনসহ একাধিক অপরাধ কর্মকা-ের ঘটনা ঘটেছিল এই এজিবি কলোনি ও এর আশপাশের এলাকায়। রিজভী হাসান বাবুর বাবার নাম আবুল কালাম। বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার থানার চর আফজাল গ্রামে। তিনি সবুজবাগ থানার পূর্ব বাসাবো ওয়াসা রোডের ১০/৩/৩ নম্বর বাড়িতে সপরিবারে থাকতেন। বাবুর নিকটাত্মীয় রায়হান জানান, রিজভী হাসান বাবুর কালাম হাসান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। আর বাবু ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। দলীয় রাজনৈতিক কোন্দলের কারণে বাবুকে খুন করা হতে পারে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত এগারোটার দিকে মতিঝিল এজিবি কলোনি এলাকায় যুবলীগের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড অফিসের সামনে দুর্বৃত্তরা যুবলীগ কর্মী রিজভী হাসান বাবু ও আহসানুল হক ইমনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে বাবুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোররাতে বাবু মারা যায়। মতিঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম রাব্বানী জানান, শুক্রবার রাতে এজিবি কলোনির ‘আইডিয়াল জোন’ যুবলীগ কর্মী রিজভী হাসান বাবু ও আহসানুল হক ইমনের ওপর হামলা হয়। এরা রাতে ওয়ার্ড যুবলীগ কার্যালয়ে ক্লাবে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। কয়েকজন সন্ত্রাসী এসে তাদের এলোপাতাড়ি গুলি করে চলে যায়। প্রথমে তাদের ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। এরপর বাবুর গুরুতর আহত অবস্থায় সেখান থেকে এ্যাপোলোতে নেয়া হয়। শনিবার ভোরের দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন বাবুর মৃত্যু হয়। ওসি তদন্ত গোলাম রাব্বানী জানান, বাবুর মুখের ডান পাশে গুলি লেগেছিল। ইমনের ডান হাত এবং পাজরের বাঁ দিকে গুলি লাগে। তার মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্নও রয়েছে। তিনি জানান, হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা গেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছেন। সেই সময় মতিঝিল থানার ডিউটি অফিসার এস আই মোতাহার হোসেন জনকণ্ঠকে জানান, এখনও পর্যন্ত থানায় মামলা করতে নিহত রিজভী হাসান বাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আসেনি। তবে বাবু খুনের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি। অন্যদিকে শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে বাবুর লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে তার চাচা আবু মিয়া তার লাশ বুঝে নেন। ঢামেক ফরেনসিক বিভাগ সূত্র জানান, নিহত রিজভী হাসান বাবরু বাঁ গালে গুলি লেগে তার গলার ডান পাশের বুলেটটি ছিল। ময়নাতদন্তের পর বাবুর গলা থেকে একটি বুলেট উদ্ধার করা হয়েছে। ঢামেক মর্গে মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি মারুফ রেজা সাগর জানান, মিলন ও তুষারসহ কয়েকজন এই হামলা চালিয়েছে। পুলিশ জানায়, নিহত বাবুর নামে মতিঝিল থানায় ৭ থেকে আটটি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি সাগর গ্রুপের রিজভী হাসান বাবু মিলন গ্রুপের এক ক্যাডারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এরই জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় বাবু খুন হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, মতিঝিল এজিবি কলোনিতে নিহত যুবলীগ নেতা মিল্কী গ্রুপ ও মেহেদী গ্রুপের অধিপত্য নিয়ে একের একের অপরাধ কর্মকা- চলে আসছিল। কয়েক বছর এই দ্বন্দ্বে আগে যুবলীগ মেহেদী হাতে মিল্কী খুন হয়। এরপরই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর বন্দুকযুদ্ধে মেহেদী নিহত হয়।
×