ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এসএম সুলতান স্মরণে ৪০ শিল্পীর চিত্র প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

এসএম সুলতান স্মরণে ৪০ শিল্পীর চিত্র প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ছবি আঁকার সুবাদে জোট বেঁধেছেন ৪০ চিত্রশিল্পী। নিজেদের আঁকা ছবির মাধ্যমে এই শিল্পীদল স্মরণ করবেন পথিকৃৎ শিল্পী এসএম সুলতানকে। তাকে নিবেদন করে অনুষ্ঠিত হবে একটি যৌথ চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। শিরোনাম সার্চ দ্য ট্রুথ অব বিউটি বা সৌন্দর্যের সত্যতার অন্বেষণে। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় শুরু হবে সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনী। যৌথভাবে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করছে শিরোনামহীন ও শিল্পকলা একাডেমি। ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন হবে। প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি। বিশেষ অতিথি থাকবেন শিল্প-সমালোচক মইনুদ্দীন খালেদ, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের পুত্রবধূ ইউডেকো লিমিটেডের পরিচালক কোহিনুর আবেদিন ও শিল্পী রফিক সিদ্দিকী। সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। প্রদর্শনী প্রসঙ্গে অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের পক্ষে সামিনা নাফিজ জনকণ্ঠকে বলেন, ২০১২ সাল থেকে শিল্পচর্চার তাগিদে আমরা কয়েকজন শিল্পী জোটবদ্ধ হই। সিদ্ধান্ত নেই শিল্পের আশ্রয়েই প্রতি বছর একজন করে পথিকৃৎ কিংবা প্রখ্যাত শিল্পীকে স্মরণ করব। সেই সুবাদে প্রথম বছরে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন স্মরণে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম প্রদর্শনী। পরবর্তীতে পটুয়া কামরুল হাসান ও শিল্পগুরু সফিউদ্দিন আহমেদকে নিবেদিত করে আরও দুটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এবারের প্রদর্শনীতে স্মরণ করা হবে পথিকৃৎ শিল্পী এসএম সুলতানকে। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হলেনÑ চন্দ্র শেখর দে, আহমেদ নেওয়াজ, শাহ মাইনুল ইসলাম শিল্প, শিশির মল্লিক, শিবনাথ বিশ্বাস, আফজালুর রহিম, আমানুল্লাহ, বিজন মজুমদার, শেখর ম-ল, মহিউদ্দীন আহমেদ, ফাতেমা আখতার, কানাইলাল মজুমদার, সাগর দে, মোঃ জাহিদুল ইসলাম, মোসাব্বির আলম, শাহানাজ বেগম, শাহানা সুমি, জাকিয়া আহমেদ ঝুমা, সাদেক আহমেদ, মাইদুল ইসলাম, সৃজিত ভট্টাচার্য, সিনথিয়া ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, ফারজানা ইয়াসমিন, আনিকা আমজিন হুদা, মজিবর রহমান, ফরিদা খানম, রেজাউল হক, মাহবুব ইসলাম রাজু, শাকিলা চয়ন, জসিম উদ্দীন, সামিনা নাফিজ, তড়িৎ বড়ুয়া, মুক্তারুন নাহার নাজমা, রফিক সিদ্দিকী, বিশ্বনাথ দাশ, উম্মে হাবিবা সুমি, আফরোজা খন্দকার, সাইফুল ইসলাম, দেবব্রত মল্লিক ও শাহানা সুমি। ২৩ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনী শেষ হবে ২৯ সেপ্টেম্বর। বহুরূপী নাট্য সংস্থার কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদ সভা ॥ ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী নাট্যদল বহুরূপী নাট্য সংস্থার কার্যালয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ঈদ-উল-আযহার দিন দুপুরে দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ করে সংগঠনের মূল্যবান জিনিসপত্র, নাটকের পা-ুলিপি, অডিও-ভিডিও ডকুমেন্টসহ সব আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে প্রশাসনের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন শনিবার বিকেলে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। এতে সংহতি জানায়Ñ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, জাতীয় কবিতা পরিষদ, গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ ও পথনাটক পরিষদ। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এ হামলাকে সংস্কৃতি ও প্রগতিশীলতা ধ্বংসের প্রক্রিয়া বলে উল্লেখ করেছেন। সেই সঙ্গে অনতিবিলম্বে এ হামলার সঙ্গে সম্পৃক্তদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে দাবির পক্ষে নাট্যকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ বিশ্ব আইটিআইয়ের সম্মানিত সভাপতি রামেন্দু মজুমদার, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, আতাউর রহমান, ড. এনামুল হক, কেরামত মাওলা, ম. হামিদ, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, গণসঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীর প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করেন গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতিম-লীর সদস্য ঝুনা চৌধুরী। রামেন্দু মজুমদার বলেন, অন্ধকার থেকে উঠে আসা মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গীবাদীদের অশুভ চক্র ক্রমেই সংস্কৃতিমনা-অসাম্প্রদায়িকদের বিপক্ষে একজোট হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মানুষের মনের সব অন্ধকার দূর করে তাদের জাগরণ ঘটাতে পারবে কেবল সংস্কৃতির শক্তি। তারাই রুখে দাঁড়াবে এসব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। মামুনুর রশীদ বলেন, আমরা এখনও জানি না সত্যিকার দোষী কারা। শুধু জঙ্গীবাদীদের দায়ী করে বসে থাকলে চলবে না। আমাদের নিজেদের ভেতরেও কিছু শত্রু আছে। এই আততায়ীরা পেছন থেকে ছুরি চালাতে পারে। তাদের চিহ্নিত করতে হবে। আর বহুরূপীর ঘটনাটি আলাদাভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন আছে। নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর এ হামলা আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী বাঙালী সংস্কৃতি কর্মীদের ওপর হামলা। আতাউর রহমান বলেন, মঞ্চনাটক সব সময় মৌলবাদ-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলে। সত্য, প্রগতি আর মানুষের কথা বলে নাটক। এই নাট্যকর্মীদের ওপর হামলা কোনভাবে মেনে নেয়া যায় না। সংস্কৃতির ওপর হামলার ঘটনায় সংস্কৃতিবান্ধব সরকার তো কিছু করছে না। অন্য বক্তারা বলেন, গুলশানের জঙ্গী হামলার পরে সরকার দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংস্কৃতিবান্ধব শিক্ষার কথা বলছে। কিন্তু এর কোন কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়-প্রশাসনিক পর্যায়ে এখনও কিছু মানুষ গোপনে সন্ত্রাসী-জঙ্গীদের মদদ দিচ্ছে। সঙ্কটের এ সময়ে সংস্কৃতিচর্চার বিষয়ে কর্মীদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটাতে হবে।
×