ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এপ্রিলের পর পুনঃঅর্থায়নের ঋণ বিতরণ নেই

প্রকাশিত: ০৪:২২, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

এপ্রিলের পর পুনঃঅর্থায়নের ঋণ বিতরণ নেই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ার বাজারে প্রাণচাঞ্চল্য ফেরাতে সরকার গঠিত পুনর্অর্থায়ন সহায়তা তহবিলের ঋণে আগ্রহী করতে চলতি বছরের জুনে সুদহার কমিয়ে আনা হয়। বাড়ানো হয় ঋণ পরিশোধের সময়ও। তবুও সহজ এ মার্জিন ঋণের প্রতি বিনিয়োগকারীরে চাহিদা বাড়েনি। শুধু তাই নয় পরিস্থিতি এতটাই বেহাল যে, গত এপ্রিলের পর এ তহবিল থেকে কোন ঋণ বিতরণ হয়নি। তহবিল ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অথচ এই ঋণ অনুমোদনের আগে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে কত না শোরগোল তোলা হয়েছিল। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত বুমেরাংই হয়ে গেছে। আইসিবি সূত্র জানায়, সর্বশেষ চলতি বছরের ২১ এপ্রিল পুনর্অর্থায়ন তহবিল থেকে এফএএস ক্যাপিটাল লিমিটেড ৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ঋণ নেয়। এর পর আর কোন প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরণের জন্য এ তহবিল থেকে ঋণ নেয়নি। এ সময় ঋণগ্রহণের কোন আবেদনও আসেনি। তদারকি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গত মে মাসে পুনর্অর্থায়ন সহায়তা তহবিলের সুদহার শতকরা দেড় পয়েন্ট কমিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে সুদহার দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, যা আগে ছিল ৯ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের সময়ও এক বছর বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর করা হয়। এছাড়া ঋণ গ্রহণের আবেদনের সময়সীমা আরও তিন মাস বাড়িয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পরিবর্তিত হারে আইসিবির সার্ভিস চার্জ ২ শতাংশ থেকে কমে ১ শতাংশে এবং মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের অংশ ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। পরিবর্তিত সুদহার নতুন ঋণের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। তবুও কেউ ঋণ নেয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে না। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস জানায়, সরকার তহবিলটি জনপ্রিয় করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা যাচ্ছে না। মার্জিন ঋণের পুরনো বোঝা ও ঋণাত্মক ইকুইটির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা নতুন করে ঋণ নিতে চাচ্ছেন না। এমনকি দুটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ গ্রহণের আবেদন মঞ্জুর হলেও পরবর্তীতে তারা পিছিয়ে যায়। সহজ মার্জিন ঋণে অনাগ্রহের কারণ হিসেবে তারা জানান, মার্জিন ঋণের সদ্ব্যবহার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া অর্থনীতিতে সার্বিকভাবেই সুদের হার কমে এসেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবসিডিয়ারি মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার-ডিলাররা মূল প্রতিষ্ঠান থেকে কম সুদেই ঋণ পাচ্ছে। এটিও পুনর্অর্থায়ন তহবিলের আবেদন কমার একটি কারণ। আইসিবি সূত্রে জানা গেছে, পুনর্অর্থায়ন তহবিল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৬৪২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্য থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইসিবির হাতে সুদ-আসলে ৪৩৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ফেরত এসেছে।
×