ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় সারওয়ানের

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় সারওয়ানের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সর্বশেষ যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সি গায়ে খেলেছেন তারপর তিন বছর পেরিয়ে গেছে। এরপর আর দলেই ডাক পাননি রামনরেশ সারওয়ান। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন দলে ফেরার। সেই চেষ্টায় সফল হতে পারেননি তিনি। অবশেষে অবসরে যাওয়ার সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেললেন ক্যারিবীয় দলে একসময় তিন নম্বরের স্পেশালিস্ট এ ব্যাটসম্যান। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ৩৬ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার অবশ্য এখনই ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে সরে যাচ্ছেন না। ২০১৩ সালেই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলে ফেলেছিলেন সারওয়ান। সে বছর জুনে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আসরে ভারতের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছিলেন ক্যারিবীয়দের হয়ে। এরপর আর দলে ডাক পাননি এক সময়ে ক্যারিবীয়দের অপরিহার্য এ ক্রিকেটার। হয় তো জানতেন না এর মাঝে আর দলেই স্থান হবে না ক্যারিবীয়দের ‘৩ নম্বর বিশেষজ্ঞ’ এই ব্যাটসম্যানের। শেষ পর্যন্ত উপলব্ধি করেছেন আর কোনভাবেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা হচ্ছে না তার। বৃহস্পতিবারই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন তিনি। ক্যারিয়ারে অনেক চড়াই-উতরাই ছিল সারওয়ানের। ফিটনেস সমস্যা, পড়তি পারফর্মেন্স থেকে শুরু করে বোর্ডের সঙ্গে ঝামেলাতেও জড়িয়ে ছিলেন। বিশেষ করে ২০০৫ সালে পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ক্যারিবীয়দের প্রাথমিক স্কোয়াড থেকে বাদ পরা ৭ ক্রিকেটারের একজন ছিলেন তিনি। যেখানে ছিলেন ক্রিস গেইল ও ব্রায়ান লারা। টিম স্পন্সর (ডিজিসেল) ও ব্যক্তিগত (কেবল এ্যান্ড ওয়ারলেস) স্পন্সরদের সঙ্গে ঝামেলার কারণেই এমনটি করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড (ডব্লিউআইসিবি)। যদিও পরে সেই ঝামেলা মিটিয়ে ডাক পেয়েছিলেন দলে। তবে পারফর্মেন্সে সুবিধা করতে পারেননি। তাই দল থেকে ছিটকে যান। আবার দলে ফেরার পর ২০০৭ সালে প্রধান কোচের সঙ্গে বিবাদে জড়ান। ওই সময়কার অধিনায়ক সারওয়ান সাবেক কোচ বেনেট কিংকে ‘সবচেয়ে বাজে কোচ’ হিসেবে আখ্যা দেন। ২০১০ সালে ফিটনেস ইস্যুতে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েন সারওয়ান। একইভাবে ওয়ানডে দল থেকেও বাদ পড়েন। চুক্তি থেকে বাদ পড়ায় ক্যারিবীয় বোর্ডের বিপক্ষে আপীলও করেন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে। সেই মামলায় জিতে যান সারওয়ান এবং তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয় ডব্লিউআইসিবি। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই গায়ানার হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে সারওয়ানের। ৪ বছর পরেই ২০০০ সালে ক্যারিবীয়দের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর ৮৭ টেস্ট খেলেছেন। টেস্ট ক্যারিয়ারে অভিষেক সেঞ্চুরি করেন ঢাকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে। যেটি ছিল তার ক্যারিয়ারের ২৮তম টেস্ট। ১৫ সেঞ্চুরি ও ৩১ হাফসেঞ্চুরিসহ তিনি ৫৮৪২ রান করেছেন ৪০.০১ গড়ে। ক্যারিয়ারের সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০১১ সালের জুনে ব্রিজটাউনে ভারতের বিপক্ষে। ১৮১ ওয়ানডে খেলে ৪২.৬৭ গড়ে ৫৮০৪ রান করেন তিনি ৫ সেঞ্চুরি ও ৩৮ হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে। ১৮ টি২০ ম্যাচও খেলেছেন। এই ফরমেটে তিনি ২২.৯২ গড়ে ২৯৮ রান করেছেন দুটি অর্ধশতকসহ। টি২০ ক্রিকেটে অনেক আগেই ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছিল তার। ২০১০ সালের ২০ মে এন্টিগায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ টি২০ ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। ২০০৩ সালটা ছিল সারওয়ানের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে সুবর্ণ সময়। মে মাসে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪ টেস্টে করেছিলেন ৩৯২ রান। তবে ২০০৯ সালে টেস্টে ক্যারিয়ারসেরা ২৯১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বার্বাডোজে। সেই সারওয়ানের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘটল।
×