ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইয়নের পাশে বাটলার

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ইয়নের পাশে বাটলার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ সফরে না আসার সিদ্ধান্ত নিতেই ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মরগানের সমালোচনা হচ্ছে। সেই সমালোচনায় ব্রিটিশ মিডিয়া ও সাবেক ক্রিকেটাররা আছেন। অথচ মরগানের পাশে থাকছেন জস বাটলার। যিনি কিনা মরগানের অনুপস্থিতিতে ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেবেন। বাটলার বলছেন, ‘মরগানকে এভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা ঠিক হচ্ছে না।’ ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন, নাসির হুসেইন, এমনকি এ্যান্ড্রু স্ট্রসও মরগানের সমালোচনা করছেন। সেখানে বাটলার পক্ষ নিচ্ছেন মরগানের। বাংলাদেশে না আসার সিদ্ধান্ত নিতেই ভন বলেছিলেন, ‘আমি বলব মরগান খুব বড় ভুল করল। খেলোয়াড়েরা হয় তো সংবাদ সম্মেলনে ওকে সমর্থন করে কথা বলবে। কিন্তু মনে মনে কিন্তু তারা এটাও বলবে কঠিন সময়ে অধিনায়ক পাশে থাকছে না।’ তাই ঘটছে। খেলোয়াড়রা সাংবাদিকদের কাছে মরগানের পক্ষেই কথা বলছেন। বাটলারের মতে, ‘প্রত্যেকের জন্যই এটা ছিল কঠিন এক সিদ্ধান্ত। পত্রপত্রিকায় নানা কিছু পড়ে, নানা রকম তথ্য পেয়ে আপনার মধ্যে উদ্বেগ জন্মানোই স্বাভাবিক। ক্রিকেট খেলাটাই তো শেষ কথা নয়, পৃথিবীটা অনেক বড়।’ প্রত্যেকে যে যার মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন বাটলার, ‘দল হিসেবে আমরা প্রত্যেকেই সবার খুব কাছের। আমরা খোলাখুলি আলোচনা করেছি। আমরা আমাদের স্বজনদের উদ্বেগের বিষয়ে কথা বলেছি। এরপর প্রত্যেকে নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পরস্পরের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছি। দল হিসেবে আমরা আগেই কথা বলে নিয়েছিলাম, যে যাই সিদ্ধান্ত নিক, আমরা প্রত্যেকে তাতে শতভাগ সম্মান ও সমর্থন দেব।’ মিডিয়া এই বিষয়টি বুঝতে পারছে না বলেই মনে করছেন তিনি, ‘কিছু অন্যায় সমালোচনা হচ্ছে। ও সেই সিদ্ধান্তই নিয়েছে যেটা ওর জন্য সঠিক হবে বলে মনে করেছে। এটা হালকাভাবে নেয়ার কিছু নেই। ও সেই সিদ্ধান্তই নিয়েছে যেটায় ও স্বস্তি বোধ করবে। সবাইকে এটি সম্মান দেখানো উচিত।’ গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে বাদ পড়ার পর ইংল্যান্ড দলটাকে মরগান কী করে গড়ে তুলেছেন, সেটিও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বাটলার, ‘আমাদের দলটা যে ভাল খেলতে শুরু করল, প্রধান কারণ যদি নাও হয়, এর অন্যতম প্রধান কারণ তো অবশ্যই সে। দলে খেলার যে ধরনটা সে নিয়ে এসেছে, আমরা এই ধরনের ক্রিকেটই খেলে যেতে চাই। গত দেড় বছরে সে অসাধারণ কাজ করেছে। ও ফিরে এলে আমি হাসিমুখেই নেতৃত্ব ফিরিয়ে দেব।’ বাটলার যতই মরগানের পাশে থাকুক, সমালোচনা থেকে কিন্তু কেউ দূরে সরছে না। এ্যান্ড্রু স্ট্রস প্রকাশ্যেই নিজের হতাশার কথা বলেছেন। ইংলিশ মিডিয়া তো প্রশ্নই তুলে দিয়েছে, সঙ্কটময় মুহূর্তে যে অধিনায়ক নিজে থাকে না, তিনি কী করে সতীর্থদের বলবেন, বাড়তি লড়াই করও, নিজেকে উজাড় করে দাও। বাংলাদেশ সফরে আসারই কথা ছিল না টেস্ট অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুকের। নিরাপত্তা বিষয়টি যতটানা তার কাছে মুখ্য হয়েছে, তারচেয়েও বেশি পরিবার নিয়ে চিন্তিত কুক। কারণ, তিনি বাবা হতে চলেছেন। এই সময়ে স্ত্রী ও পরিবারের পাশে থাকাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু সফরটা ‘বিশেষ’ বলেই কুক শেষ পর্যন্ত দলের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সফর করে গিয়েই নিজের নবজাতকের মুখ হয় তো দেখতে হবে তাকে। কিন্তু ওয়ানডে অধিনায়ক মরগান হাঁটলেন উল্টো পথে। ইংলিশ মিডিয়া প্রশ্ন তুলেছিল, মরগান যদি না যান, নেতৃত্বও ছেড়ে দেয়া উচিত তার। বিশেষ করে মরগানের এই সিদ্ধান্ত তাকে আর যাই হোক সাহসী বলে প্রতিষ্ঠিত করেনি। ডেইলি মেইল শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশ সফরে না গিয়ে ইংল্যান্ডকে হতাশ করলেন মরগান, এখন তিনি নিজের দলকে কীভাবে বলবেন আরও বেশি লড়াই কর?’ ডেইলি সানও প্রশ্ন তুলেছে, এই সফরে না যাওয়ার পেছনে যে দুটি কারণ বড় করে দেখিয়েছেন মরগান তার একটা তিনি নিজেই বিশ্বাস করেন কি না। কারণ ২০১০ আইপিএলে বোমা আতঙ্কের কথা বললেও মরগান নিজে এরপর আরও পাঁচবার আইপিএল খেলেছেন বলে লিখেছে পত্রিকাটি। এ কারণে ইসিবি স্বাভাবিকভাবেই তার ওপর ক্ষুব্ধ। ইউকে এক্সপ্রেস লিখেছে, মরগান ও হেলস বাংলাদেশ সফর থেকে নাম সরিয়ে নিয়ে নিজেদের ক্যারিয়ার ঝুঁঁকির মধ্যে ফেলে দিলেন।
×