ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিনোদন কেন্দ্রে ভিড়

রাজধানী ফাঁকা ॥ ট্রাফিক সিগন্যাল ছাড়াই চলছে যানবাহন

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

রাজধানী ফাঁকা ॥ ট্রাফিক সিগন্যাল ছাড়াই চলছে যানবাহন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদ শেষ। কেটেছে দুই দিন। কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তবুও জমে ওঠেনি রাজধানী শহর। নীরব রাস্তা। গাড়ি কম। দাপট রিক্সার। ট্রাফিক সিগন্যাল ছাড়াই চলছে সব ধরনের যানবাহন। যানজটের বালাই নেই। সত্যিই এমন দৃশ্য দেখা মেলে না। তাই নীরব শহর উপভোগ করতে ভ্রমণপিপাসুদের ঘোরাফেরা বেড়েছে। জমজমাট বিনোদনকেন্দ্রগুলো। টার্মিনাল কেন্দ্রিক ভিড়ও আছে। ঢাকায় ফেরা মানুষের অভিযোগ বাড়তি- ভাড়া আর লাইন ধরে টিকেট কাটার ভোগান্তি। ঘরে ফিরতে প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে ছিল অসহনীয় যানজট। সেই দূরবস্থা কেটেছে। ফাঁকা মহাসড়ক। ফেরিঘাটেও ভোগান্তি নেই। বুধবার নেত্রকোনা থেকে হযরত শাহজালাল এক্সপ্রেসে আসা যাত্রী সুদীপ জানালেন, সকাল থেকেই কাউন্টারে ঢাকামুখী মানুষের দীর্ঘ লাইন। এক ঘণ্টার বেশি সময় দাঁড়িয়ে থেকে টিকেট সংগ্রহ করেছেন তিনি। কিন্তু ৮৪৯ নম্বর গাড়িতে ২৫০টাকার টিকেট কিনতে হয়েছে ৩০০টাকায়। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন যাত্রীদের অনেকেই। ৪৫০ নম্বর গাড়ির যাত্রী কাদের জানালেন, ঢাকা থেকে নেত্রকোনা যেতে এই পরিবহন যাত্রীপ্রতি কখনও ৪০০ কখনও ৫০০টাকা পর্যন্ত অন্যায়ভাবে আদায় করেছে। আসার পথেও বেশি রেখেছে ৫০টাকা। ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুরসহ বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা বাড়তি বাস ভাড়ার অভিযোগ করেছেন। রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশন, মহাখালি, সায়েদাবাদ, গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে শুরু করে সদরঘাট নদী বন্দর গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকামুখী মানুষের ভিড় বাড়ছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েন, বৃহস্পতিবার প্রথম কর্মদিবস হলেও যাত্রী চাপ কম। রবিবার থেকে পুরোদমে অফিস শুরু। তাই শনিবার থেকেই ভিড় বাড়তে পারে। ট্রেনে দিনাজপুর থেকে আসা যাত্রী কাদির জানালেন,আসার পথে ভিড় কম ছিল। কিন্তু ট্রেন থেকে নেমে বাসায় যেতে পরিবহন সংকটের মুখে পড়তে হয়েছে। অটোরিক্সা বা ট্যাক্সি মিলছে না দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়েও। রিক্সা ভাড়া দ্বিগুণ। টার্মিনালে নেমে বাসায় ফিরতে গাড়ি না পাওয়ায় একই অভিযোগ করলেন ভোলা থেকে লঞ্চে আসা যাত্রী মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ঢাকায় ফিরতে ভোগান্তি কম হলেও বাসায় ফিরতে কষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘ সময় বসে থেকেও গাড়ি মিলছে না। এদিকে রাজধানীর পার্ক, সিনেমাহলসহ বিনোদনকেন্দ্রগুলো ঢাকাবাসীর পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের ঢেউ চলছে প্রথম কর্মদিবস বৃহস্পতিবারও। ঈদের ছুটিতে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে রিক্সায় মানা ছিল না। কড়াকড়ি না থাকায় প্রিয় মানুষের সঙ্গে রিক্সায় চলছে আনন্দভ্রমণ। নগরীর অন্যতম প্রধান বিনোদনকেন্দ্র শিশুপার্ক ছিল শিশুদের কলকাকলিতে মুখরিত। পার্কের রাইডগুলোর সামনে ছিল উপচেপড়া ভিড়। এফডিসি মোড় থেকে রামপুরা ব্রিজ, হাতিরঝিলের প্রতিটি মোড় আর সেতুতে ছিল না তিল ধারণের অবকাশ। হাজারো মানুষের ভিড় ছিল অনেক রাত অবধি। রাজধানীর সিনেমা হলগুলোতেও ভিড় দেখা গেছে। মধুমিতা সিনেমা হলে শাকিব খান-শবনম বুবলীর ‘শুটার’ দেখতে দর্শকদের উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক। হল সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মানুষের ব্যস্থতার কারণে সিনেমার দর্শক কমছে। কিন্তু ঈদের সময় দর্শক উপস্থিতি হয় সন্তোষজনক। অভিসারে চলছে শাকিব-বুবলীর আরেক সিনেমা ‘বসগিরি’। হলের ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন জানালেন, মর্নিং শো একেবারেই ফাঁকা যাচ্ছে। ইভনিং আর ম্যাটিনি শোতে কিছু দর্শক পাওয়া যাচ্ছে। অভিসার হলে কাজল নামের এক দর্শক বললেন, নির্ধারিত কাউন্টার থেকে টিকেট বিক্রি না করে একদল কালোবাজারির হাতে টিকেট চলে গেছে। প্রায় দেড়গুণ টাকা গুনতে হচ্ছে সিনেমা দেখতে। অবশ্য হল ম্যানেজার দেলোয়ার অভিযোগ মানতে নারাজ। তার দাবি, হলের কর্মীরাই টিকেট বিক্রি করছে। পরিবেশও এখন ‘অনেক ভালো’। বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্সে চলছে যৌথ প্রযোজনার সিনেমা ‘রক্ত’। ঢালিউডের পরীমনি আর টালিগঞ্জের নবাগত রোশানের এ সিনেমা দেখতে মানুষের ভিড় বেশ।
×