ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঘোষিত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকার দুই মেয়র। মঙ্গলবার ঈদের দিন দুপুর থেকে বর্জ্য অপসারণে ৪৮ ঘণ্টার যে কার্যক্রমের সূচনা হয়েছিল, সে তথ্য জানাতে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন এবং উত্তরের আনিসুল হক। তবে নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ে শতভাগ সাড়া না পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তারা। এদিকে সরেজমিন নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সড়ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। তবে ডাস্টবিনসহ আশপাশের স্থানগুলোতে আবর্জনা অপসারণের গতি খুবই কম। ময়লার গন্ধে নাকে রুমাল দিয়ে হাঁটতে দেখা গেছে পথচারীদের। এবার বেশি ক্লিনÑ আনিসুল হক ॥ গত ঈদের চেয়ে এবার শহর বেশি ক্লিন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক। বৃহস্পতিবার ডিএনসিসি সম্মেলন কক্ষে কোরবানি ঈদ-পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি। আহক বলেন, আমরা নির্ধারিত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির সব বর্জ্য অপসারণ করেছি। গত ঈদের চেয়ে এবার শহর আরও বেশি ক্লিন হয়েছে। ডিএনসিসির আওতাধীন পাঁচটি অঞ্চলে এক লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫টি পশু কোরবানি করা হয়েছে। বর্জ্য অপসারণ কাজে তিন হাজার ৪৮০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করেছেন বলে জানান মেয়র। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সাত হাজার ৮০১ দশমিক ৫৭ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। ঈদের দিন দুপুর ২টায় উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরে বর্জ্য অপসারণ করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সব বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাউল হক, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক এমএ রাজ্জাক প্রমুখ। আনিসুল বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত সব ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে পেরেছি। আপনারা দেখেন কোথাও কোন বর্জ্য নেই। নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানিতে নগরবাসীর আগ্রহ বাড়ছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা পশু কোরবানিকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আনার চেষ্টা করছি। কিছু ওয়ার্ডে ৮০ ভাগ পশু নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করা হয়েছে, কোথাও হয়নি। এভাবে আরও কয়েক বছর প্রচার চালাতে হবে। আশা করি কয়েক বছরের মধ্যে আমরা জবাইখানা করে ফেলতে পারব। তখন সেখানেই কোরবানি করা সম্ভব হবে। শতভাগ সফলÑ সাঈদ খোকন ॥ সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় আমরা আজ পর্যন্ত শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করতে সমর্থ হয়েছি। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। মেয়র জানান, গত দুই দিনে ৩২৪টি গাড়িতে দুই হাজার ৯০২টি ট্রিপের মাধ্যমে ১৯ হাজার আট টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এ বছর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দুই লাখ ৪০ হাজার পশু কোরবানি হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে পশু কোরবানির জন্য কর্পোরেশনের নির্ধারিত ৫০৪টি স্থানে উপস্থিতি আশানুরূপ ছিল না বলে মন্তব্য করেন মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, আমাদের এ উদ্যোগের দ্বিতীয় বছর চলছে। গতবছরের তুলনায় এবার উপস্থিতি বেশি ছিল। তবে দীর্ঘদিনের অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লাগবে। ঈদের দিন সকালে ভারি বৃষ্টি হওয়ায় শান্তিনগর ও জুরাইন এলাকায় কোরবানির পশুর রক্ত বৃষ্টির পানিতে মিশে যায়। ফলে গলিপথ লাল রং ধারণ করে বিরল দৃশ্য তৈরি হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এসব ছবি ছড়িয়ে পড়ায় সমালোচনা হচ্ছে। রাস্তাঘাটে রক্তমিশ্রিত পানি জমে থাকা ‘দৃষ্টিকটূ’ মন্তব্য করে সাঈদ খোকন বলেন, এটা একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা। আমরা বুঝতেই পারিনি এমন হতে পারে। আগামী কোরবানির ঈদে এ বিষয়টি আমাদের মাথায় থাকবে। ঈদের দিন বৃষ্টি হলে নগরবাসীর কোরবানির জন্য সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখবেন।
×