ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অফিস-আদালত ব্যাংকে ছুটির আমেজ

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

অফিস-আদালত ব্যাংকে ছুটির আমেজ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কোরবানির ঈদের টানা ছয় দিন ছুটির পর অফিস খুললেও ছুটির আমেজ কাটেনি। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় ছিল ফাঁকা। অফিস-আদালত, ব্যাংকপাড়ার চিত্রও একই। স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে যারা গ্রামে গেছেন তাদের অনেকেই এখনও ঢাকায় ফেরেননি। আর ছুটি শেষে যারা বৃহস্পতিবার অফিস করেছেন তাদেরও দিনের প্রথমভাগ কেটেছে ঈদের কোলাকুলি ও কুশল বিনিময় করে। সচিবালয়ের বিভিন্ন দফতর এদিন যথানিয়মে সকাল ৯টায় খুলেছে। তবে ছুটির পর প্রথম কর্মদিবসে উপস্থিতির হার ছিল অনেক কম। সকাল ১১টার দিকে সচিবালয় ঘুরে অধিকাংশ কক্ষই ফাঁকা দেখা গেছে। অধিকাংশ দফতরের সচিব এদিন কার্যালয়ে ফিরে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। ঈদের আগে সরকার নির্বাহী আদেশে ১১ সেপ্টেম্বর ছুটি ঘোষণা করায় এবার ৯ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর টানা ছুটি কাটিয়েছেন সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপরও অনেকেই বৃহস্পতিবার এক দিনের ছুটি নিয়েছেন। ফলে তাদের অফিস শুরু হবে মূলত রবিবার থেকে। এ কারণেই ছুটির পর প্রথম দিন সচিবালয়ে উপস্থিতি কম ছিল। বৃহস্পতিবার উপস্থিতির হার ছিল ৪০ শতাংশেরও কম। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং বেসমারিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ঈদের পর প্রথম দিন অফিসে এসে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার যাতায়াতের বিড়াম্বনা কম ছিল। রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়েছে। তাই ঈদ উপলক্ষে সবাই যার যার গন্তব্যে যেতে পেরেছেন। তিনি বলেন, একজন ব্যবসায়ী আমাকে বলেছেন, এবার ঈদে ব্যবসা চার বছর আগের তুলনায় চারগুণ বেড়েছে। নাহিদ বলেন, আজ অনেকে ঐচ্ছিক ছুটি নিতে পারেন। যারা ছুটি নিয়েছেন তারা তিনদিন বাড়তি ছুটি কাটাতে পারছেন। বেসমারিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন নিজের দফতরে সাংবাদিকদের বলেন, এবার ঈদে পর্যটন খুবই বাড়ন্ত। পর্যটন স্পটগুলোতে আমরা পর্যটকদের জায়গা দিতে পারিনি। আমাদের অবকাঠামো আরও বৃদ্ধি করতে হবে। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। ঈদের ছুটিতে কিছু লোক বিদেশেও গেছে। বৃহস্পতিবার অনেকেই ছুটি নেয়ায় উপস্থিতি কম জানিয়ে মেনন বলেন, আশা করা যায় আগামী রবিবার থেকে পুরোদমে অফিস শুরু হবে। কর্মকর্তারা জানান, এবার অধিকাংশ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ঈদ করেছেন নিজের নির্বাচনী এলাকায়। দুপুরের পর তারা অফিসে আসতে পারেন। ঈদের ছুটির পর প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে দর্শনার্থীর অভ্যর্থনা কক্ষেও তেমন ভিড় দেখা যায়নি। ভেতরে ছিল না দর্শনার্থীর আনাগোনা। বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার আদালতপাড়ার চিত্রও মোটামুটি একই রকম ছিল। বিচারক, আইনজীবী এবং বিচারপ্রার্থীর উপস্থিতি ছিল হাতেগোনা। বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শামসুল আলম এদিন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর যুদ্ধাপরাধের রায় ফাঁসের মামলার রায় ঘোষণা করেন। মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কামরুল হোসেন মোল্লাও এজলাসে বসেছেন। তবে জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান ছুটিতে রয়েছেন, তার মামলার দায়িত্বে রয়েছেন অন্য একজন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ। মুখ্য মহানগর হাকিম ও মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের অনেক বিচারক এখনও ছুটি থেকে ফেরেননি বলে কর্মচারীরা জানান। ব্যাংকপাড়ার চিত্রও একই। বৃহস্পতিবার মতিঝিল ঘুরে দেখা গেছে, ব্যাংকে কোন ভিড় নেই। নেই কোন কোলাহল। সকালে অফিসে এসে সবাই ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। লেনদেন তেমন কিছু না থাকায় কে কী কোরবানি দিয়েছেন, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এবারের কোরবানি বিষয়ক আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে গরুর দাম কমে যাওয়া।
×