ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইউএস ওপেনের নতুন রানী কারবার

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ইউএস ওপেনের নতুন রানী কারবার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষ পর্যন্ত এ্যাঞ্জেলিক কারবারই হাসলেন শেষের হাসি। ক্যারোলিনা পিসকোভাকে পরাজিত করে বছরের শেষ গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনের শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে মৌসুমের শুরু করেছিলেন ২৮ বছর বয়সী এই টেনিস তারকা। এবার বছরের শেষ শিরোপাটাও নিজের করে নিলেন তিনি। শনিবার ইউএস ওপেনের ফাইনালে চেক প্রজাতন্ত্রের ক্যারোলিনা পিসকোভাকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পান তিনি। তবে শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে দারুণভাবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন পিসকোভা। সেমিফাইনালে যিনি সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে প্রথম কোন গ্র্যান্ডসøামের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছেন এই চেক তারকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ্যাঞ্জেলিক কারবারের বিপক্ষে পেরে উঠতে পারেননি তিনি। জার্মান তারকা কারবার এদিন ৬-৩, ৪-৬ এবং ৬-৪ সেটে পিসকোভাকে হারিয়ে ফ্লাশিং মিডোর প্রথম এবং ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় মেজর শিরোপা নিজের শোকেসে তুলেন। এই বছরটা যেন কারবারের সোনায় মোড়ানো। শুরু থেকেই দুর্দান্ত কেটেছে তার। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি সেরেনাকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম জিতে নেন কারার। ফ্রেঞ্চ ওপেনে ব্যর্থ হলেও উইম্বলডনে আবারও ফাইনালের টিকেট কাটেন তিনি। শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে এবারও তার সামনে প্রতিপক্ষ হয়ে আসেন সেরেনা। এবার আর সেরেনার বিপক্ষে পেরে উঠতে পারেননি পোল্যান্ডে বসবাসকারী এই জার্মান। বরং কারবারকে পরাজিত করে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপা হারানোর প্রতিশোধটা বেশ ভালভাবেই নিয়ে নেন টেনিসের কৃষ্ণকলী। এরপর রিও অলিম্পিকেও ফাইনালে উঠেন কারবার। কিন্তু পুয়ের্তো রিকোর মনিকা পুইগের কাছে হেরে অলিম্পিকের স্বর্ণ পদক জয়ের স্বপ্ন ভঙ্গ হয় তার। তবে হতাশায় নুইয়ে পড়েননি এই জার্মান প্রতিনিধি। বছরের শেষ গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনেও দুর্দান্ত খেলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি। সেরেনা উইলিয়ামসের বিদায় নিশ্চিত হওয়ার পরই বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান দখল করে নেন কারবার। যে কারণে পিসকোভার বিপক্ষে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থেকেই কোর্টে নেমেছিলেন ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার এই টেনিস তারকা। একে তো সেরেনা উইলিয়ামসকে হটিয়ে বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান দখল তার ওপর ইউএস ওপেনের চ্যাম্পিয়ন। কারবারের মনে এখন দ্বিগুণ আনন্দ। এক বছরে দুই গ্র্যান্ডসøাম শিরোপা জিতে জার্মানির নতুন টেনিস তারকা ভাসছেন এখন উচ্ছ্বাসের জোয়ারে। নিজের কাছেই যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না তার। এ প্রসঙ্গে ম্যাচের শেষের সংবাদ সম্মেলনে ১০ শিরোপা জয়ের মালিক এ্যাঞ্জেলিক কারবার বলেন, ‘এ বছর চ্যাম্পিয়ন হয়ে এই ট্রফি হাতে নিতে পারছি। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এক বছরে দুই গ্র্যান্ডসøাম জয় এক কথায় অবিশ্বাস্য। এটাই আমার ক্যারিয়ারের সেরা বছর। পাঁচ বছর আগে নিউইয়র্কে (ইউএস ওপেনের) সেমিফাইনালে উঠেছিলাম। এখন আমার হাতে ট্রফি। এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য।’ গত বছর টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের ১০ নাম্বারে থেকে মৌসুম শেষ করেছিলেন এ্যাঞ্জেলিক কারবার। আর এখন র‌্যাঙ্কিংয়ের চূড়ায় তিনি। এ যেন শৈশবের স্বপ্ন হাতের মুঠোয়। কারবার নিজেও স্বীকার করেছেন তা, ‘ছোটবেলা থেকেই গ্র্যান্ডসøাম জয়ের পাশাপাশি টেনিসের এক নাম্বার হওয়া আমার স্বপ্ন ছিল। এটা আমার কাছে বিশাল কিছু।’ এদিকে জার্মান তারকা কারবারের মতো বিশাল কিছু করতে না পারলেও পিসকোভার কৃতিত্ব কম নয়। ফাইনালে ওঠার পথে চতুর্থ রাউন্ডে সাত গ্র্যান্ডসøাম জয়ী ভেনাস উইলিয়ামসকে হারান তিনি। তবে বড় চমকটা দেন সেমিফাইনালে। ভেনাসেরই ছোট বোন সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে। একই গ্র্যান্ডসøামে উইলিয়ামস বোনদের হারানো মাত্র চতুর্থ খেলোয়াড় পিসকোভার আরেকটি ‘কীর্তি’র কথাও বলতে হবে। এবারের ইউএস ওপেনে এই পিসকোভাই কেবল একটি সেট জিততে পেরেছেন কারবারের বিপক্ষে। আগে কখনও কোন গ্র্যান্ডসøামের তৃতীয় রাউন্ডের বাধাই পেরুতে পারেননি পিসকোভা। এবার ফাইনালে জায়গা করে নিয়ে কারবারের বিপক্ষে বেশ ভালভাবেই লড়াই করেছেন পিসকোভা। তার জোরালো গ্রাউন্ড স্ট্রোকসগুলো এক সময় অস্বস্তিতেই ফেলে দিয়েছিল কারবারকে। কিন্তু ৪৭ ‘আনফোর্সড এরর’-এর মাশুলও দিতে হয়েছে চেক প্রজাতন্ত্রের তরুণ প্রতিভাবান এই খেলোয়াড়কে। ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষকে প্রাপ্য সম্মান দিতে মোটেই কার্পণ্য করেননি পিসকোভা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ্যাঞ্জি (কারবার) প্রমাণ করেছে যে সেই এক নাম্বার। তার বিপক্ষে খেলতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি।’ আর পিসকোভা দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দিয়ে আসার পথে পাওয়া সমর্থনকারী ভক্তদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
×