ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামের ফ্লাইওভার নিয়ে দুই মন্ত্রীর ভিন্ন মত

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

চট্টগ্রামের ফ্লাইওভার নিয়ে   দুই মন্ত্রীর ভিন্ন মত

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর চট্টগ্রামে এসে উর্ধতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে প্রকাশ্যে বলেছিলেন নগরীতে ফ্লাইওভার নামে যে নির্মাণ কাজ চলছে মূলত এগুলো ওভারপাস। দীর্ঘদিন পর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একই স্টাইলে বললেন চট্টগ্রামে ফ্লাইওভার করার মতো পরিস্থিতি এখনও হয়নি। এছাড়া অতিসম্প্রতি একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার লম্বা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য একসঙ্গে প্রকল্প পেশের নির্দেশ দিয়েছেন তা নিয়েও সড়ক পরিবহনমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক নয়। গত বৃহস্পতিবার সেতুমন্ত্রী চট্টগ্রামে এসে স্পষ্টভাবে বলেন, চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রয়োজন আছে কিনা তা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (চউক) ভেবে দেখতে হবে। বিশৃঙ্খলভাবে উন্নয়ন করলে এর কোন সুফল জনগণ পাবে না। তিনি চউক চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ করে বলেন, আগে ফ্লাইওভার না করে রাস্তা ঠিক করুন। ফ্লাইওভার করার মতো পরিস্থিতি চট্টগ্রামে এখনও সৃষ্টি হয়নি। মনোরেল বা মেট্রোরেল করলেই যানজট সমস্যার সমাধান হবে। এছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করলে সমস্যা আরও বাড়বে। এর আগে বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয় গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের। তিনি চট্টগ্রাম এসেই বললেন, ফ্লাইওভারের নামে এসব কি হচ্ছে। এগুলোতো ওভারপাস। এ নিয়ে চট্টগ্রামের নগরবিদ ও উন্নয়ন কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িতদের মাঝে বেশ হৈ চৈ পড়ে যায়। যেখানে তার মন্ত্রণালয়ের অধীন এ কর্মকা- হচ্ছে সেক্ষেত্রে ফ্লাইওভার নিয়ে তার মনোভাব ইতিবাচক নয় কেন তা নিয়ে নানা মহলে জিজ্ঞাসার সৃষ্টি হয়। অবশ্য এ ব্যাপারে চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম সাংবাদিকদের বলেছেন, চট্টগ্রামের উন্নয়ন প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে নেয়ার পর যেসব উন্নয়ন কর্মকা- হচ্ছে তা তাঁর নির্দেশেই হচ্ছে। চউক সূত্র শনিবার জানায়, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী যা বলেছেন তা তাদের নজরে এসেছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী নিজে চউক চেয়ারম্যানকে একসঙ্গে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পেশের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহেই এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হবে আগ্রাবাদের বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে পতেঙ্গার কাঠগড় পর্যন্ত। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে চউকের উদ্যোগে বহদ্দারহাট ও কদমতলী ফ্লাইওভার নির্মাণ শেষে মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত আরেকটি ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। তবে এসব ফ্লাইওভার নিয়ে উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের মনে নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। তাদের মতে, পরিকল্পিতভাবে এসব ফ্লাইওভার হচ্ছে না। যা আগামীতে নগরবাসীর জন্য চরম দুর্ভোগ বয়ে আনবে। অপরদিকে, চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম জানিয়েছেন, প্রকৌশলীদের মাঠ পর্যায়ের জরিপ ও অবকাঠামোগত দিক পর্যালোচনা করে মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প পাস হওয়ার পর এসব ফ্লাইওভারের কাজ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে ইতোমধ্যেই এসব প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে গেছেন। যারা এর বিরোধিতা করছেন তা উদ্দেশ্যমূলক। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে একনেক সভায় ২০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাকলিয়ায় এক্সসেস নামের একটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
×