ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রীসে শিশু শরণার্থী শিবিরের করুণ দশা

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

গ্রীসে শিশু শরণার্থী  শিবিরের করুণ দশা

গ্রীক পুলিশ নিয়মিতভাবেই অভিভাবকহীন শরণার্থী শিশুদের ছোট, জনাকীর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর সেলে সপ্তাহ ও মাস ধরে আটকে রাখে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডাব্লিউ) প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে গ্রীসে পৌঁছানো অভিভাবকহীন তিন হাজার ৪৬৪ শিশুর নাম নিবন্ধন করেছে গ্রীক কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে বেশিরভাগকে সামান্য খাবার ও সুবিধা দিয়ে শোচনীয় অবস্থায় ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। আর এমনই একটি ক্যাম্প হলো এমিগদালেজা শিবির। ‘হোয়াই আর ইউ কিপিং মি হেয়ার? : আনএ্যাকম্প্যানিড চিলড্রেন ডিটেনশন ইন গ্রীস’ শিরোনামে ২৭ পৃষ্ঠার ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিধিবহির্ভূতভাবে দীর্ঘদিন ধরে শিশুদের আটকে রেখে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করছে গ্রীস। এই শিশুদের অস্বাস্থ্যকর অবস্থায়, কখনও অপরিচিত প্রাপ্ত বয়স্কের সঙ্গে পুলিশ স্টেশন ও ডিটেনশন সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছে, যেখানে শিশুদের মৌলিক যতœ ও সেবার ন্যূনতম সুবিধাও নেই। গ্রীসের মূল ভূখ-ের দুটি পুলিশ স্টেশন ও দুটি ডিটেনশন সেন্টার পরিদর্শনসহ আটক ছিল ও রয়েছে এমন ৪২ শিশুর সাক্ষাতকারের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। কাটাতারের বেড়া ও সশস্ত্র রক্ষী থাকলেও এমিগদালেজা শিবিরের ভেতরের হৈ হুল্লোড় শুনে মনে হয় এটি কারাগার নয়, এটি একটি স্কুল। এথেন্সের উত্তর-পশ্চিমের একেবারে প্রান্তে অবস্থিত পুলিশ এ্যাকাডেমিটি প্রাথমিকভাবে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য শিবির তৈরি করা হয়। সেখানে বর্তমানে ৪০টির বেশি অভিভাবকহীন শিশু রয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজন ১২ বছর বয়সী শিশুও রয়েছে। এদের সবাই ছেলে এবং তারা এসেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ও দারিদ্রপীড়িত আলজিরিয়া, সিরিয়া, তিউনিশিয়া, পাকিস্তান ও ইরাকের মতো দেশ থেকে। শিবিরের ১৪ বছর বয়সী সিরীয় এক কিশোর আহমেদ কামশলি বলে, এখানে কেউ থাকতে চায় না। এখানে অনেকে আছে, যারা দীর্ঘদিন ধরে শিবিরে রয়েছে। এখানকার খাবার খুব খারাপ এবং এখানে ইঁদুরও আছে। গ্রীক সীমান্ত পার হওয়া ১০ লাখের বেশি শরণার্থীর মধ্যেই এই শিশুদের অবস্থা সবচেয়ে বেশি করুণ এবং তাদের কথা সবাই ভুলে গিয়েছে। শরণার্থী শিবিরের দুর্দশার কথা স্বীকার করে শিবিরটির পুলিশ কর্মকর্তা স্তাথিস সিদোরোপৌলোস জানান, আমাদের দাবি ও চাহিদার কথা জানিয়েছি। যদি আমাদের দেশ দেউলিয়া না হত তাহলে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত থাকতে পারতাম এবং তারাও এখানে থাকতো না। এই শিশুদের প্রায় সারাদিন কিছুই করার নেই। খেলাধুলা তাদের কিছুটা সাহায্য করে। আমাদের এই শিবিরে ম্যাট্রেস, বালিশ, তোশক ও সাবান প্রয়োজন। আসলে আমাদের প্রায় সবকিছুই দরকার। আমরা এই যে সব কিছু বলছি, কিন্তু কেউ আমাদের কথা শুনতে চায় না।- গার্ডিয়ান
×