ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দীর্ঘ ১৩ বছর পর পুরো কমিটি ঘোষণা

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

প্রকাশিত: ০৫:২১, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ দুই কমিটি অনুমোদন দেন। উভয় কমিটিতে ৬৯ কার্যনির্বাহী সদস্যের সঙ্গে উত্তরে নয় সদস্যের এবং দক্ষিণে ছয় সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ রাখা হয়েছে। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ ধরে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেয়া সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এমপিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উপদেষ্টা পরিষদের এক নম্বর সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। আর উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হককে উত্তর শাখার উপদেষ্টা পরিষদে রাখা হয়েছে। আর এ কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে দীর্ঘ ১৩ বছর পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি পেল নগর আওয়ামী লীগ। রবিবার আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা রবিবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের কমিটি অনুমোদন করেছেন। চলতি বছরের ১০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আলাদা কমিটি ঘোষণা করেন। কমিটিতে মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকা মহানগরীর মূল কমিটির পাশাপাশি ৪৯ থানা ও ১০৩ ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামও ঘোষণা করা হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগে এ কে এম রহমত উল্লাহ এমপি সভাপতি ও সাদেক খানকে আগেই সাধারণ সম্পাদক করা হয়। দক্ষিণের সভাপতি হয়েছেন হাজী আবুল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন শাহে আলম মুরাদ। ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। এর সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় পর এই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হলো। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে তিন বছর পর পর সম্মেলন হওয়ার কথা। ঢাকা মহানগর উত্তরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব) ফারুক খান এমপি এবং দক্ষিণের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি। ঢাকা মহানগর উত্তরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ॥ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি করা হয়েছে আলহাজ এ কে এম রহমত উল্লাহকে ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে সাদেক খানকে। এছাড়া সহ-সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল (এমপি), আসলামুল হক (এমপি), আজিজুর রহমান বাচ্চু, মোঃ নাজিম উদ্দিন, জাহানারা বেগম, মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ ও খন্দকার রফিকুর রহমানকে। এ কমিটিতে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়েছেন এস এম মান্নান কচি, কাদের খান ও হাবিব হাসান। এছাড়া কমিটিতে আইন বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন এ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক এম এ এম রাজু আহমেদ। তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মজুমদার। এছাড়া ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এস এম মাহবুব আলম, দফতর সম্পাদক এম সাইফুলাহ সাইফুল, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ সুফী সুলতান আহমেদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, বন ও পরিবেশ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা এস এম তোফাজ্জল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল আনাম ভুঁইয়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহেরুন্নেসা মেরী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম খান, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আবদুল গফ্ফার, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক এ জাফর নিজামী, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ বরকত খান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইকবাল খান চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ পেয়েছেন কর্নেল (অব) ডা. কানিজ ফাতেমা। সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ ফকির মহিউদ্দিন আহমেদ, মোক্তার সরদার ও জহিরুল হক জিলু। সহ-দফতর সম্পাদক শাহরুখ খান মিরাজ, সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুল হক রানা এবং কোষাধ্যক্ষ মোঃ ওয়াকিল উদ্দিন। এ কমিটির কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা হলেন ওসমান গনি, আব্বাস উল্লাহ শিকদার, এ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক, মুক্তিযোদ্ধা সফিউদ্দিন, লিয়াকত আলী, রাবেয়া আক্তার ডলি, এ কে এম দেলোয়ার হোসেন, শেখ মজিবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আহম্মদ পাইন, এ্যাডভোকেট মাহাবুব আলী, হাজী আব্দুল বাতেন, কাজী আবুল কালাম আজাদ, আলহাজ ইসরাফিল আশরাফ, অধ্যাপক এম. এ. হামিদ (মুক্তিযোদ্ধা), আলহাজ মুজিব সারোয়ার মাসুম, আলহাজ এম. এ. সেলিম খান, এম এ হান্নান, হাজী বশির উদ্দিন আহম্মেদ, রফিকুল ইসলাম বেপারী, হাজী আব্দুল ওয়াসেক, আবুল কাশেম, আমির হোসেন মোল্লা (শাহ আলী), আব্দুল গফুর মিয়া, আইয়ুব আকরাম মুকুল, আফছার উদ্দিন খান, মিজানুর রহমান (চাঁন), মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান সাচ্চা, মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আল আজাদ মাস্টার, ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ারুল ইসলাম (আনোয়ার), ডাঃ মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল), ইঞ্জিনিয়ার সালাম চৌধুরী ও আলহাজ ইসমাইল হোসেন। উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন- কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, এ্যাডভোকেট সুরুজ্জামান সরদার, মুকুল চৌধুরী, আব্দুল আউয়াল সিদ্দিকী, ফয়েজ উদ্দিন মিয়া, ডাঃ এইচ বি এম ইকবাল, পীরজাদা সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন, এ্যাডভোকেট খন্দকার মেহবুব আলম ও মেয়র আনিসুল হক। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ॥ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি করা হয়েছে হাজী আবুল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে মোঃ শাহে আলম মুরাদকে। সহ-সভাপতির পদ পেয়েছেন আবু আহাম্মেদ মান্নাফী, নজিবুল হক সরদার, আওলাদ হোসেন, হুমাযুন কবির, আবুল বাশার, আলমগীর চৌধুরী, নূরুল আমিন রুহুল, খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, অধ্যক্ষ এস এন রায় সমর। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়েছেন কামাল চৌধুরী, আবদুল হক সবুজ ও ডা. দিলীপ রায়। আইন বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ ফোরকান মিয়া, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক নাঈম নোমান, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম মিলন। এছাড়া দফতর সম্পাদক পদে গোলাম রব্বানী বাবলু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এ এফ এম আব্দুল হক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আকতার হোসেন, বন ও পরিবেশ সম্পাদক শেখ রইসুল আলম ময়না, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ওমর বিন আজিজ তামিম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট তাহমিনা বেগম, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোশারফ হোসেন, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক শেখ সেকান্দার আলী, শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক মেজবাহুল রহমান ভূঁইয়া রতন, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক নাসির, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মীর মনির হোসেন টুটুল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সালাউদ্দিন বাদল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডাঃ নজরুল ইসলাম। সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, আশরাফ হোসেন তালুকদার ও কাজী মোর্শেদ কামাল। সহ-দফতর সম্পাদক মিরাজ হোসেন, সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মামুনুর রশিদ শুভ্র এবং কোষাধ্যক্ষ ইমতিয়াজ জামিল লাভলু। কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ঢাকা দক্ষিণের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, হাজী মোঃ সেলিম এমপি, বাচ্চু মিয়া, শরফুদ্দীন সেন্টু, মির্জা আবদুল খালেক, কবির উদ্দিন আহাম্মেদ, আবুল কালাম আজাদ, ডাঃ মোশারফ হোসেন, এস কে বাদল, মাসুদ সেরনিয়াবাত, লিয়াকত আলী খান, জহিরুল আলম, সাজেদা খানম, জাহানারা বেগম রোজী, আহসান উল্লাহ খান মনি, ইঞ্জিনিয়ার লুৎফুর রহমান, নির্মল গোস্বামী, মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু, ফজলে রাব্বী, আনিস আহম্মেদ, আব্দুল মতিন হাওলাদার, জোবায়দুল হক রাসেল, নাছিমা আহাম্মেদ, সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলী, নাজমুল হক, সফিকুল ইসলাম দিলু, মাহবুবর রহমান আলীজান, মজিবুর রহমান, মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ, এবিএম সিরাজুল ইসলাম, মনসুর আহমেদ ও জসীম উদ্দীন খান আজম। উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এমপি, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এমপি, রফিকুল ইসলাম রফিক, মোল্লা মুজিবুর রহমান, হাবিবুর রহমান মোল্লা এমপি ও গাজী লুৎফর রহমান কবির (রেনু)। উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০০৩ সালের ১৮ জুন সম্মেলনের মাধ্যমে মেয়র মোহাম্মদ হানিফকে সভাপতি ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমকে সাধারণ সম্পাদক করে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ২০০৬ সালের ২৮ নবেম্বর হানিফের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন এমএ আজিজ। তবে সেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ রূপ নিতে পারেনি। ২০০৮ সালে দল ক্ষমতায় আসার পরপরই সংগঠনকে গতিশীল করতে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে দুই ভাগে বিভক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়। এ জন্য ড. আবদুর রাজ্জাক ও লে. কর্নেল (অব) ফারুক খানকে দায়িত্ব দেয়া হয় কমিটি সমন্বয় করতে। কিন্তু হঠাৎ করেই এম এ আজিজের মৃত্যুর কারণে দক্ষিণের সভাপতি খুঁজতে কিছুটা পিছিয়ে যায় কমিটি ঘোষণা। উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নাম ঘোষণার ৫ মাস পর অবশেষে পূর্ণাঙ্গ রূপ পেল ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আওয়ামী লীগের কমিটি।
×