ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সঙ্গী হবে ঈদ আনন্দের

থিমপার্ক সিনেমা হলসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

থিমপার্ক সিনেমা  হলসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত

মোরসালিন মিজান ॥ ঢাকা, হ্যাঁ, মোটামুটি ফাঁকা। বহু মানুষ শহর ছেড়ে গেছেন। এখন রাস্তাগুলো আরও বড় মনে হয়। যে যার মতো করে ঘুরছেন। সামান্য সবুজ, চোখ ভরে দেখা যায়, দেখছেন। এভাবে ঈদের আগেই ঈদের একটা আবহ তৈরি হয়ে গেছে। কোরবানি ঈদ যেহেতু, বিশেষ ব্যস্ততা থাকবে। থেমে থাকবে না বেড়ানোও। ঈদের পরদিন অনেকেই বের হবেন। পরবর্তী দিনগুলোতে আড্ডা হৈ হুল্লোড় বেড়ে কয়েকগুণ হয়ে যাবে। সর্বত্রই সে প্রস্তুতি। প্রস্তুত থিমপার্ক বিনোদন কেন্দ্র ও রেস্তরাঁগুলো। এবার ঈদের সরকারী ছুটি ছয় দিন। প্রথম দু’ একদিন অনেকেই আত্মীয় পরিজনের বাসায় বেড়াবেন। দাওয়াত খাবেন, খাওয়াবেন। আর তার পর দলবেঁধে শহর ঘুরে বেড়ানো। বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হওয়া। এখন ঈদের ছুটিতে বিভিন্ন শপিংমল ও রেস্তরাঁ খোলা থাকে। বিভিন্ন বয়সী মানুষ এসব স্থানে আনন্দঘন সময় কাটান। প্রিয় খাবার ও সিনেমা বসুন্ধরা সিটিতে ॥ এই যেমন বসুন্ধরা সিটি শপিংমলের ফুটকোর্ট খোলা থাকবে ঈদে। এখানে অনেক খাবারের দোকান। দোকানের সামনে খোলা জায়গায় চেয়ার টেবিল পাতা। পছন্দের খাবার খেতে খেতে দারুণ আড্ডা জমবে। সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছে দোকানগুলো। বসুন্ধরার ঈদ আয়োজনের প্রধানতম অনুষঙ্গ সিনেমা। স্টার সিনেপ্লেক্সের সবকটি হলে সিনেমা চলবে। হলিউডের জনপ্রিয় মুভি থাকবে যথারীতি। সেইসঙ্গে রাখা হচ্ছে দেশীয় সিনেমা। ঢাকা শিশুপার্ক ॥ ঈদে যথারীতি খোলা থাকবে শিশুপার্ক। বাবা-মায়ের হাত ধরে আসবে শিশুরা। তাদের আনন্দের সঙ্গে একাত্ম হয়ে শিশুপার্কে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। পার্কের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, শিশুপার্কে বর্তমানে ১০টি রাইড রয়েছে। ঈদের প্রথম চার দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে পার্ক। প্রবেশমূল্য ৮ টাকা। তিনি জানান, ঈদে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা এখানে বিনা টিকেটে প্রবেশ করতে পারবে। বিভিন্ন রাইড উপভোগ করতে পারবে। এখন অনেক আধুনিক বিনোদন কেন্দ্র হলেও শিশুপার্কের দর্শনার্থী কমেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদে প্রতিদিন গড়ে ৫০ হাজার দর্শনার্থী আসেন। চিড়িয়াখানা ॥ ঈদের ছুটিতে রাজধানীবাসীর অন্যতম প্রধান গন্তব্য হয়ে ওঠে চিড়িয়াখানা। পরিবার পরিজন নিয়ে সেখানে আনন্দঘন সময় কাটান অসংখ্য মানুষ। এবারও দর্শনার্থীদের ঢল নামবে মিরপুরে। প্রতিদিনের মতোই সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে চিড়িয়াখানা। প্রবেশমূল্য ২০ টাকা। চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডাঃ এনায়েত হোসেন জানান, ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ দর্শনার্থী চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করেন। তাঁদের সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে বেশ কয়েকটি কমিটি। চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি থাকবে র‌্যাবের টহল। জাতীয় জাদুঘর ॥ ঈদ উপলক্ষে প্রস্তুত জাতীয় জাদুঘর। প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী জানান, রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে জাদুঘর। বুধ বৃহস্পতি ও শুক্রবার জাদুঘর খোলা থাকবে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। ওই তিনদিন শিশু কিশোর, শিক্ষার্থী ও প্রতিবন্ধীরা বিনা টিকেটে জাদুঘর পরিদর্শন করতে পারবে বলে জানান তিনি। শিশুমেলা ॥ শ্যামলীর শিশুমেলা আশপাশ এলাকার শিশু কিশোরদের প্রধান বিনোদন কেন্দ্র। এখানে আছে ৪০টির মতো রাইড। পরিবারের সকলের চড়ার মতো আছে ১২টি রাইড। শিশুমেলা কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের প্রথম সাত দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এটি খোলা থাকবে। ফ্যান্টাসি কিংডম ॥ থিমপার্কগুলোর মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয় ফ্যান্টাসি কিংডম। ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় গড়ে উঠেছে আধুনিক এই বিনোদন কেন্দ্র। ঈদে এখানে ঢল নামবে দর্শনার্থীদের। পার্কের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের প্রথম সাত দিন সকাল থেকে খোলা থাকবে ফ্যান্টাসি কিংডম। বড়দের প্রবেশমূল্য ২৫০ টাকা। ছোটদের ১৫০ টাকা। প্রবেশসহ সব রাইডে চড়তে চাইলে বড়দের জন্য ৪৫০ এবং ছোটদের জন্য ২৫০ টাকার টিকেট সংগ্রহ করতে হবে। বাড়তি ২৭০ টাকার টিকেট কেটে সাঁতার কাটা যাবে ওয়াটার কিংডমে। একই সঙ্গে ওয়েভপুল, লেজি রিভার, টিউব সøাইড, ওয়াটারপুলসহ বিভিন্ন রাইডে চড়া যাবে। নন্দন পার্ক ॥ ঢাকা থেকে সামান্য দূরে হলেও, প্রচুর মানুষ ঈদের ছুটিতে নন্দন পার্কে যান। পার্কের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জুবায়েদ জানান, ঈদের দিন সাড়ে ১২টা থেকে খোলা থাকবে পার্ক। প্রবেশ মূল্য ২৭০ টাকা। ওয়াটার ওয়ার্ল্ড ও ড্রাই পার্কে ২৭টি রাইড উপভোগ করা যাবে। প্রতিটির জন্য আলাদা করে টিকিট কাটতে হবে। প্যাকেজও আছে। প্যাকেজের আওতায় খাবার ও সবকটি রাইড চড়া যাবে ৮৫০ টাকায়। খাবার ছাড়া হলে খরচ হবে ৬৫০ টাকা। ঈদের পরবর্তী দিনগুলোতে পার্কে লাইভ মিউজিক, ডিজে, ড্যান্স শো ইত্যাদির আয়োজন থাকবে বলে জানান তিনি। হেরিটেজ পার্ক ॥ ফ্যান্টাসি কিংডমের পাশেই হেরিটেজ পার্ক। এখানে দেখা যাবে বেশি কিছু ঐতিহাসিক স্থাপনা। রেপ্লিকা ধরনের হলেও নিদর্শনগুলো দেখে ভাল লাগবে দর্শনার্থীদের। পাশাপাশি চড়া যাবে জায়ান্ট ফেরিস হুইল, পাইরেট শিপ, ড্রাই সøাইড, কফি কাপ, ব্যাটারি কার, ফ্যামিলি ট্রেনসহ বিভিন্ন রাইডে। এ সবের বাইরে ছোট-বড় আরও বহু বিনোদন কেন্দ্রে ঈদ উদযাপনের বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। আর ঘুরে বেড়ানোর জন্য তো থাকছে গোটা শহরটাই! ফাঁকা ঢাকা সঙ্গী হবে ঈদ আনন্দের।
×