ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হত্যা নয় সত্যাগ্রহ ॥ সর্বোচ্চ ত্যাগের কোরবানি কাল

প্রকাশিত: ০৫:১২, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

হত্যা নয় সত্যাগ্রহ ॥ সর্বোচ্চ ত্যাগের কোরবানি কাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ত্যাগের মহিমা ও খুশির বার্তা নিয়ে দুয়ারে কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। এখন অপেক্ষা কেবল রাত পোহানোর। আগামীকাল মঙ্গলবার সূর্যাস্তের পরই ঈদের খুশিতে রঙিন হয়ে উঠবে গোটা দেশ। মুসলমনরা তাঁদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদের নামাজ আদায় করে যার যার সাধ্যমতো পশু কোরবানি করবেন। এর মাধ্যমে আল্লাহ্র প্রতি অপার আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবেন। কোরবানির মধ্য দিয়ে নিজের ভেতরের পশুত্বকে পরিহার করা ও হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর মহান আত্মত্যাগের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মঙ্গলবার সকালেই মুসলমানরা নিকটস্থ ঈদগাহ বা মসজিদে ঈদ-উল-আযহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করে পশু কোরবানি করবেন। ঈদের নামাজের খুতবায় তুলে ধরা হবে কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে একত্রে নামাজ আদায় করবেন। শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন কোলাকুলির মাধ্যমে। ঈদ-উল-আযহা সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছেই অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এ ঈদের বিশেষ গুরুত্ব হলো, এ মাসেই মুসলমানদের মূল পাঁচটি ধর্মীয় স্তম্বের একটি পবিত্র হজ পালিত হয়। রবিবার সেই পবিত্র হজও পালিত হয়েছে। হজ শেষে সোমবার সৌদি আরবে ঈদ উদযাপন করছেন হাজিরা। জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে আগেই ঈদের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর বা ১০ জিলহজ আগেই নির্ধাারিত হয়েছে। ঈদের আয়োজন গুছিয়ে আনতে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ভোগান্তি মাথায় নিয়ে ইতোমধ্যে রাজধানী ছেড়েছে অসংখ্য মানুষ। যাদের এখনও কোরবানির পশু কেনা হয়নি তারা আজকের মধ্যেই পছন্দ মতো পশু কেনার কাজ শেষ করবেন। ঈদ-উল-আজহার দিন ও পরের ২ দিন পশু কোরবানি করার বিধান আছে। তবে সবাই চেষ্টা করে ঈদের দিন পশু কোরবানি দিতে। প্রায় ৪ হাজার বছর আগে আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সেই ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় প্রতিবছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকেন। ঈদ-উল-আযহাকে ঘিরে ইতোমধ্যেই সারাদেশে শুরু হয়েছে আনন্দের বন্যা। আল্লাহর নামে পশু কোরবানি করতে যে যার সাধ্যমতো প্রস্তুতিও নিয়েছে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের এই আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছেড়ে গেছে প্রায় ৪০ লাখ লাখ মানুষ। আজ মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা ছাড়বে আরও অনেকে। ইসলামী বিধান অনুযায়ী ঈদ-উল-আজহার দিন বা তার ২দিন পর কোরবানি মানে আত্মার পরিশুদ্ধি ও আত্মত্যাগ। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বৈধ পথে উপার্জিত অর্থের মাধ্যমে পশু কেনা, জবাই করে ভক্ষণ করা, অপরের জন্য মাংস বণ্টনের মাধ্যমে নিজের আনন্দ ও স্বার্থকে অন্যের সঙ্গে অংশীদার ও ভাগাভাগি করে মানবতা প্রতিষ্ঠা করা। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘নফসের বিরুদ্ধে জিহাদই সর্বোৎকৃষ্ট জিহাদ’। আল্লাহ বলেন, ‘মুমিনের সর্বাধিক প্রেম হবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। এ প্রেম অর্জন করতে হলে আত্মার পরিশুদ্ধি প্রয়োজন। আর আত্মার পরিশুদ্ধির জন্য মনের পশু শক্তিকে কোরবানি করতে হয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে- অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকিদের কোরবানি কবুল করেন’ (সূরা : মায়িদা, আয়াত : ২৭)। ইসলামী বিশেষজ্ঞদের মতে, ঈদ-উল-আযহার অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে, মনের পশু অর্থাৎ কু-প্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করা। জাতীয় কবির ভাষায় : মনের পশুরে কর জবাই, পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই...’। পবিত্র হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, প্রতিবছর জিলহজ মাসের দশ তারিখে বিশ্ব মুসলিম ময়দানে নামাজ আদায়ের পর যার যা সাধ্য ও পছন্দ সেই অনুযায়ী পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। আরবী ‘আযহা’ এবং ‘কোরবান’ উভয় শব্দের অর্থ হচ্ছে উৎসর্গ। কোরবানি শব্দের উৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে আত্মত্যাগ, আত্মোৎসর্গ, নিজেকে বিসর্জন, নৈকট্য লাভের চেষ্টা ও অতিশয় নিকটবর্তী হওয়া। গরু, মহিষ, উট, ছাগল, ভেড়া, দুম্বাÑ এই শ্রেণীর অন্য প্রাণী কোরবানি করা যায়। কোরবানিকৃত পশুর ৩ ভাগের ১ ভাগ গরিব-মিসকিন, একভাগ আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বিলিয়ে দেয়ার বিধান রয়েছে। আল কোরানে এই মহিমান্বিত ত্যাগের ঘটনার বর্ণনায় বলা হয়েছে, ‘অতঃপর সে (ইসমাইল) যখন পিতার সঙ্গে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হলো তখন ইব্রাহীম (আঃ) তাকে বললেন, হে বৎস! আমি স্বপ্ন দেখেছি তোমাকে কোরবানি করছি। এখন তোমার অভিমত কী? সে বললো, হে পিতা, আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে তাই করুন। যখন পিতা-পুত্র উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করলেন এবং ইব্রাহীম (আঃ) তাকে জবাই করার জন্য শায়িত করলেন তখন আমি তাকে ডেকে বললাম, হে ইব্রাহীম! তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখালে। আমি এভাবেই সৎ কর্মীদের প্রতিদান দিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই এটা সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তার পরিবর্তে জবাই করার জন্য দিলাম এক জন্তু। কোরবানি উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি এলাকায় গবাদি পশুর হাট জমে উঠেছে। যে যার সাধ্যমতো কোরবানি দিতে হাটে ভিড় করছেন পছন্দের গরু, ছাগল, উট কিনতে। সবার গন্তব্য হয়ে উঠেছে পশুর হাট। পছন্দের পশু কিনে গলায় মালা পরিয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দের সঙ্গে ঘরে ফিরছেন। কোনবানির চাহিদার প্রতি লক্ষ রেখেই এবারে পশুর হাটে দেশীয় গরুর চাহিদা বেড়ে গেছে। সহজেই যে যার সাধ্যমতো কোবানির পশু কিনছেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যার ব্যুরোর হিসাব মতে, এবার দেশে ৪০ থেকে ৫০ লাখ গবাদি পশু কোরবানি করা হবে। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে কর্মজীবী মানুষ। আজ সোমবারও ঘরে ফেরার যাত্রা অব্যাহত থাকবে। ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তি দূর করতে ঈদের আগেই একদিন সরকারী ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাড়তি একদিনের ছুটি পেয়েই কর্মস্থল থেকে গ্রামের বাড়িতে ছুটেছে ঘরমুখী মানুষ। নৌপথ, রেলপথ, সড়কপথে ঘরে ফেরা মানুষের পদচারণায় এখন মুখরিত। বাংলাদেশ রেলওয়ে, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) এবং অন্যান্য বেসরকারী সংস্থা বিপুলসংখ্যক যাত্রীর যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। এজন্য তারা আগেই অগ্রিম টিকেট বিক্রি করেছে। তাই একটু ভোগান্তি হলেও সবাই কষ্টটা মেনে নিয়েই ছুটে চলছে প্রিয়জনের পানে। ঘরে ফেরার যাত্রা ও কোরবানির ঈদকে নির্বিঘœ করতে সরকারের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পহেলা জুলাই রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি ও শোলাকিয়া ঈদগাহ্ মাঠে জঙ্গী হামলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আসন্ন ঈদ-উল-আযহায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার কথ জানানো হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পক্ষ থেকে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঈদ উপলক্ষে দেশব্যাপী কয়েক স্তরে, বিভিন্ন কৌশলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের বড় বড় ঈদ জামাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রত্যেকটি বাহিনী আলাদা আলাদা পরিকল্পনা নিয়েছে। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। ঈদকে কেন্দ্র করে কোন সন্ত্রাসী যেন নাশকতা চালাতে না পারে সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদের যাত্রা নির্বিঘœ করতে ইতোমধ্যে রাজধানীর কল্যাণপুর গাবতলীসহ বিভিন্ন স্পটে পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার তৈরি করা হয়েছে। ঈদের নামাজ শেষেই কোরবানি করার বিধান রয়েছে। তাই দলে দলে মুসল্লিরা আগে ঈদের নামাজে শরিক হবেন। অন্যবারের ন্যায় এবারও দেশের প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল ৮টায়। এদিকে রাষ্ট্রপতি এ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান হয়েছে। তাঁরা দেশবাসীকে পবিত্র ঈদ-উল-আযহার শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি মুসলিম উম্মার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন এবং কোরবানির মহান ত্যাগে বলীয়ান হয়ে দেশ সেবায় আত্মনিয়োগ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান। পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় ও ঈদ মোবারক খচিত পতাকা দিয়ে সুশোভিত করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঈদের দিন সকল সরকারী-বেসরকারী ভবনেও জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক খচিত পতাকা উত্তোলন করা হবে। কারাগার, হাসপাতাল, ভবঘুরে কেন্দ্র, বৃদ্ধাশ্রম, শিশু সদনে উন্নত মানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এবার ঢাকা সিটি করর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কোরবানির জন্য ৭ শতাধিক স্থান নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। ইতোমধ্যে কোরবানির বর্জ্য বিশেষ স্থানে ফেলতে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে লিফলেটের মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়। জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত ॥ ঈদ-উল-আযহায় দেশের প্রধান ঈদের জামাত সকাল ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকলে ঈদের প্রধান জামায়াত সকাল সাড়ে আটটায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে বলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। প্রধান ঈদের জামাতে শরিক হবেন রাষ্ট্রপতি এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতি, সংসদ সদস্যসহ সব শ্রেণী পেশার মনুষ এতে অংশ নেবেন। ঢাকায় উচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থিত জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ আশপাশের এলাকায় এ উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান জামায়াতে মহিলাদেরও ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এবারে ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মিজানুর রহমান। রবিবার বেলা ১১টায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠের শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি দেখতে গিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ঈদের নামাজ আদায়ে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মঙ্গলবার সকাল আটটায় ঈদের প্রধান জামাত আদায় করা হবে। আর আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকলে অর্থাৎ বৃষ্টি হলে সকাল সাড়ে আটটায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, ঈদের প্রধান জামাতকে কেন্দ্র করে জাতীয় ঈদগাহ মাঠের চারপাশে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এই মাঠে এক সঙ্গে ৮৯ হাজার মুসল্লি নাজাম আদায় করতে পারবেন। নারীদের জন্যও পৃথক ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেখানে প্রায় ৫ হাজার নারী নামাজ আদায় করতে পারবেন। এ ছাড়া মুসল্লিদের নামাজের অজু করার জন্য ১৪০টি পানির কল স্থাপন করা হয়েছে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ৫টি ঈদের জামাত ॥ ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, এবারও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এখানে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। এছাড়া দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায়, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায়, পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে বেলা পৌনে ১১টায়। ইমামতি করবেন প্রথম জামাতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী, দ্বিতীয় জামাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস মাওলানা ওয়ালীয়ুর রহমান খান, তৃতীয় জামাতে মহাখালী হোসাইনিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা নজরুল ইসলাম আল মারুফ, চতুর্থ জামাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতী মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক হাফেজ মাওলানা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ঈদ-উল-আযহার নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের সুবিধার্থে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যাপ্ত পানি ও নিñিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। জাতীয় সংসদ প্লাজায় ঈদ জামাত ॥ এবারও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৭টায় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ ঈদ জামাতে হুইপ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার মুসল্লিরা অংশ নেবেন। জাতীয় সংসদের গণসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আহলে হাদিস ঈদ জামাত ॥ পুরান ঢাকাসহ এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় আহলে হাদিসের ঈদ-উল-আযহার প্রধান জামাত সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে বংশাল বড় জামে মসজিদ কমিটির ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হবে। এতে খুতবা প্রদান ও ইমামতি করবেন বংশাল আহলে হাদিস বড় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আলহাজ মোস্তফা বিন বাহাউদ্দিন আস সালাফি। তবে যদি বৃষ্টি হয়, তহলে বংশাল বড় জামে মসজিদে সকাল ৮টা ও ৯টায় ঈদ-উল-আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান বাংলাদেশ জমিয়তে আহলে হাসিদের সহসভাপতি মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন। ঢাকা ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাত ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জমিয়ায় ঈদ-উল-আযহার দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এখানে প্রথম জামাত সকাল ৮টায় এবং দ্বিতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সল্লিমুল্লাহ হল প্রধান গেট সংলগ্ন মাঠে এবং শহীদুল্লাহ হল লনে ঈদ-উল-আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে ৬টা ৪৫ মিনিটে। আবহাওয়া অনুকূল না থাকলে সকাল ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে ঈদের জামাত ॥ ফরিদপুরের বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে সকাল ১০টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ৬৯ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ মহাজামাতে ১০ লাখ মুসল্লি শরিক হবেন বলে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এছাড়া সেখানে ঈদের জামাত শেষে মক্কার মিনার আদলে তিন দিনব্যাপী পশু কোরবানি হবে। দেওয়ানবাগ শরীফ ॥ রাজধানীর বাবে রহমত, দেওয়ানবাগ শরীফে ৩টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করবেন সুফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী হুজুর। এছাড়া সেখানে সকাল ৯টায় দ্বিতীয় ও সকাল ১০টায় তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার অন্যান্য ঈদের জামাত ॥ নয়াপল্টন জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া গেন্ডারিয়া ধূপখোলা মাঠ, এলিফ্যান্ট রোড এরোপ্লেন মসজিদ, পল্লবী ৬ নম্বর সেকশন মসজিদ, কামরাঙ্গীরচর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে সাড়ে ৭টায়, মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের হারুন মোল্লা ঈদগাহ, পার্ক ও খেলার মাঠে সকাল সাড়ে ৭টায়, মিয়া সাহেব ময়দান খানকা শরীফ জামে মসজিদ ৭টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। মোহাম্মদপুর জামে মসজিদ কমপ্লেক্সে সকাল সাড়ে ৭টায়, মিরপুর সেকশন ১২/ডি ব্লকের মাঠে সকাল ৭টায়, রসুলবাগ জামে মসজিদে প্রথম জামাত ৭টায়, মানিকনগর পুকুরপাড় জামে মসজিদে প্রথম জামাত সাড়ে ৭টায়, সায়েদাবাদ আরজুশাহ পাক দরবার শরীফ বড় জামে মসজিদের প্রথম জামাত সাড়ে ৭টায়, আবুজর গিফারী কলেজ মাঠ, কল্যাণপুর হাউজিং এস্টেট মসজিদ ও মদিনাবাগ কেন্দ্রীয় মসজিদে সাড়ে ৭টা, পল্লীমা সংসদ ময়দানে ঈদ জামাত সকাল ৮টায়, দারুস সালাম মীর বাড়ি আদি জামে মসজিদে সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৮টা ॥ কলাবাগান বশিরউদ্দিন রোড জামে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। এছাড়া বাউলিয়া পাড়া, কামরাঙ্গীরচর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ৮টায়, মানিকনগর পুকুরপাড় জামে মসজিদে দ্বিতীয় জামাত সাকাল ৮টায়, রসুলবাগ জামে মসজিদে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায়, সায়েদাবাদ আরজুশাহ পাক দরবার শরীফ বড় জামে মসজিদের দ্বিতীয় জামাত সাড়ে ৮টায়, নুরানী জামে মসজিদ লক্ষ্মীবাজার ৮টায়, লক্ষ্মীবাজার নূরানী মসজিদ ও মগবাজার বিটিসিএল কলোনি জামে মসজিদে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা ॥ সায়েদাবাদ আরজুশাহ পাক দরবার শরীফ বড় জামে মসজিদের তৃতীয় জামাত সাড়ে ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
×