ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে অনুদানের ঘোষণা শ্রম মন্ত্রণালয়ের ;###;রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক;###;তিনটি তদন্ত কমিটি

হত ২৪ আহত ৫০ ॥ এবার টঙ্গীতে বয়লার বিস্ফোরণ

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

হত ২৪ আহত ৫০ ॥ এবার টঙ্গীতে বয়লার বিস্ফোরণ

আরাফাত মুন্না, মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, নূরুল ইসলাম ॥ গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরীতে একটি প্যাকেজিং কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে টঙ্গী সরকারী হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩৫ জন চিকিৎসাধীন। শনিবার ভোর ৬টার দিকে টাম্পাকো ফয়েলস নামে ওই কারখানায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়। মুহূর্তে পুরো ভবনেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের পর পরই ভবনের বেশিরভাগ অংশ ধসে পড়ে। মর্মন্তিক এই দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিহতদের কেউ কেউ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আগুনে কারখানার কাঠামো ভেঙ্গে পড়ে তার নিচে চাপা পড়েও মারা গেছেন কেউ। এছাড়া বিস্ফোরণের সময় ওই ভবনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কেউ কেউ নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদিকে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ করে টাকা অনুদান দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গাজীপুর জেলা প্রশাসন নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে এবং আহতদের ৫ হাজার টাকা করে দিচ্ছে। কারখানার মালিক সিলেটের সাবেক বিএনপি সংসদ সদস্য সৈয়দ মোঃ মকবুল হোসেন হতাহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া এই দুর্ঘটনায় আহতদের যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয় সরকার বহন করবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ জাহিদ মালিক। এই ঘটনা তদন্তে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। অন্যদিকে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। কারখানার মালিক মকবুল জানান, ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত তার এই কারখানায় সাড়ে ৪শ’র মতো শ্রমিক রয়েছেন। সবার ঈদের বোনাসসহ বেতন-ভাতা কয়েকদিন আগেই পরিশোধ করা হয়েছিল। শুক্রবার রাতের পালায় ৭৫ জনের মতো কাজ করছিলেন। শনিবার ঈদের ছুটি হওয়ার কথা ছিল। সকাল ৬টায় আগুনের খবর পেয়ে জয়দেবপুর, টঙ্গী, কুর্মিটোলা, সদর দফতর, মিরপুর ও উত্তরাসহ আশপাশের ফায়ার স্টেশনের ২৫ ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে বলে জানান জয়দেবপুরের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান। ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, সকাল ৬টার দিকে কাজ চলার সময় নিচ তলায় বয়লার বিস্ফোরণের পর কারখানার পুরো ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকেও কারখানাটিতে আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছিল। তার আগে ভবনের একাংশের ছাদ ধসে পড়ে। আগুন নেভাতে গিয়ে সোহেল নামের এক দমকলকর্মী আহত হন। আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চললেও বাতাসের কারণে বেগ পেতে হচ্ছিল বলে জানান ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা। ভেতরে দেয়াল চাপা পড়ে কিংবা অগ্নিদগ্ধ হয়ে আর কেউ মারা গেছেন কিনা, তা আগুন পুরোপুরি নেভানোর আগে বলতে পারছেন না ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা। এদিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরির্দশনে আসেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক, গাজীপুর জেলা প্রশাসক এসএম আলম, গাজীপুর জেলা এসপি হারুন-অর-রশিদ, গাজীপুর জেলা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট মোঃ আজমত উল্লা খান, সিটি কর্পোরেশন মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) আসাদুর রহমান কিরন, ফায়ার সার্ভিসের জয়েন্ট সেক্রেটারি (এডমিন) আনিস মাহমুদ, মহাপরিচালক লে. কর্নেল মোশারফ, ফায়ার সার্ভিস হেড কোয়ার্টারের স্টেশন অফিসার সারোয়ার এ খান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ সুপার সোয়েব আহম্মেদ পিপিএম। হতাহত ॥ নিহতদের মধ্যে ১৭ জনকে নেয়ার পর তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করেন টঙ্গী হাসপাতালের চিকিৎসকরা। দুজনের মৃত্যু নিশ্চিত করেন উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক। পাঁচজনের মৃত্যু ঘটে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। টঙ্গী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মোঃ পারভেজ মিয়া জানান, হাসপাতালে ১৫ জনের লাশ আনা হয়েছিল। এছাড়া আহত ১২ জনকে চিকিৎসা দেয়া হয়। গুরুতর কয়েকজনকে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়। গাজীপুর সিভিল সার্জন ডাঃ আলী হায়দার খান জানান, নিহতদের মধ্যে ঢাকার নবাবগঞ্জের গোপাল দাস, একই এলাকার শংকর সরকার (ক্লিনার), পিরোজপুরের আল মামুন, চাঁদপুর মতলবের আব্দুল হান্নান (নিরাপত্তাকর্মী), কুড়িগ্রামের ইদ্রিস আলী, ভোলার দৌলতখান এলাকার জাহাঙ্গীর আলম (নিরাপত্তাকর্মী), টাঙ্গাইলের গোপালপুর এলাকার সুভাস চন্দ্র, ময়মনসিংহের ত্রিশাল এলাকার রফিকুল ইসলাম, একই জেলার ঈশ্বরগঞ্জ এলাকার আব্দুর রাশেদ (রিকশাচালক), কারখানার শ্রমিক সিলেটের গোপালপুর এলাকার ওয়ালি হোসাইন, একই এলাকার মোঃ সোলায়মান, সাইদুর রহমান, মাইন উদ্দিন ও এনামুল হক, ময়মনসিংহের ত্রিশালের মোঃ আনিসুর রহমান (প্রকৌশলী) ও পথচারী হবিগঞ্জের রোজিনার নাম জানা গেছে। অগ্নিকা-ের পরপরই কারখানার শ্রমিকদের স্বজনরা টঙ্গী ৫০ শয্যার হাসপাতালে গিয়ে ভিড় জমান। লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। অনেকে স্বজনদের খুঁজছিল। এ সময় স্বজনদের আর্তনাদে ভারি হয়ে ওঠে টঙ্গী সরকারী হাসপাতাল এলাকা। উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার সাব্বির আহমেদ জানান, সেখানে দুজনকে নেয়া হয়েছিল। তারা মৃত ছিলেন। লাশ তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছেন। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, এই হাসপাতালে আনার পর পাঁচজনের মৃত্যু নিশ্চিত করেন চিকিৎসকরা। তাছাড়া ভর্তি রয়েছেন আরও ১৯ জন, তারা সবাই পুরুষ। মৃত পাঁচজন হলেন- অপারেটর সিরাজগঞ্জের ওয়াহিদুজ্জামান স্বপন (৩৫), আনোয়ার হোসেন (৪০), দেলোয়ার হোসেন (৫০), তাহমিনা আক্তার ও আশিক (১২)। ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শঙ্কর পাল জানান, আহতদের মধ্যে চারজন তাদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। এরমধ্যে একজনের শরীরের ছয় ভাগ, আরেকজনের আট ভাগ পুড়েছে। একজনের শরীরের ৯০ ভাগ পুড়ে গেছে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। দেহের ছয় শতাংশ পুড়েছে শাহ আলমের (৪৬), দিলীপ দাসের (৩৬) পুড়েছে আট শতাংশ। রিপন দাসের (৩০) দেহের ৯০ ভাগ পুড়েছে। এছাড়া রাসেল খান (২৬) নামে একজন বার্ন ইউনিটে রয়েছেন। ভর্তি অন্যরা নানাভাবে আঘাত পেয়ে আহত হয়েছেন। তারা হলেন- রাসেল (২২), আনোয়ার (৫০), কামরুল (২৭), মনোয়ার (৩৫), মিজু মিয়া (২৫), ইকবাল (৩৫), আশিক (১২), শিপন (৩৫), শাহীন আকমল (৩০), রোকন (৩৫), কামরুল (২৭), প্রাণকৃষ্ণ (৩৮), অজ্ঞাত পুরুষ (৫০)। স্বজনদের আহাজারি ॥ টঙ্গীর টাম্পাকো ফয়েলস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনায় নিহত শ্রমিক ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের আহাজারিতে টঙ্গী শিল্প এলাকার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। এদিকে টঙ্গী সরকারী হাসপাতালে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে একের পর এক এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সাভির্সের পরিবহনযোগে হাসপাতালে আসতে থাকে কারখানায় অগ্নিকা-ে নিহত ও আহত শ্রমিকবাহী গাড়ি। নিখোঁজ রাশেদের বোন ফারজানা কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তার ভাই রাশেদ ভোরে রিকশা নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় তারপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। টঙ্গী বিসিক এলাকায় অগ্নিকা-ের খবর পেয়ে তিনি সেখানে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে রাশেদের বন্ধু খালেকের কাছে জানতে পারে রাশেদ রিকশা নিয়ে ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় বয়লার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন। এছাড়া নিহতদের লাশ শনাক্ত করে টঙ্গী সরকারী হাসাপাতালেও ভিড় জমায় স্বজনরা। তিনটি তদন্ত কমিটি ॥ গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরীর প্যাকেজিং কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণের পর অগ্নিকা-ে ২৪ জন নিহতের ঘটনা তদন্তে পৃথক তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার দুর্ঘটনার পর গাজীপুর জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস এবং কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর এ তদন্ত কমিটি গঠন করে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক আনিস মাহমুদ জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ বদিউজ্জামানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে ১০ কার্যদিবস সময় দেয়া হয়েছে বলে জানান। গাজীপুর জেলা প্রশাসক এসএম আলম জানান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রাহেনুল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক সৈয়দ আহাম্মদ জানান, উপ-মহাপরিদর্শক মোঃ শামছুজ্জামান ভূইয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ ॥ টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরীতে কারখানার বয়লার বিস্ফোরণ ও অগ্নিকা-ের ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারকে দুই লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। শনিবার দুপুরে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারকে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দুই লাখ টাকা করে অনুদান দেয়া হবে। নিহতদের মধ্যে শ্রমিক ছাড়াও এক রিকশাচালকের নামও পাওয়া গেছে। তবে তার অনুদান পাওয়ার বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। এছাড়া গাজীপুর জেলা প্রশাসন নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে এবং আহতদের ৫ হাজার টাকা করে দিচ্ছে। কারখানার মালিক সিলেটের সাবেক বিএনপি সংসদ সদস্য সৈয়দ মোঃ মকবুল হোসেন হতাহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে সরকার ॥ মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় আহতদের যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয় সরকার বহন করবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক। তিনি জানান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতাল ছাড়া আরও যে সব হাসপাতালে আহতরা চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের চিকিৎসার খরচও সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হবে। শনিবার বিকেলে টঙ্গীর ওই দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে ও তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে ঢামেক হাসাপাতালে যান তিনি। আহতদের খোঁজখবর নেয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার ব্যয় বহনের এ ঘোষণা দেন। মামলা করবে পুলিশ ॥ টঙ্গীর বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত টাম্পাকো ফয়েলস প্যাকেজিং লিমিটেড নামের ওই কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে ২৪ শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় কারখানার মালিকের গাফিলতি ছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক শনিবার দুপুরে কারখানাটি পরিদর্শন শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন। এ ঘটনায় কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। দুপুর সোয়া দুটার দিকে তিনি ঘটনাস্থলে এসে ধসেপড়া ভবনটির ভয়াবহতা পরিদর্শন করেন। এরপর উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এখানে মালিকপক্ষের গাফিলতি ছিল। এটি শিল্পনগরী এলাকা হওয়ায় কনসার্ন অথরিটি থাকার পরও কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটল তা তদন্ত করে দেখব আমরা। আমরা এই ঘটনায় মামলা কর।’ রাষ্ট্রপতির শোক ॥ গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরীতে কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি নিহত শ্রমিকদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, মহান আল্লাহতায়ালা যেন নিহত পরিবারের সদস্যদের শোক সইবার শক্তি দেন সেই কামনা করি। রাষ্ট্রপতি ওই দুর্ঘটনায় আহতদের আশু আরোগ্যও কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর শোক ॥ গাজীপুরের টঙ্গীতে কারখানার বয়লার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারপ্রধান বিস্ফোরণে নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। এই ঘটনায় আহতদের সুচিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশও দেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর শোক ॥ আমেরিকা সফররত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং ঢাকা ও গাজীপুরে সকল সরকারী হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার ও নার্সদের ঈদের ছুটি বাতিল করেন। দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই তিনি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন এবং তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে সর্বক্ষণিক ঘটনার খোঁজখবর নিচ্ছেন। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে ঢাকা বিভাগের সব এ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি।
×