ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে সড়ক খোঁড়াখুঁড়িতে সমন্বয় নেই

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

চট্টগ্রামে সড়ক খোঁড়াখুঁড়িতে সমন্বয় নেই

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ঈদযাত্রায়ও চট্টগ্রাম শহর থেকে বিভিন্ন রুটের বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছাতে জনভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। একদিকে রাস্তা খুঁড়ে বিশাল পাইপলাইন বসাচ্ছে ওয়াসা। অন্যদিকে নগরীর যানজট নিরসনের জন্য ফ্লাইওভার নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। উন্নয়নের এ গতিধারা চলছে গত পাঁচ বছর ধরে। তবু শেষ হচ্ছে না নির্মাণকাজ। চরম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে ঈদযাত্রায় গন্তব্যের উদ্দেশে ছোটাছুটি করছে নগরবাসী। নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছাতে পারছে না বাস কিংবা রেল স্টেশনে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি লালখান বাজার থেকে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল পর্যন্ত। শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে চট্টগ্রাম। কিন্তু এ উন্নয়ন কতদিনের জন্য তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে নগরবাসীর। এর পেছনে কারণ হলো, ওয়াসা বিভিন্ন প্রকল্পের নামে গত পনেরো বছরে কয়েক দফায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করেছে। কিন্তু জনগণের পানির চাহিদা মেটাতে পারেনি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রকল্পের দোহাই দিয়ে ‘আগামীতে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পানির চাহিদা মিটে যাবে’ নগরবাসীকে আশা-ভরসার মধ্যে ফেলে রেখেছে। ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন সড়ক উন্নয়নের কাজ করেছে চউক। এর মধ্যে রয়েছে রাস্তা প্রশস্তকরণসহ দুই লেনে রাস্তার রূপান্তর। কিন্তু এ উন্নয়নকাজের সুবিধা ভোগ করতে না করতেই গত তিন বছর ধরে ওয়াসা নগরীর প্রতিটি সড়কেই তিন ফুট ব্যাসার্ধের পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু করে। উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে গিয়ে চউকের উন্নয়ন কর্মকা-কে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে ওয়াসা। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে গণপরিবহনের ওপর। এতে শুধু জনভোগান্তিই নয়, নগরবাসীর যেমন সময়ক্ষেপণ হচ্ছে, তেমনি আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার। অভিযোগ রয়েছে, ওয়াসা এবং চউকের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় এ ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। এদিকে, নগরীর বহদ্দারহাট থেকে বহদ্দারহাট বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত নতুন করে ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ চলছে। রাস্তার দুই-তৃতীয়াংশ দখলে চলে গেছে ফ্লাইওভার নির্মাতাদের কবলে। অপরদিকে, একই স্থানে ওয়াসাও শুরু করেছে তিন ফুট ব্যাসার্ধের পাইপলাইন স্থাপনের কাজ। ফলে ৬০ ফুট সড়ক সঙ্কুচিত হয়ে ১৫ ফুটে নেমে এসেছে। এদিকে, বহদ্দারহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে ১৬টি রুটে বাস চলাচল করে। ঈদযাত্রার যাত্রীরা নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে ওই সড়কে যানবাহনের অধিক চাপ। এমন অবস্থায় উন্নয়নকাজ পরিচালিত হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে যাত্রীরা যেমন বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছাতে পারছে না, তেমনি রেল স্টেশনেও ওই এলাকার মানুষ নির্দিষ্ট সময়ে যেতে পারছে না। কারণ, ট্রাফিক জ্যামে গাড়ির চাকা ঘুরছে না। এ ব্যাপারে ওয়াসার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জানান, নতুন লাইন স্থাপন ও পুরাতন লাইন সংস্কারের কারণে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করতে হচ্ছে। উন্নয়নকাজ অব্যাহত রাখতে হলে কোন গতি নেই। তবে বেশিরভাগ কাজই চলছে রাতের বেলায়। এর পরও প্রতিদিনের কিছু কাজ শেষ মুহূর্তে থাকায় দিনের আলোয় করতে হয়। ফলে কিছুটা জনভোগান্তি হলেও উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে।
×